১৯৬৯ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে বাবাকে হারান হাবিবুর রহমান। তারপর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে কাজের সন্ধানে আসেন ঢাকায়।
বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার সোনাহাটি ইউনিয়নের সোনাকান্দি গ্রামে।
বর্তমানে ৭৭ বছর বয়সী হাবিবুরের স্ত্রী ও চার মেয়েসহ ছয় সদস্যের পরিবার রয়েছে। সব মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। স্ত্রী থাকেন গ্রামের বাড়িতে।
পেশায় রিকশাচালক হাবিবুর রিকশা চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন। জীবনের এই পর্যায়ে এসেও এই ক্লান্তিকর কাজটি করা ছাড়া তার আর কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: রিকশাচালকদের স্যালাইন-পানি ও ছাতা বিতরণ করলেন ডিএনসিসি মেয়র
তার মেয়েদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থাও খুব খারাপ তাই তারা তাদের বাবাকে কোনো ভরণপোষণও দিতে পারে না।
বেশ কয়েকবার স্ট্রোক করায় শরীরের অবস্থাও ভালো নেই। কিন্তু চরম দারিদ্র্য বাধ্য করছে জীবনের ঘানি টানতে। ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না হাবিবুর।
এই বয়সে এসেও সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির ভাতা পাচ্ছেন না হাবিব ও তার স্ত্রী।
এই ছিল হাবিবের মতো একজন সাধারণ মানুষের অতি সাদামাটা জীবন।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট তার জীবনকে অনেকটাই বদলে দিয়েছে।
এখন এক টুকরো জমি ও একটি নতুন বাড়ির মালিক হবেন তিনি।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্প: ‘এহন আমাগের দিন ঘুরতে শুরু করছে’
হাবিবুর রহমানের দুর্দশা নিয়ে ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) নজরে আসে।
গৃহহীন এই বৃদ্ধ রিকশাচালকের জন্য এক মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
হাবিবুর রহমানের জন্য তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একটি ঘর নির্মাণ করে দিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
এছাড়াও গ্রামের বাড়িতে চালানোর জন্য তাকে একটি অটোরিকশা (ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার) দেওয়া হবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় রাস্তায় ঘুমাতে হতো।
তিনি আরও জানান, এখন তিনি গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন এবং তাকে একটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের অনুরোধ করেছিলাম আমার উপার্জনের জন্য আমাকে একটি অটো দেওয়ার জন্য। তারা (পিএমও) আমাকে অটো দেওয়ার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করেছে। আমার জীবন বদলে যাবে।’
আরও পড়ুন: ৩৩৩-তে সাহায্য চেয়ে রিকশাভ্যান পেলেন হাটহাজারীর প্রদীপ