সিলেটে প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ চাষ করে বাজিমাত করেছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মন্দিরখলার কৃষক সৈয়দুর রহমান। দেখতে লাউয়ের মতো, আকারে বেশ বড় ও খেতে সুস্বাদু শীতকালীন এই বেগুন চাষে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ব্যতিক্রমী এই বেগুন চাষ এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কৃষক সৈয়দুর রহমান।
জানা গেছে, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের মাধ্যমে কৃষক সৈয়দুর রহমানকে পরীক্ষামূলকভাবে বিনামূল্যে বেগুনের বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ইতোমধ্যে সৈয়দুর রহমানের রোপনকৃত বেগুনগাছে বেশ ভালো ফলন এসেছে। অনান্য বেগুনের চেয়ে এ জাতের দামও বেশি। বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক। একটি বেগুন প্রায় দেড় কেজি পর্যন্ত হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদে ব্যস্ত চাষিরা
জেলার দক্ষিণ সুরমার কামালবাজার এবং লালাবাজার এলাকায় প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দুপুরে কৃষক সৈয়দুর রহমান বারি বেগুন-১২ এর মাঠ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (ফার্মগেইট, ঢাকা) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুলসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
কৃষক সৈয়দুর রহমান ২০ শতক জমিতে বারি বেগুন-১২ এ বেগুন চাষ করেছেন। প্রত্যেকটি গাছেই ফলন এসেছে।
তিনি জানান, এ বেগুনটা দেখতে সবুজ এবং এতটাই বড়, মনে হবে অনেকটা লাউয়ের মতো। যেখানে অন্য বেগুনের দাম কেজিতে ২৫ টাকা সেখানে বারি বেগুন-১২ এর পাইকারি দাম ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন পর্যন্ত গাছে কোন রোগ-বালাই বা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।
এ পর্যন্ত ২৭ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।
কৃষক সৈয়দুর রহমান বলেন, ‘আমার বেগুন খেত এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। বড় আকারের বেগুন দেখতে কৃষকরাও ভিড় করছেন। আগামীতে এখান থেকে বীজ সংগ্রহ করে এ জাত চাষের ইচ্ছা রয়েছে। এমন আরও একাধিক কৃষক বারি-১২ জাত চাষে আগ্রহের কথা বলেছেন।’
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এ বছরই জাতটা আবিষ্কার করেছে। স্থানীয়ভাবে কৃষকদের মাঝে এর বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুরমার কামালবাজারে প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ চাষ করা হয়েছে। মূলত এ বেগুন শীতের সময়ে ভালো হয়। তাই এটাকে শীতকালীন বেগুন বলা হয়।
মাহমুদুল ইসলাম নজরুল জানান, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চারা রোপণ করা হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাতটি এ অঞ্চলে ব্যাপক আকারে চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।