তিনি বলেন, ‘আমি চাই বিমানের প্রত্যেক ব্যক্তি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করবেন। যাতে এর (বিমান) কোনো বদনাম না হয়।’
বুধবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে বিমানের বহরে নতুন যোগ হওয়া ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’র কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যাত্রীদের লাগেজ দ্রুত সরবরাহ করার প্রতি জোর দেন।
সেই সাথে শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অধিক মনোযোগ দিতে বলেন। ‘বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ব্যাপারে আপনাদের অবশ্যই যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে।’
তিনি জানান, সাম্প্রতিক অতীতে কিছু দেশ বাংলাদেশের (কার্গো সার্ভিস) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি দেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে বলেও জানান তিনি।
বিমানের সেবা উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রম সংক্ষেপে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য আরো তিনটি ড্যাস-৮ উড়োজাহাজ কেনার জন্য সরকার কানাডার সাথে ক্রয় চুক্তিতে পৌঁছেছে।
সরকার দেশের বিমানবন্দরগুলোও উন্নয়নে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে বাড়ানো হয়েছে, সিলেট বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন সমাপ্ত হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩-এর কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
বাগেরহাটে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগ একটি দেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটি বিবেচনায় রেখে সরকার আকাশ, রেল, সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ উন্নয়নে কঠোরভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রয়েছে এবং দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এই অর্জন ধরে রেখে আমাদের আরো এগিয়ে যেতে হবে।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান খান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) মো. ইনামুল বারী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মহীবুল হক এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য প্রথম বোয়িংয়ের তৈরি ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ গত ১৯ আগস্ট দেশে আসে। এর মধ্যে দিয়ে বিমানের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টি।
টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই ড্রিমলাইনার চালাতে অন্যান্য উড়োজাহাজের তুলনায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগবে।
আকাশবীণায় আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। একইসাথে ড্রিমলাইনারের ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমে (আইএফই) থাকবে ১০০টির বেশি ক্ল্যাসিক থেকে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র। অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ও ওয়াইফাই সুবিধা পাবেন যাত্রীরা।
বিমানে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যেক যাত্রী ১৫ মিনিটের জন্য বিনামূল্যে ১০ মেগাবাইট ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। এরপরও কোনো যাত্রী ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে চার্জ দিতে হবে। এছাড়া মোবাইল ফোনে রোমিং সুবিধা থাকলে আকাশে উড্ডয়নের সময় কল করতে পারবেন যাত্রীরা।