আলোচিত আবু সালেক ঠাকুরগাঁও সদরের বালিয়া ইউনিয়নের সিঙ্গিয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। গ্রামে তাদের বাড়িতে বাবা, মা ও বোন থাকলেও বাড়িটি সারাক্ষণই ভেতর থেকে তালাবদ্ধ থাকে। এখন তেমন কেউ যায় না ওই বাড়িতে।
স্থানীয়রা জানান, সালেক জালিয়াতির মাধ্যমে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার পর দুই বছর আগে রানীশংকৈলে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এর আগে প্রথম স্ত্রীর সাথে বছর খানেক সংসার করার পর বিচ্ছেদ হয় তাদের। আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে সালেকের বাবা-মায়ের বনিবনা না হওয়ায় তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন না।
সালেকের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানান, এসএসসি পরীক্ষার পর বাবার বকুনি খেয়ে ঢাকায় পাড়ি জমায় সালেক। সংসারের একমাত্র ছেলে হওয়ায় তিনি পরিবারের শাসন মানতেন না। বেপরোয়া সালেক ঢাকায় থাকলেও পরিবারের সাথে তেমন যোগাযোগ করতেন না। তিনি ঢাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরির সাথে যুক্ত ছিলেন বলে তার বাবা জানান।
প্রতিবেশী আনসারুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুর রশিদ জানায়, হঠাৎ বড়লোক হয়ে যান সালেক। কাঁচা বাড়ি পাকা করেন। সেই সাথে বোনের স্বামীর বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় টেলিভিশনের শোরুম দেন। সেখানে বেশ কিছু জমিও কিনেছেন তিনি।
আব্দুল কুদ্দুস ছেলের অপকর্মের শাস্তি চেয়েছেন। তবে তার দাবি সালেক আত্মসাৎ করা টাকা কখনও তার হাতে দেননি। তিনি ওই টাকায় বোদা উপজেলায় সম্পদ করেছেন।
সালেকের টাকায় গ্রামের পাকা বাড়িটি করা হয়নি দাবি করে আব্দুল কুদ্দুস আরও বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২০ বিঘা আবাদি জমি দিয়ে তিনি সংসার চালিয়েছেন ও ঘর করেছেন।
স্থানীয় বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর-এ আলম ছিদ্দিকি মুক্তি বলেন, ‘আবু সালেক প্রতারক। তার বিরুদ্ধে এলাকাতেও ছোট-বড় অপরাধের নালিশ আছে।’ তিনি সালেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেকের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে। কিন্তু তার বদলে তিন বছর ধরে কারাগারে ছিলেন পাটকল শ্রমিক জাহালম।
আবু সালেকের ১০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ভুয়া ঠিকানাগুলোর একটিতেও জাহালমের গ্রামের বাড়ির কথা নেই। রয়েছে পাশের আরেকটি গ্রামের ভুয়া ঠিকানা। কিন্তু সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় জাহালমের জীবনে।