নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ২০১৮ সালে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এফআইআর ও তদন্ত কার্যক্রম বাতিল চেয়ে তার করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৪ নভেম্বর) বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও মো. রিয়াজ উদ্দিন খান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন ও আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান।
আরও পড়ুন: সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে সিআইডি
আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের আগস্টে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়। একই বছরের অক্টোবর মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। নতুন আইনে বলা হয়েছে, আগের আইনের ৫৭ ধারার যে মামলাগুলোর তদন্ত শেষ হয়নি, বিচারের জন্য যায়নি বা বিচারাধীন না, সে মামলাগুলো আর চলবে না। যেহেতু শহিদুলের বিরুদ্ধে মামলাটি তখন পর্যন্ত তদন্তনাধীন ছিল তাই এ মামলা আর চলতে পারে না। আদালত শুনানি শেষে রুল ও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট শহিদুল আলমকে ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে নেয়। এরপর ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলায় ৬ আগস্ট রিমান্ডে নেয় পুলিশ। একইদিন সিএমএম আদালতে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। মামলায় ১০৭ দিন কারাভোগের পর শহিদুল আলম একই বছরের ২০ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান।
২০১৮ সালের অক্টোবরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়। এ অবস্থায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে থাকা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ওই মামলার তদন্ত কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ রিট করেন শহিদুল আলম। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট একই বছরের ১৫ মার্চ রুল দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন। ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট শহিদুল আলমের করা রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন তিনি। এই লিভ টু আপিল খারিজ করে ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ অবস্থায় এফআইআর ও তদন্ত কার্যক্রম বাতিল চেয়ে গত আগস্টে ফের হাইকোর্টে আবেদন করেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, যার ওপর শুনানি নিয়ে আজ রুলসহ আদেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: যেকোনো হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হওয়া উচিত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান