রবিবার অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার এই পর্ব।
বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বাংলাদেশি মাওলানা কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. জোবায়ের মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে ইজতেমার আয়োজকরা জানিয়েছেন। এ উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণসহ নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারের ইজতেমায় বেশী সংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করায় মূল ইজতেমা ময়দান ছাড়িয়ে সড়ক এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক মুসল্লি। প্রচণ্ড শীত ও কনকনে হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে ধর্মীয় বয়ান শুনছেন তারা।
সকাল থেকে ইবাদত-বন্দেগি, খিত্তা ভিত্তিক তাসকিলে তামিল, ইস্তেকবাল জামাত, নুরেওয়ালী জামাত, গঠন এরং চিল্লা বন্দি হয়ে দেশ বিদেশে দ্বীনের দাওয়াত ছড়িয়ে দেয়াসহ তাবলীগের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বয়ান শোনার মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হচ্ছে। এদিন শুধুমাত্র তাবলীগ কর্মকাণ্ডের ওপর আলোচনা এবং জোট বন্দি হয়ে তাবলীগের ওপর আলোচনাকে গুরুত্ব দেয়া হয়।
বিকালে তাসকিল কামরায় চিল্লাধারী সাথীদের জড়ো করে হেদায়াতী বয়ান করা হয়। এসব চিল্লাধারী সাথীরা ইজতেমা সম্পন্ন হলে দেশ বিদেশে দাওয়াতী কাজে ছড়িয়ে পড়বেন। তাবলীগ জামাতের এ সম্মেলনে অর্ধশতাধিক দেশের ২ হাজার বিদেশি মেহমান ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন।
ইজতেমার মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ জানান, প্রচণ্ড কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহ উপেক্ষা করে ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা ধর্মীয় বয়ান শুনছেন। বাদ ফজর বয়ান পেশ করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। বাদ যোহর মাওলানা ইসমাইল, বাদ আসর ভারতের মাওলানা জুহাইরুল হাসান এবং বাদ মাগরিব ইব্রাহিম দেওলা আগত মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ান পেশ করেন।
গত দু’দিন ধরে ইজতেমা মাঠে সার্বক্ষণিক ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন রয়েছেন লাখ লাখ দেশি-বিদেশি মুসুল্লি। ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে ঈমান, আমল, আখলাক ও দ্বীনের পথে মেহনতের ওপর বয়ান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশ-বিদেশ থেকে আগত মুরুব্বিরা তাবলীগের ছয় ওছুলের মধ্যে দাওয়াতে দ্বীনের মেহনতের ওপর গুরুত্বারোপ করে বয়ান করছেন।
বাংলায় হেদায়াতি বয়ান ও আখেরি মোনাজাত
বিগত বছরগুলোতে ইজতেমার বয়ান ও আখেরি মোনাজাত হিন্দি ও আরবি ভাষায় করা হলেও এবার আখেরি মোনাজাত ও হেদায়েতি বয়ান আরবির পাশাপাশি বাংলায় দেয়া হবে। আখেরি মোনাজাতের আগে হেদায়েতী বয়ান পেশ করবেন মাওলানা জিয়াউল হাসান।
পাঁচ মুসল্লির মৃত্যু
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. মনজুর রহমান জানান, শুক্রবার বিকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত পাঁচজন মুসল্লি মারা গেছেন।
তারা হলেন-রাজশাহীর চারগাছ থানার বনকিশোর এলাকার আব্দুর রাজ্জাক (৬৭), কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার ডিমলা এলাকার তমিজ উদ্দিন (৬৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানার বড়তোল্লা এলাকার মো. শাহজাহান (৬০), বরিশালের গৌরনদী থানার খালিজপুর এলাকার আলী আজগর (৭০) ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার দক্ষিণ কলাবাগান এলাকার মো. ইউসুফ আলী মেম্বার (৪৫)। এই নিয়ে ইজতেমায় আসা নয়জন মুসল্লি মারা গেলেন। অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে তারা মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ব সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা অংশ নেবেন দ্বিতীয় পর্বে।