তিনি বলেন, ‘অনেক বছর আমাদের নষ্ট হয়েছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এই ২১ বছরে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের কোনো উন্নতিই হয়নি। উন্নয়ন হয়েছে কিছু মুষ্টিমেয় মানুষের। বাকি সাধারণ জনগণকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমার দায়িত্ব সেসকল মানুষদের বঞ্চনার হাত থেকে মুক্ত করা।’
শনিবার গণভবনে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) ২২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জের জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বাংলাদেশের জনগণের জন্য রাজনীতি করেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য নিজের জীবনের প্রতিটি সেকেন্ড কাজে লাগান।
‘আমি আমার নিজের ভাগ্য গড়তে এখানে আসিনি, আমি এখানে জনগণের ভাগ্য গড়ে তুলতে এসেছি। যার ফলে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানী ঢাকার ওপর অত্যধিক চাপ কমানোর লক্ষ্যে সরকার দেশের গ্রামগুলোকে আরো উন্নত করে গড়ে তুলতে চায়।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সরকার গ্রামাঞ্চলের জনগণের কাছে শহরের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে চায় যাতে তারা সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারে।
‘আমরা শহরের মতো করে গ্রামগুলোকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এসব এলাকায় সকল ধরনের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করব। আমরা তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করছি, এটি আমাদের লক্ষ্য’, যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার গ্রামীণ এলাকাগুলোতে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে যাতে এখানে বসবাসরত মানুষ তাদের পছন্দমতো বাড়ি নির্মাণ করতে পারে। তাদের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে এবং কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
‘আমরাও এতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি’, যোগ করেন তিনি।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে।
দেশের বৃত্তিমূলক শিক্ষা উন্নয়নের জন্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সর্বদা বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়।
‘আমরা যে শিক্ষা নীতি গ্রহণ করেছি তাতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে’, যোগ করেন তিনি।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের দেশকে গড়ে তুলতে হবে যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সুন্দর জীবন পেতে পারে। এ উদ্দেশে আপনাদের সকলকে একান্তভাবে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন এবং মাঠ পর্যায়ে এগুলোর গুণগত মান বজায় রাখা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কর্তব্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে ১০০টি কারিগরি স্কুল ও কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশে চারটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং ২৩টি বিশ্বমানের নতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কাজ করছে।
আইডিইবি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি একেএমএ হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আইডিইবি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নির্মিত একটি রোবট প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানায়।
এর আগে, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে তিন দিনের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।