ডিজিটাল ধারাকে রূপান্তরের লক্ষ্যে দেশের প্রথম ক্রস-প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ মার্কেটপ্লেস ‘অ্যাপসিটি’ চালু করেছে শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার একটি হোটেলে এই অ্যাপ মার্কেটপ্লেসটির উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, স্মার্ট সল্যুশন ও সংযুক্তির সুবিধা নিয়ে এই প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ ডেভেলপার এবং পাবলিশার উভয়কে বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) ও বিটুসি (বিজনেস টু কনজুমার) গ্রাহকের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
যা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথকে সুগম করবে।
আরও পড়ুন: গ্রাহক চাহিদা-সুবিধা বিবেচনায় গ্রামীণফোন নিয়ে এলো সহজ প্ল্যান
গ্রামীণফোনের টেলকো-টেক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, অ্যাপটি একটি ইউনিফাইড প্ল্যাটফর্ম, যা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন এবং সফটওয়্যার এস এ এস সার্ভিস সল্যুশন নিয়ে আসবে।
অ্যাপ স্টোর এবং এপিআই হাব উভয় প্ল্যাটফর্মে কার্যকর এই মার্কেটপ্লেসটি কনটেন্ট সরবরাহকারী এবং অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার উভয়কে ব্যক্তি ও কর্পোরেট গ্রাহকদের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
অ্যাপটির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো- এতে বিল্ট-ইন অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস এবং টেলকো এপিআই সুবিধা রয়েছে, যা বিটুবি ও বিটুসি উভয় প্ল্যাটফর্মে কার্যকর।
এই বৈশিষ্ট্য এটিকে বাংলাদেশের প্রথম ক্রস-প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ মার্কেটপ্লেসে পরিণত করেছে। এই উন্নয়ন নন-কোডারদের অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে নিয়োজিত হওয়ার ক্ষেত্রে নতুন পথ উন্মোচন করবে, যা সহজ অ্যাপ তৈরির জন্য প্ল্যাটফর্মের নির্দেশিত ইউ আইয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা, যা বিদ্যমান কিছু বিখ্যাত প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে তুলনীয়।
দেশের প্রথম সমন্বিত বিটুবি অ্যাপ মার্কেটপ্লেসের দাবিদারও এই প্ল্যাটফর্ম।
ব্যবহারকারীদের রেটিংয়ের পাশাপাশি কিউরেটেড এক্সপার্ট রেটিংও চালু করেছে অ্যাপটি, যা প্রচলিত অ্যাপ মার্কেটপ্লেস থেকে আলাদা। টেলকো বিলিং এবং প্রচলিত অর্থ পরিশোধ প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) সুবিধাও যুক্ত করেছে প্ল্যাটফর্মটি। অন্যান্য অ্যাপ মার্কেটপ্লেসের তুলনায় প্ল্যাটফর্মটিতে রয়েছে বিস্তৃত পেমেন্ট চ্যানেল সুবিধা।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে গ্রামীণফোনের প্রবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশ
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্মার্ট জাতির জন্য একটি স্মার্ট ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে অ্যাপটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। উদ্ভাবনের পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ উদ্যোক্তাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তরুণদের সম্পৃক্ত করতে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অ্যাপটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য। একটি স্মার্ট জাতি গড়ার লক্ষ্যে অ্যাপটির জন্য আয়োজিত হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের জন্য আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
গ্রামীণফোনের চেয়ারম্যান ও টেলিনর এশিয়ার প্রধান পেটার-বরে ফারবার্গ বলেন, গ্রামীণফোন অ্যাপটি গড়ে তোলায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি শুধু ডেভেলপারদেরই ক্ষমতায়ন করবে না, পাশাপাশি সমৃদ্ধ গ্রাহক অভিজ্ঞতার অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখবে। স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, এই ইন্ডাস্ট্রির ফার্স্ট উদ্যোগটি দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখার জন্য আমাদের চলমান প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করে।
গ্রামীণফোনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, অ্যাপটির মাধ্যমে আমরা আরো সংযুক্ত এবং স্মার্ট ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছি। এই প্ল্যাটফর্মটি একটি স্মার্ট অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, এবং টেকসই ইকোসিস্টেম তৈরি করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণ করে। প্রথাগত টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান নয়, আমাদের উদ্দেশ্য মানুষকে সংযোগের আওতায় এনে সমাজের ক্ষমতায়ন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। গ্রামীণফোন অত্যাধুনিক আইসিটি এবং আইওটি সমাধানগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তার পোর্টফোলিওকে ঢেলে সাজিয়েছে, যাতে একটি আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের গতিশীল চাহিদা পূরণে আমরা এগিয়ে থাকি।