বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) বিষয়ক আলোচনা ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক।
তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের আগে বাংলাদেশের হাতে খুব বেশি সময় নেই।
তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের আসন্ন উত্তরণ এবং পরে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা হারানো কোরিয়া-বাংলাদেশ বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।’
রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে কূটনৈতিক সংবাদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (আপটা) কিছু অংশ জিএসপির সঙ্গে যুক্ত এবং বাংলাদেশ যদি এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ করে, তবে আপটার আওতায় কোনো ট্যারিফ সুবিধা না পাওয়ায় কিছু পণ্য শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, শুধু জিএসপি সুবিধা বাড়ানো দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হতে পারে না। উভয় পক্ষকে ইপিএর মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন ইপিএ বা কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ)। ‘আমার দৃষ্টিতে, এই ধরনের এফটিএ একই।’
কোরিয়ায় এফটিএ চালুর জন্য জাতীয় সংসদের অনুমোদনসহ অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ইপিএ শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা।
রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ইপিএ নিয়ে ২০২৩ সালের শুরু থেকেই আলোচনা চলছে তবে বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে যৌথ গবেষণা শেষ করেছে এবং চীনের সঙ্গে এটি শেষ করার কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছে।
এর আগে রাষ্ট্রদূত ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে এক ইফতার-কাম-নৈশভোজের আয়োজন করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব আন্তঃকোরীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক কূটনীতি, সফট পাওয়ার অ্যান্ড কালচার, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি এবং বহুপাক্ষিক যোগাযোগের মতো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের জানাতে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৯৭২ সালের ১২ মে কোরিয়া বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ২০২৩ সালে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে।