ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে চোর সন্দেহে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাসহ চার শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন জানান, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে শিক্ষার্থীদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তারা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোত্তাকিন সামিন; খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ সুমন মিয়া এবং ভূগোল বিভাগের সাজ্জাদ আবু সাঈদ।
আরও পড়ুন: ঢাবির হলে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
এর আগে এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় হলের ভেতরে ঢুকে পড়েন তোফাজ্জল নামে ওই ব্যক্তি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটকে রেখে, আগের দিন হল থেকে হারিয়ে যাওয়া ছয়টি মোবাইল ফোন সেট ও মানিব্যাগ চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই যুবক বলেন, যদি তাকে কিছু খেতে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আসল চোরদের কথা বলবেন।
ছাত্ররা তাকে ভাত খাওয়ান। কিন্তু ওই যুবক আসল চোরদের বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে শুরু করে দুই ঘণ্টা ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিষয়টি প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত তোফাজ্জলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেউ কেউ জানান, তোফাজ্জল একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিরীহ শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি ঢাবির আহ্বান
নিহত তোফাজ্জল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা। অনেক আগেই তার বাবা-মা দুজনই মারা গেছেন।
এ ঘটনায় ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষক ড. আলমগীর কবিরকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক জহির রায়হান, মোহাম্মদ মাহাবুব আলম, ড. আসিব আহমেদ, ড. তৌহিদুল ইসলাম ও এ কে এম নূরে আলম সিদ্দিকী।