বেশ কিছুদিন ধরে বায়ুদূষণে শীর্ষ পাঁচ শহরের একটি হয়ে থাকার পর আজ শনিবার সকালে এই তালিকার শীর্ষস্থানে আরোহণ করেছে পাকিস্তানের লাহোর। অন্যদিকে, টানা কয়েকদিনের মতো আজও ঢাকার বাতাসের মান ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে রয়েছে।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় ১৬৩ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহর ছিল লাহোর। এই সময় ১৫৮, ১৫৭ ও ১৫৬ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দূষিত শহর ছিল যথাক্রমে আফগানিস্তানের কাবুল, কঙ্গোর কিনশাসা ও উগান্ডার কাম্পালা।
শীর্ষ এই চার শহরের বাতাসই ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে। আর পাঁচে থাকা চিলির সান্তিয়াগোর স্কোর ছিল ১৪৭, অর্থাৎ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
অন্যদিকে, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকর শ্রেণির নিচে অবস্থান করছে ঢাকার বায়ুমান। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
একই সময়ে ঢাকার একিউআই সূচক ছিল ৮৬, দূষণের শ্রেণি অনুসারে যা ‘মাঝারি’ হিসেবে বিবেচিত। আজ বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানীর অবস্থান ছিল ২৩তম স্থানে।
এ ছাড়া গতকালের চেয়ে ভারতের দিল্লির বায়ুমানে আজ বেশ অবনতি হয়েছে। গতকাল ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে থাকা দিল্লির একিউআই স্কোর আজ সকালে ছিল ১১৩, অর্থাৎ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’। দূষণে শীর্ষ শহরের তালিকায় এই সময় এর অবস্থান ছিল চতুর্দশ স্থানে।
সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে আজও শীর্ষ পাঁচে লাহোর, ঢাকার উন্নতি
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।