দুটি চমক রেখে গত বুধবার (১ মে) আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। ঘোষিত স্কোয়াডে নেই স্টিভেন স্মিথ এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের উদীয়মান বিধ্বংসী ব্যাটার জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে স্মিথের না থাকাটা মেনে নিলেও ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের বাদ পড়াটা মানতে পারছেন না ক্রিকেট ভক্তদের অনেকে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
চলবে না কেন? আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপ এখনও মাথায় না উঠলেও ইতোমধ্যে ঘরোয়া এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে দানবীয় আবির্ভাব হয়েছে ফ্রেজার-মাকগার্কের।
গত অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টুর্নামেন্ট মার্শ কাপে ২৯ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। একদিনের ম্যাচের স্বীকৃত ক্রিকেটে এটিই দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড। এরপর বিগ ব্যাশে ১৫৮.৬৪ স্ট্রাইক রেটে তিনি করেন ২৫৭ রান। চলমান আইপিএলেও তাণ্ডব চালাচ্ছেন তিনি। দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে মাঠে নেমে ২ ম্যাচে মাত্র ১৫ বলে ফিফটি পার করেছেন ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক, যার একটিতে করেন ২৭ বলে ৮৪ রান। আসরে এখনও পর্যন্ত ৬ ইনিংসে তিন ফিফটিতে ২৫৯ রানের সংগ্রাহক এই তরুণ। আইপিএলে তার স্ট্রাইক রেটের গড় ২৩৩.৩৩।
আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ দলে শামার জোসেফ
এত তাড়াতাড়ি ক্রিকেটে এতসব পরিসংখ্যান তৈরির পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তার ব্যাটিং ঝড় দেখতে মুখিয়ে ছিলেন ভক্তরা। অথচ দলেই তাকে না রাখায় মন ভেঙেছে অনেকের।
তবে এসবের মাঝেও নির্ভার রয়েছেন ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। তার মতে, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলে হুট করেই যে জায়গা আদায় করা কঠিন, সেটা ভালোভাবেই বোঝেন তিনি।
এ বিষয়ে ‘উইলো টক’ পডকাস্ট-এ তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না যে, আমি এমন অবস্থান তৈরি করেছি যার জন্য আমাকে (অন্য কারো জায়গায়) দলে নেওয়া হবে।
‘দেখুন বিশ্বকাপ ক্রিকেট আইপিএল বা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চেয়ে একদম আলাদা।’
অস্ট্রেলিয়ার তারকায় ঠাসা ব্যাটিং লাইন আপের মধ্যে ফাঁকা জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি নিজেও। তার কথায়, ‘এটাও বুঝতে হবে যে দলে জায়গা বের করা সজহ নয়। ওপেনার হিসেবে সেখানে আছেন ডেভিড ওয়ার্নার। তিন সংস্করণেই তিনি আমাদের সর্বকালের সেরা ওপেনার। আছেন ট্র্যাভিস হেডও; আইপিএলে তিনি জ্বলে উঠেছেন। শুধু আইপিএল কেন, গত দেড় বছর ধরে তিনি কী করে চলেছেন, তা সবাই দেখেছে।
‘এরপর ধরুন মিচেল মার্শ। তিনি আমাদের অধিনায়ক। আবার ব্যাটিংয়েও সমানভাবে আলো ছড়িয়ে চলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘পাঁচ ছয় নম্বরেও নিজেকে রাখতে পারছি না আমি। কারণ, টিম ডেভিড, ক্যামেরন গ্রিনদের মতো খেলোয়াড়রা এই পজিশনে মোটামুটি থিতু হয়ে গেছেন।
‘আমি বিষয়টি এভাবে দেখছি। স্কোয়াড ঠিকই আছে। দলে জায়গা পেতে আমার হাতে সময়ও তো রয়েছে অনেক।’
আরও পড়ুন: আইপিএল থেকে মুস্তাফিজের শেখার কিছু নেই: বিসিবি’র জালাল ইউনুস
তবে যে কোনোভাবে বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে থাকতে পারলে যে মন্দ হতো না, সেটিও অকপটে স্বীকার করলেন এই তরুণ।
তার ভাষ্য, ‘আমাকে যদি কোনোভাবে ট্রাভেলিং (রিজার্ভ) প্লেয়ার হিসেবেও দলের সঙ্গে রাখা হয়, তাহলে ব্যাপারটি আমার জন্য এক দারুণ সুযোগ হবে। অনেক কিছু শেখা হবে আমার।’
তবে বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে একেবারেই হতাশ নন তিনি। বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে একেবারেই ভাবাচ্ছে না। কারণ আমি সেটি এখনও অর্জন করেছি- তা আমার একেবারেই মনে হচ্ছে না।’