জরাজীর্ণ ভবনে আস্তর ও কার্নিশ ধসে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে খুব দ্রুত সমাধানের আশ্বাসও মিলছে না। বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আশঙ্কা নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির রফিক ভবনের ছাদ ও দেয়ালের আস্তর (প্লাস্টার) খসে পড়ছে বেশ কয়েকদিন ধরে। ভবনের কোথাও কোথাও ছাদের কার্নিশ ভেঙে ঝুলে পড়েছে। জরাজীর্ণ এ ভবনের বেহাল দশা দীর্ঘদিনের। এমতাবস্থায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রফিক ভবনের ছাদ খসে পড়ে মেঝে ও সিঁড়িতে পড়ে। কিছু শিক্ষার্থীর গায়ে অল্পের জন্য পড়েনি। তারা দৌড়ে দূরে সরে যায়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। বৃষ্টি হলে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে বলে তারা জানান। রফিক ভবনের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা।
আরও পড়ুন: জবিতে জাতীয় বিতর্ক উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাদের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল, খসে পড়েছে কার্নিশ। কয়েক জায়গায় দেয়ালের আস্তরের স্তরও খসে পড়েছে।
ছাদের আবরণ খসে পড়ার প্রত্যক্ষদর্শী আল আমিন হোসনে বলেন, ‘আমাদের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা খুবই ভয়ের মধ্যে আছি। ক্লাস করতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছিলাম। দুইতলায় মাঝের সিঁড়িতে পৌঁছাতেই উপর থেকে ছাদের আস্তর খসে পড়েছে। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাসে আসছি।’
আরেক শিক্ষার্থী নাইলা নিলা বলেন, ‘আজকে সকাল থেকে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে ক্লাসে আসলাম। এসে রফিক ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে গিয়েই হঠাৎ দেয়ালের কিছু অংশ আমাদের সামনে ধসে পড়ে।’ এর আগেও এমন হয়েছে জানিয়ে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সেলিম মোজাহার বলেন, ‘আমাদের বিভাগের সংস্কারের জন্য আরও সাত-আট মাস আগেই প্রকৌশল দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমাকে জানানো হয়েছিল।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘রফিক ভবন ও অবকাশ ভবন নিয়ে ফাইল প্রস্তুত করা আছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।’
রফিক ভবন ও অবকাশ ভবনের সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘ফাইল অনুমোদন হয়েছে দুদিন হলো। একজন ঠিকাদার খোঁজা হচ্ছে। তবে কিছু সময় লাগবে।’