ঠাকুরগাঁও, ১৩ নভেম্বর ( ইউএনবি)- ঠাকুরগাঁওয়ে আগাম শীতকালীন সবজি মূলার ন্যায্য দাম না পেয়ে কৃষকরা ক্ষেতে মূলা রেখেই জমিতে হাল দিচ্ছেন। অন্য ফসলের উৎপাদনের জন্য জমি তৈরি করছেন।
অথচ জেলার খুচরা বাজারে ও আশেপাশের জেলার ক্রেতারা ২০ থেকে ২৫ টাকা ধরে মুলা ক্রয় করতে হচ্ছে। কোথায়ও কোথায়ও ৩০ টাকা ধরে মুলা বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলার মুলাচাষীদের ফসল না তুলে জমিতে হাল দিতে দেখা যায়।
তারা জানায়, মৌসুমের শুরু হলেও তারা মুলার ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। উৎপাদন খরচের তিন ভাগের একভাগও মিলছে না। মুলা উত্তোলন ও বাজারজাত করতে যে খরচ হবে সে টাকাও উঠবে না। তাই বাধ্য হয়ে ক্ষেতে মুলা রেখেই অন্য ফসল উৎপাদনের জন্য জমি তৈরি করছেন।
জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিশেষ করে সদর উপজেলার বিমানবন্দর, গিলাবাড়ি, মরিচপাড়া এলাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মরিচপাড়া এলাকার শাহীন আলী বলেন, আমি এক একর জমিতে মূলার চাষ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে। প্রথমে দাম কিছুটা ভাল থাকলেও বর্তমানে বাজারে ১ টাকা বা ২ টাকা কেজি দরে মূলা বিক্রি হচ্ছে। ১ বস্তা বাছাই করা মূলার দাম এখন ১০০ টাকা। তাই আর মূলা তুলছি না, মূলাসহ জমিতে হাল দিচ্ছি।
একই কথা বলেন গিলাবাড়ি এলাকার মূলা চাষী নাসিমুল হক। তিনি বলেন, ৪ একর জমিতে মূলা চাষ করেছি, কিন্তু বিক্রি করতে না পেরে মূলাসহ জমিতে হাল দিচ্ছি। এখন ওই জমিতে আলু চাষ করবো।
স্থানীয় ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমেদ বলেন, কয়েক দিন আগেও মূলার দাম ভাল ছিল। অন্য জেলায় মূলার চাহিদা না থাকায় হঠাৎ মূলার দাম কমে গেছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির ফলন ভাল হয়েছে। একই সাথে সকল সবজি বাজারে আসায় মূলার দাম কম পচ্ছে চাষীরা।
তিনি জানান, এ বছর জেলায় সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর। ইতোমধ্যে ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। এর মধ্যে এককভাবে মূলার চাষ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে।