দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে থাকা ৫২ জন শিক্ষক রেজিস্ট্রার ড. তৌহিদুল ইসলামের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এর আগে সেমিস্টার পরীক্ষায় অকৃতকার্য এক ছাত্রীকে রবিবার পরবর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা জোর করে দেয়ার চেষ্টা করে ছাত্রলীগের নেতারা।
এ সময় শিক্ষকরা বাধা দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দায়িত্বরত শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এ ঘটনায় ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ঈশিতা বিশ্বাসকে কোয়ান্টাম মেকানিক্স-১ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের অনুমোদন না দেয়ার পরও জোর করে পরীক্ষা দেয়ায় ছাত্রলীগ। এ সময় শিক্ষকরা বাধা দিলে ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদারসহ দলের নেতা-কর্মীরা পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার হোসেন ও শিক্ষক মহিউদ্দিন তাসনিনের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি রবিবার বিকালের দিকে জরুরি সভা আহ্বান করে। সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহসভাপতি ইমরান মিয়া ও আদ্রিতা পান্না, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাবির ইকবালের বিচারের দাবি জানানো হয়।
পরে সমিতির ১৫ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত আবেদন ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর পাঠানো হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভাইস চ্যান্সেলরের কক্ষে ছাত্রলীগ ও শিক্ষকদের নিয়ে সভা করা হয়। সভার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ বের হয়ে প্রতিটি হল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বের করে অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের আন্দোলন শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী এক শিক্ষার্থী কোনো বিষয়ে ফেল করলে তাকে এক বছর বসে থাকতে হয়। সেই অর্ডিন্যান্সের শিকার হয়ে এক ছাত্রী ফেল করে। এই অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয় নিয়ে ওই ছাত্রীর বন্ধুদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা স্যারদের কাছে ওই ছাত্রীর পরীক্ষা নেয়ার অনুরোধ করেন।
সজীব তালুকদার বলেন, ‘স্যাররা সংগঠনকে নিয়ে বাজে কথা বলায় তাদের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে আমরা চলে আসি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মুহাম্মদ শাহীন উদ্দিন জানান, ‘অকৃতকার্য এক ছাত্রীর পরীক্ষা দেয়াকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক করেন। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়। উপাচার্য কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, ডিন, প্রভোস্ট, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, হাউজ টিউটরসহ বিভিন্ন পদ থেকে ৫২ জন শিক্ষক সোমবার দুপুরের দিকে পদত্যাগ করেন।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারতৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার দুপুরে শিক্ষকরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’