পানি সম্পদ এবং পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নদীর ক্ষতি না করে বর্তমান অবস্থা উন্নতির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ সময় উজানে বাধ দিয়ে নদীর প্রবাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে নাটোরের বড়াইগ্রামে বড়াল নদীর পানি প্রবাহ ও আটঘরিয়া রেগুলেটর পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, উজানের অনেক কিছুর ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। উজানে বাধ দিয়ে আমাদের প্রবাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই দেশের ভূখণ্ডের নদীগুলোর নতুন করে যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, ১৯৬০-৭০ সালে বড়াল নদীর যে চিত্র ছিলো, এখন আর নাই। উজানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান জানান, স্লুইসগেট নিয়ে নানা অভিযোগ তার মন্ত্রণালয়ের জমা হচ্ছে। স্লুইসগেটগুলো নিশ্চয়ই একটি উদ্দেশ্য নিয়ে বানানো হয়েছিলো। জনদাবির প্রেক্ষিতেই সেগুলো হয়েছিলো। কিন্তু এখন বাস্তবতা ঘুরে গেছে। এখনকার বাস্তবতা হচ্ছে নদীতে পানি ও নাব্যতা না থাকা। এর ফলে আশপাশের মানুষ ঠিকমত পানি পাচ্ছেনা।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবকাঠামোগুলো নদীগুলোকে আরও মেরে ফেলেছে। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, সেসব অবকাঠামো সরিয়ে দিলেও পানি আসবে না। কারণ অনেক জায়গায় নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে। সেখানে খনন না করলে শুধু অবকাঠামো সরিয়ে লাভ হবে না।
পানি সম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, রাজশাহীর চা ঘাটের স্লুইসগেট সরিয়ে দিয়ে একটু খনন করলেই পানি প্রবাহ নাটোরের নন্দকুজা পর্যন্ত বেড়ে যাবে। বর্ষায় বড়াল নদীর পানির অবস্থা দেখেই অনুমান করা যাচ্ছে শীতকালে এ নদীতে মোটেও পানি থাকে না। পানিই না থাকলে স্লুইস গেট দিয়ে কি হবে সেটাই বড় প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: শ্যামল পল্লী বস্তিতে আগুন: অগণন স্বপ্ন পুড়ে ছাই হতে দেখল বাসিন্দারা
পরিদর্শনের সময় বড়াল নদী খননের ওপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সিএস-আরএস-বিএস কাগজপত্র ধরে বড়াল নদী খনন করা হবে। সবার সঙ্গে কথা বলে ঈদের আগেই পরিকল্পনা ঠিক করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে সরকার তাদের সংক্ষিপ্ত মেয়াদের মধ্যেই প্রথম দফার কাজটি করে যেতে পারে। একই সঙ্গে দ্বিতীয় দফা কাজের পরিকল্পনারও অনুমোদন করে দেওয়া যায় কিনা—সেটাই লক্ষ্য রাখছেন বলে জানান উপদেষ্টা।
ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা জানিয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ইটভাটার কারনে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। পার্বত্য এলাকায় কোনো ইটভাটা করতে দেওয়া হবে না। ঢাকার বাতাস বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত।
এ সময় ঢাকাকে ‘নো ব্রিকসফিল্ড জোন’ ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টার পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বিএডিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।