পৃথক চারটি আবেদনের নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম, ব্যারিস্টার মুনতাসির আহমেদ ও রিটকারী আইনজীবী নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব। ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান।
আইনজীবী নিয়াজ মাহবুব বলেন, এর আগে আদালত আলোচনার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর গত ৩০ জুন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আলোচনা করতে চিঠি দেয়। গত ২ জুলাই তাদের আলোচনা হয়। আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে অগ্নিকাণ্ডে নিহত মনিরুজ্জামানের পরিবার ২০ লাখ টাকায় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আপস রফা করে। আদালত এসব বিষয়ে রিটের শুনানি নিয়ে নিহত মনিরুজ্জামানের পরিবার বাদে অবশিষ্ট চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২৭ মে ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে (মূল ভবনের বাইরে স্থাপিত) আগুন লাগে। এ ঘটনায় পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খাদেজা বেগম (৭০), ভের্নন এন্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহাবুব (৫০)।
এ ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি অপমৃত্যুর মামলা করলেও আগুনে নিহত ভের্নন এন্থনি পলের পরিবারের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ মামলা করা হয়। মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি, সিইও, পরিচালক, করোনা ইউনিটে সে সময় কর্মরত চিকিৎসক-নার্স, সেফটি ও সিকিউরিটি কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পর পুলিশ জানিয়েছিল, আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভেতর দুটি কক্ষ ছিল। তার মধ্যে চিকিৎসক ও নার্সদের যে কক্ষ সেখানকার এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত। আগুনে হাসপাতালে মারা যাওয়া পাঁচ রোগীর চারজনই বেডে নিথর হয়ে পড়েছিলেন।
অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজীব ও ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ হাইকোর্টে রিট করেন। পরে এই রিটে ক্ষতিগ্রস্ত চারটি পরিবার পক্ষভুক্ত হয়।