বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দুর্নীতি করতে হলে সর্বজনের অধিকার খর্ব করতে হয়, সেজন্য বল প্রয়োগ করতে হয়। আবার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠীকে লালন করা হয়।
‘আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে সরকার ক্ষুব্ধ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগের কোনো সুরাহা দেখতে পাচ্ছি না। এই দুইয়ের মধ্যে একটা যোগসূত্র রয়েছে। এখানে দুর্নীতি আর সন্ত্রাস একসাথে চলছে। তবে এর বিরুদ্ধে লড়াইটা অব্যাহত রাখতে হবে,’ বলেন তিনি।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, ‘গত ৫ নভেম্বরের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক করতালি দিয়ে হামলাকারীদের উৎসাহ দিয়েছেন। আমরা শুধু একটি দুর্নীতির তদন্ত চেয়েছি। সেখানে উপাচার্যের সরে গিয়ে তদন্তের সুযোগ করে দেয়া উচিত ছিল। অথচ আমাদের অহিংস আন্দোলনে হামলা করা হয়েছে। বল প্রয়োগ করে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রকিবুল হক রনির সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, ছাত্র ইউনিয়নের কার্যকরী সদস্য মিখা পীরেগু, ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, ছাত্র ফ্রন্টের সহসভাপতি সম্পদ অয়ন মারান্ডি, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু, ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য খালিদ মাহমুদ তন্ময় প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এই দাবিতে বিক্ষোভ, ধর্মঘটের পর গত ৪ নভেম্বর উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করে তারা। পরদিন ৫ নভেম্বর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের পিটিয়ে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ এক মাস পর গত ৫ ডিসেম্বর আবার ক্যাম্পাস সচল হলে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিক্ষোভকারীরা।