পারমাণবিক শক্তির পরিধি আর না বাড়িয়ে এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিশেষ করে জ্বালানি, খাদ্য নিরাপত্তা, ওষুধ ও স্বাস্থ্য খাতে এর প্রয়োগে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) কার্যালয়ে সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সঙ্গে সাক্ষাতে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সদস্য হয়, যা কোনো আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থায় বাংলাদেশের প্রথম সদস্য পদ লাভ করা। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং পরমাণু সামগ্রীর নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ অবিচল বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী ড. হাছান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ তার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সর্বোচ্চ স্তরের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখবে।
জাতীয় জ্বালানি দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তার ভবিষ্যত শক্তির প্রধান সবুজ এবং পরিচ্ছন্ন উৎস হিসেবে পারমাণবিক শক্তির কথা বিবেচনা করছে।
খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাংলাদেশের অতুলনীয় সাফল্য উল্লেখ করে ড. হাছান পারমাণবিক কৃষি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন এবং রেডিও থেরাপির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাদ্যের জন্য পরমাণু বা 'অ্যাটমস ফর ফুড' এবং কার্বন নিঃসরণকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পরমাণু শক্তির ব্যবহার বা 'অ্যাটমস ফর নেট জিরো' উদ্যোগের জন্য মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির প্রশংসা করেন এবং এমন মহৎ উদ্যোগে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেন।
আইএইএ মহাপরিচালক পরমাণু বিজ্ঞান প্রয়োগকে কাজে লাগিয়ে মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে এজেন্সির টেকসই সহায়তা দান নিশ্চিত করেন এবং ‘অ্যাটম ফর ফুড’ উদ্যোগে বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার বিশেষ আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
তিনি পারমাণবিক বিদ্যু কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই উদ্যোগ সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততায় এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছে এবং পারমাণবিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
সাক্ষাতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প চালুর সময় আইএইএ মহাপরিচালককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এ সময় ছিলেন ভিয়েনায় দেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম ইউরোপ উইংয়ের মহাপরিচালক কাজী রাসেল পারভেজ।