সরেজমিনে দেখা যায়, আসন্ন তৃতীয় সমাবর্তনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে সমাবর্তনের সাথে জড়িত দপ্তরগুলো। রাস্তা মেরামত করা, ফাঁকা জায়গায় ফুলের গাছ লাগানো, বিল্ডিংয়ে নতুন রং করাসহ গোল চত্বরের সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ শেষ পর্যায়। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজও চলছে। সমাবর্তনের জন্য গ্র্যাজুয়েটদের সনদ তৈরির কাজও শেষ করেছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
জানা যায়, সমাবর্তন আয়োজনের জন্য ১৭টি আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রতিটি কমিটি সমাবর্তনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দিনভর কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্মরণিকা, কস্টিউম সামগ্রী (গাউন, ক্যাপ) উপহার, ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে পৌঁছেছে।
শাবি কর্তৃপক্ষ জানান, এবারের সমাবর্তনে মোট ৬ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে। যার মধ্যে স্নাতক ৪ হাজার ৬১৭ জন, স্নাতকোত্তর ১ হাজার ১২৭ জন, পিএইচডি ২ জন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ৬ জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য ১০ জন শিক্ষার্থী এবং স্নাতকোত্তরে ৫ সেরা শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক দেওয়া হবে।
এছাড়া, দ্বিতীয় সমাবর্তনে বাকি থাকা ৫ স্বর্ণপদকও এই সমাবর্তনে প্রদান করা হবে। এ নিয়ে মোট ২০টি রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হবে। অন্যদিকে ফ্যাকাল্টি প্রথম হওয়া মোট ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে উপাচার্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটদের কস্টিউম, গিফট ও আমন্ত্রণপত্র ৬ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এবং ৭ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিভাগ ও কলেজভিত্তিক আলাদাভাবে বিতরণ করা হবে বলে জানান সমাবর্তন প্রচার উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফয়সল আহমেদ।
তিনি জানান, সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের কস্টিউম, গিফট এবং আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহের সময় অবশ্যই সমাবর্তন নিবন্ধন নিশ্চিতকরণ কপি সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। সমাবর্তন নিবন্ধন নিশ্চিতকরণ কপি সমাবর্তনের ওয়েবসাইট (sustconvocation.edu) থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
মূল সনদপত্র সমাবর্তনের দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং পরের দিন ৯ জানুয়ারি সারাদিন নির্ধারিত কাউন্টার থেকে বিতরণ করা হবে। বিস্তারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (sustconvocation.edu) থেকে জানা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর পর দীর্ঘ ২৮ বছরে শাবিতে মাত্র দু'টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশবিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন এবং তার নয় বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবর্তনকে ঘিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা উপকমিটির আহ্বায়ক এবং শাবি প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ ইউএনবিকে বলেন, ‘সমাবর্তনের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। সমাবর্তন সফল করতে সমাবর্তন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ইউনিট নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।’
‘রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। উনার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বিধানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পূর্ণ তৎপর রয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, ‘সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে আমাদের যা যা পরিকল্পনা ছিল তা সুন্দরভাবে হচ্ছে, কোনোরকম ঘাটতি থাকবেনা। আশা রাখছি শিক্ষার্থীদের সুন্দর একটি সমাবর্তন উপহার দিতে পারবো।’