ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতারা ২২ থেকে ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠেয় ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রস্তুত। বৈঠক থেকে কী ধরনের ফলাফল আসবে সেই উচ্চ আশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন পর্যবেক্ষকরা৷
ঢাকাস্থ চীনের দূতাবাস জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় এই প্রথম পাঁচটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশের প্রতিনিধিরা সশরীরে সাক্ষাৎ করবেন। চায়না ডেইলিতে সোমবার (৭ আগস্ট) প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে অন্যান্য অনেক দেশ তাদের নিজস্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার উপায় হিসাবে ব্রিকসের দিকে তাকিয়ে আছে। ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস এটি শেয়ার করেছে।
এবারের ব্রিকস সম্মেলনে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নতুন সদস্যদের কীভাবে বাছাই করা হয় এবং কোন কোন দেশ যোগ্য বলে বিবেচিত হবে তা নিয়ে বেশি আগ্রহ রয়েছে সবার।
প্রবন্ধতে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফিলানি এমথেম্বুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির পর শীর্ষ সম্মেলনে এবার প্রথম সশরীরে ব্রিকসের বৈঠক হবে। এতে দেখায় যায়, ইউক্রেন যুদ্ধ সবক্ষেত্রে প্রভাব ফেললেও সদস্য দেশগুলো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে উন্নতি করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন: মুখপাত্র
‘ব্রিকস ও আফ্রিকা: পার্টনারশিপ ফর মিউচ্যুয়ালি এক্সিলারেটেড গ্রথ, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইনক্লুসিভ মাল্টিলেটারেলিজম’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে।
বহুপক্ষীয় দিক সম্পর্কে মেথিবু বলেন, ‘এটি স্বীকৃতি যে, গত কয়েক বছরে সংকটে পড়েছে বহুপাক্ষিকতা। এটি যে উদ্দেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তা অর্জন করতে পারেনি। এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুপাক্ষিকতাকে শক্তিশালী করা। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিপাদ্যের মধ্যে আফ্রিকান গুরুত্ব তুলে ধরেছে।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও চীন-আফ্রিকা উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক কেনিয়ার গবেষক ক্যাভিন্স অ্যাডহেয়ার বলেছেন, আফ্রিকান দেশগুলো আশা করে যে ব্রিকস তাদের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আরও সুযোগ দেবে।
তিনি বলেন, ব্রিকস দেশগুলোর জনগণ সমগ্র বিশ্বের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশেরও বেশি। এই বৃহৎ বাজারগুলোতে প্রবেশাধিকার আফ্রিকার অনেক উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে দ্রুত বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করতে পারে।
দ্য চায়না ডেইলির নিবন্ধে অ্যাডহেয়ারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘ক্রমবর্ধমান মেরুকরণ করা বিশ্বে আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সক্রিয় উপায় তৈরি করতে পারে ব্রিকস। যেগুলোতে পশ্চিমা শক্তিগুলোর আধিপত্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ৪০টিরও বেশি দেশ বলেছে যে, তারা শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিকসে যোগ দিতে চায়। এতে দেখা যায়, গ্রুপটি কতটা জনপ্রিয়। বেশিরভাগ দেশ মনে করে ব্রিকসে যোগ দিলে তারা তাদের উন্নয়নের সমস্যা সমাধান করতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সাইডলাইন বৈঠক এখনো নিশ্চিত হয়নি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।
স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ। জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে (এসসিসি) শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্রিকস নেতারা কিছু উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে অন্তুর্ভুক্তির কথা ভাবছেন। এগুলো হলো– সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশসহ প্রায় আটটি নতুন দেশ।’
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ