অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতের জামিন নামঞ্জুর করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন।
অন্যদিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) পৃথক দুই আদালতে জামিনের আবেদন ও রিমান্ডের আবেদন শুনানি হয়।
গত ১১ জুলাই দুপুরের পর আবুল বারাকাতকে দুর্নীতির একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে আবুল বারাকাতের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
কিন্তু দিনটি শুক্রবার হওয়ায় ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ছুটি থাকায় রিমান্ড ও জামিনের আবেদন শুনানি হয়নি।
সংশ্লিষ্ট আদালতে শুনানি হবে বলে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জানান। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আজ রিমান্ড শুনানির জন্য বারাকাতকে ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে হাজির করা হয়। জামিনের আবেদন থাকায় আজ তার জামিন আবেদন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন আইনজীবীকে জামিন শুনানি করতে বলেন। বারাকাতের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম জামিন শুনানি করেন। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে রিমান্ডের আবেদন শুনানি গ্রহণের জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন।
পরে দুপুরের পর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেন রিমান্ডের আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করেন।
শুনানিতে বারাকাতের আইনজীবী আদালতকে বলেন, রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আবুল বারাকাত একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঋণ দেওয়ার বিষয়ে ব্যাংকের মাঠ পর্যায়ে এবং ব্যাংকের কর্মকর্তারাই সিদ্ধান্ত নেন কাকে ঋণ দেওয়া হবে, আর কাকে দেওয়া হবে না। ব্যাংক কর্মকর্তাদের নোটের ওপর বা সিদ্ধান্তের ওপর তিনি অনুমোদন দেন শুধু। তিনি বয়স্ক মানুষ। তিনি অসুস্থ। তাকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।
এ পর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে আবুল বারাকাত আদালতকে বলেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। কোনো অর্থ আত্মসাৎ করিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি ও বিধি-বিধান মেনে ঋণ অনুমোদন দিয়েছি মাত্র। আমার অনুমোদন দেওয়ায় কোনো অনিয়ম হয়নি।’
গত ১০ জুলাই রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে রাত পৌনে ১২টার দিকে আবুল বারকাতকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। পরে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান এবং অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের বিরুদ্ধে অ্যাননটেক্স গ্রুপকে ঋণের নামে দেওয়া ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটি উপপরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।