দু'দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার রয়েছে উল্লেখ করে একজন ভারতীয় কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, বৈঠকটি হয়েছে।’
এছাড়া, করোনাভাইরাসের এ সময়ে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সুষ্ঠু অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে তাদের এ সাক্ষাতের পরে রাতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে কয়েকজন সাংবাদিককে বৈঠকে আলোচনার বিভিন্ন দিক জানান ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এই বার্তা দিতেই শ্রিংলা ঢাকা সফর করছেন এবং উন্নয়নের পথে অংশীদার হতে ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
রীভা গাঙ্গুলী বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিশেষ ও নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এজন্য এই মহামারি চলাকালীনও পররাষ্ট্রসচিব এই বার্তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে এসেছেন।’
বৈঠকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরবর্তী ভার্চুয়ালি জয়েন্ট কনসাল্টেটিভ কমিশন (জেসিসি) বা পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
বৈঠকের জন্য উভয় পক্ষই একটি সুবিধাজনক তারিখ পাবে উল্লেখ করে ভারত সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করতে চাই।’
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা করা হয় এবং উভয় পক্ষই নিরাপদ, সুরক্ষিত ও টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দেয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে শ্রিংলার এ বৈঠকটি প্রায় এক ঘন্টা স্থায়ী হয়। তবে এ বৈঠকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এখনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
শ্রিংলা পৌঁছানোর পর ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন জানান, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও পারস্পরিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ঢাকা সফরে এসেছেন।
বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বলেন, ‘এটি আকস্মিক সফর নয়। ভারত আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং তাদের সাথে আমাদের পারস্পরিক অনেক আলোচনার বিষয় রয়েছে।’
বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করা শ্রিংলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পররাষ্ট্রসচিব হিসাবে তিনি এ বছর মার্চ মাসে প্রথম ঢাকা সফর করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতির কারণে কারণে গত কয়েকমাস ধরে দু'দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সফরের ঘাটতি ছিল। তবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে ‘ক্ষতিকর’ গল্প নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে সম্প্রতি বাংলাদেশের সাথে তাদের সম্পর্ককে ‘অত্যন্ত গভীর’ বলেও বর্ণনা করেছে ভারত।
সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে ভার্চুয়াল সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে উভয় পক্ষই পারস্পরিক সংবেদনশীলতা এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দেয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে ‘রক্তের সম্পর্ক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে ‘অর্থনৈতিক সম্পর্ক’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয় উল্লেখ করে অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক এই অঞ্চলে ভালো প্রতিবেশী সম্পর্কের রোল মডেল।’