জননিরাপত্তা রক্ষায় যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে সাহস ও আন্তরিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম বাহিনী হিসেবে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। জননিরাপত্তা রক্ষায় যে কোনো অশুভ তৎপরতা প্রতিহত করতে হবে। আপনাদের সততা, সাহস ও আন্তরিকতার সঙ্গে এটা করতে হবে।’
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ-২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা ও বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শান্তি বজায় রাখা তার সরকারের পবিত্র দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের স্বার্থেই জাতীয় নির্বাচন আ. লীগের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত ছিল: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুষ্ঠু অর্থনৈতিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখা পূর্বশর্ত।’দেশে এমন পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের অর্জিত উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলকে সততার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি দেশের সরকারি-বেসরকারি কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সর্ববৃহৎ বাহিনী আনসার-ভিডিপির ৬১ লাখ সদস্যের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
বৃহৎ এই বাহিনীটিতে দু’টি নারী ব্যাটালিয়ন এবং একটি বিশেষায়িত ব্যাটালিয়নসহ মোট ৪২টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: জিআই পণ্যের বিষয়ে সক্রিয় থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসারকে যদি জাতীয় কোনো কাজে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়, তখন তারা তা যথাযথভাবে পালন করে।
তিনি বলেন, 'এমনকি আমাদের আনসার সদস্যরা বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছে।’
বিগত ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০২৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস থেকে বাংলাদেশ রেলওয়েসহ দেশের সম্পদ রক্ষায় আনসার সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
আনসার ও ভিডিপির আধুনিকায়নে তার সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই বাহিনী এখন দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আনসার ও ভিডিপির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: এবার দারিদ্র্যকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
এ সময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক থেকে দেশকে রক্ষায় তার সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান সব সময় অব্যাহত থাকবে।’
ভবিষ্যতেও এসব সামাজিক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে আনসার ও ভিডিপি তাদের দায়িত্ব অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সরকারের ভিশন-২০৪১ -এর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসার ও ভিডিপিও স্মার্ট ফোর্স হিসেবে গড়ে উঠবে এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাবে।
তিনি বলেন, সরকার স্মার্ট বাংলাদেশে প্রতিটি গ্রামকে একটি স্মার্ট ও নিরাপদ এলাকা হিসেবে গড়ে তুলবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জিপ থেকে আনসার ও ভিডিপির কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। সাহসিকতা ও প্রশংসনীয় সেবার জন্য ১৮০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্যের হাতে আট ধরনের বিশেষ পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পদকগুলো হলো- বাংলাদেশ আনসার পদক, রাষ্ট্রপতি আনসার পদক, বাংলাদেশ ভিডিপি পদক, রাষ্ট্রপতি ভিডিপি পদক, বাংলাদেশ আনসার সার্ভিস পদক, রাষ্ট্রপতি আনসার সেবা পদক, বাংলাদেশ ভিডিপি সার্ভিসেস পদক ও রাষ্ট্রপতি ভিডিপি সার্ভিসেস পদক।
পরে প্রধানমন্ত্রী আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
আরও পড়ুন: টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে বিজ্ঞানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো উচিত: প্রধানমন্ত্রী