গেল আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পেয়েছেন কৃষকরা। বর্তমানেও ধানের বাজার দর ভালো। তাই উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা।
বর্তমানে বীজ, সার ও সেচের সমস্যা না থাকলেও কৃষি উপকরণের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। এদিকে বোরা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে মাঠে চলছে বোরো আবাদ। কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করেছে, কেউ সেচ নালা সংস্কার, কেউ সার প্রায়োগ, কেউ বা বীজ তলায় আবার কেউ ধানের চারা রোপন কাজে ব্যস্ত। এবার চাষিরা উপসি ও হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ করছেন।
সদর উপজেলার বোরো চাষি আকবর আলী বলেন, ধানের বাজার দর ভালো চলছে। এর আগে আমন ধানের দর ভালো ছিল। এ কারণে আমরা বোরো আবাদ করছি। এ পর্যন্ত আমার ৭ বিঘা জমিতে ধান লাগানো হয়েছে। আরও ৩ বিঘা জমিতে লাগাব।
একই উপজেলার নওয়াবজায়গির এলাকার কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, তার আড়াই বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছেন। সরিষা উত্তোলন করে এবার সেই জমিতে বোরো ধান লাগানের জন্য জমির প্রস্তুতি চলছে। দু’এক দিনের মধ্যে ধানের চারা লাগানো শুরু হবে।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার
ইসলামপুর এলাকার চাষি শামিম আলী বলেন, গত বছর ১০ কাঠা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। বাজার দর ভালো থাকায় এবার ২৫ কাঠা জমিতে বোরো ধান রোপণ করছি।
নাচোল উপজেলার নেজামপুর এলাকার বোরো চাষি জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। বোরা উৎপাদনে খরচ বেশি। জমিতে সার ও সেচ লাগে। সেই সঙ্গে কীটনাশকও প্রয়োগ করতে হয়।
তিনি জানান, কীটনাশকের দাম খুব বেশি। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। কীটনাশকের দাম কমানোর পাশাপাশি গুনগত মান ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের তদারকি জোরদার করা দরকার।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১২ হাজার ১০০ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার ৫০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৮ হাজার ২০০ হেক্টর ও ভোলাহাট উপজেলায় ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, ৩ হাজার ৩৫৭ হেক্টর জমিতে বীজতলা আছে যা দিয়ে আবাদের চাহিদা পূরণ হবে। সার ও সেচের কোন সমস্যা নেই।
তিনি জানান, ধানের দর ভালো থাকায় কৃষকরা বোরো আবাদে আগহী হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেলায় বোরা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।