সোমবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বুড়িগঙ্গা নদী দূষণরোধে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট মামলায় এ আদেশ দেওয়া হয়।
রায় বাস্তবায়নে বার বার সময় চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, ওয়াসার এমডি ইচ্ছাকৃত রায় প্রতিপালন করছেন না। রায় বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপন করছেন।
আদালত আরও বলেন, হাইকোর্টের রায় বা নির্দেশনাকে হালকাভাবে নিলে চলবে না। একইসঙ্গে রায় বাস্তবায়নের অগ্রগতি এক মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ১৮ অক্টোবর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে বুড়িগঙ্গার দণি পার্শ্বে নদী ও নদীর তীরের জায়গা থেকে ময়লার স্তুপ অপসারণ এবং বর্জ্য ও ময়লা ফেলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই ময়লার স্তুপ ও বর্জ্য অপসারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই আদেশ বাস্তবায়ন করে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলা হয়েছে।
রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম। ঢাকা ওয়াসার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট উম্মে সালমা।
এইচআরপিবি’র করা রিট মামলায় হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন।
এছাড়া নদীর পানি যাতে দূষিত না হয় সেজন্য সব ধরণের বর্জ্য ফেলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে তরল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। যা নদীর পানিকে দূষিত করছে। বিষয়টি এইচআরপিবি’র পক্ষ থেকে আদালতের নজরে আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে গত ৪ মার্চ হাইকোর্টে সশরীরে হাজির হয়ে ওয়াসার এমডি তাকসিম এম খান রায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট ও ৭ সেপ্টেম্বর ওয়াসা দুটি প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে রায় বাস্তবায়নের জন্য ওয়াসাকে সময় দেন। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডির পক্ষ থেকে গতকাল আবারও সময় চেয়ে যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয় তাতে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালত তাকে সতর্ক করে রায় বাস্তায়নের নির্দেশ দেন।