শিক্ষা
মেধাপাচার রোধ ও শিক্ষা পুনর্গঠনের অঙ্গীকার বিএনপির
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘তাদের দল এমন একটি বৈষম্যহীন পরিবেশ গড়ে তুলতে চায়, যেখানে শিক্ষা ও গবেষণা একযোগে অগ্রসর হবে এবং মেধাপাচার রোধ করা সম্ভব হবে।’
রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তা প্ল্যাটফর্ম’ আয়োজিত ‘শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা শিক্ষা খাতকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে গবেষণা ও শিক্ষায় সমান অগ্রগতি হয় এবং সেখানে কোনো বৈষম্য না থাকে।’
এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সম্মিলিত ভূমিকা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। সালাহউদ্দিন বলেন, ‘রাজনীতিবিদ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত ভূমিকার মাধ্যমেই একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন সম্ভব।’
‘রাজনীতিবিদদের মতোই শিক্ষকদেরও দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের সংগঠনগুলোর সমর্থনও প্রয়োজন। এই তিনটি শক্তির সমন্বয়েই একটি কার্যকর রাষ্ট্র গঠন সম্ভব,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশে যদি গুণগত গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে আসতে আগ্রহী হবেন।
‘মেধাপাচার কমে আসবে এবং তারা দেশে থেকেই অবদান রাখতে চাইবেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী বিদেশে গিয়ে আর ফেরেন না। কারণ দেশে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে তারা ফিরে আসতে আগ্রহী হন না।’
আরও পড়ুন: তিন সাবেক সিইসিসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা
অন্যদিকে, চীন ও ভারত তাদের দক্ষ জনগোষ্ঠীর ফিরে আসার ফলে লাভবান হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা বিদেশে থাকেনি, বরং দেশে ফিরে এসেছে এবং প্রযুক্তির দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমনটি হচ্ছে না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেসসচিব ফয়েজ আহমেদ, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মাওদুদ আলমগীর পাভেল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরাও সংলাপে অংশ নেন এবং শিক্ষা বিষয়ে তাঁদের মতামত ও প্রশ্ন তুলে ধরেন। অতিথিরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন এবং সেরা তিনজন প্রশ্নকারীকে পুরস্কৃত করা হয়।
১৬৫ দিন আগে
চীনে স্কলারশিপ ২০২৫: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ
প্রতিবারের ন্যায় ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে চীন সরকার। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো মেধাবীদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রেখেছে। এগুলোর আওতায় টিউশন ফি মওকুফসহ আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা এবং মাসিক ভাতারও সুবিধা রয়েছে। এশিয়ার দেশটিতে অধ্যয়নের এমন সুবর্ণ সুযোগ বাংলাদেশি মেধাবীদের জন্যও অফুরন্ত সম্ভাবনার নামান্তর। চলুন, চীনের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি স্কলারশিপের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
২০২৫ সালে চীনের উচ্চশিক্ষায় শীর্ষ ১০টি স্কলারশিপ
.
সিএসসি স্কলারশিপ (CSC Scholarship)
এই বৃত্তি প্রকল্পটির পূর্ণরূপ Chinese Scholarship Council। এর মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীরা চীনের ২৮০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, মাস্টার্স এবং পিএইচডি অধ্যয়নের সুযোগ পান। চীনা সরকার এই স্কলারশিপের অধীনে শিক্ষার্থীদের আবাসন ও মৌলিক স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করে থাকে। প্রদেয় মাসিক ভাতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ চাইনিজ ইউয়ান, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫৮ হাজার ৬৪৫ টাকার (১ চাইনিজ ইউয়ান = ১৬ দশমিক ৭৬ বাংলাদেশি টাকা) সমতূল্য।
ইতোমধ্যে যে শিক্ষার্থীরা চীনের কোনও বৃত্তি পেয়েছে তাদের জন্য CSC Scholarship প্রযোজ্য নয়।
এর আবেদনের জন্য নিবন্ধন করতে হবে সিএসসি পোর্টালে-(https://studyinchina.csc.edu.cn/?S8cMF5lUCwGD=1742626962725#/register)। অতঃপর যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক সেখানে পৃথকভাবে আবেদন জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
তিয়াঞ্জিন গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Tianjin Government Scholarship)
একক ভাবে নান্কাই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদেরকে দেয়া হয় তিয়াঞ্জিন গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ। স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি লেভেলের জন্য উন্মুক্ত এই প্রকল্পে মাসিক সর্বোচ্চ ২ হাজার ইউয়ান (৩৩ হাজার ৫১১ টাকা) পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
আবেদনের শেষ সময় সাধারণত মে মাসের শেষের দিকে হয়ে থাকে। আবেদনকারীদেরকে https://tju.at0086.cn/StuApplication/Login.aspx লিঙ্কের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। নান্কাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চূড়ান্ত অনুমোদনই শিক্ষার্থীদের Tianjin Government Scholarship প্রাপ্তির প্রধান মাপকাঠি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে- https://sie.tju.edu.cn/en/jxj/tjszfjxj/ লিঙ্কে।
সাংহাই গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Shanghai Government Scholarship)
চীনের প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক পরিচালিত অনুদানগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই সাংহাই গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ। পিএইচডি, মাস্টার্স, এবং নূন্যতম স্নাতকের ক্ষেত্রে প্রদানকৃত এই অনুদান তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। টাইপ এ (মাস্টার্স বা পিএইচডি), টাইপ বি (স্নাতক), এবং টাইপ সি (দীর্ঘমেয়াদী উচ্চতর অধ্যয়ন, যেমন চীনা ভাষা কোর্স)।
সাংহাই সরকার এগুলোর মধ্যে দুই ক্যাটাগরিতে স্কলারশিপ প্রদান করে। টাইপ এ’তে ফুল ফান্ডিং দেয় (ভর্তি ফি, আবাসন, চিকিৎসা বীমা এবং মাসিক ভাতা প্রদান) এবং টাইপ বি’তে আংশিক ফান্ডিং (শুধুমাত্র টিউশন ফি ও স্বাস্থ্য বীমা।
আরো পড়ুন: জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
Shanghai Government Scholarship চীনা ভাষা কোর্সের মতো দীর্ঘমেয়াদী কোনও অধ্যয়নের জন্য প্রযোজ্য নয়।
ডিগ্রী বিশেষে স্কলারশিপের মূল্যমান ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ থেকে ৫৮ হাজার ৬৪৫ টাকা) পর্যন্ত।
আবেদনের সাধারণ সময় জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এবং আবেদনের প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে- https://www.study-shanghai.cn/c.asp?action=AS_SS_Entry।
বেইজিং গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Beijing Government Scholarship)
চীনের প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রথম স্কলারশিপ কর্মসূচি হচ্ছে এটি। সরাসরি বেইজিং সরকার থেকে হওয়া এই অর্থায়নের একমাত্র সুবিধাভোগী হচ্ছে পিএইচডি, মাস্টার্স ও স্নাতক শিক্ষার্থীরা।
স্কলারশিপের আওতায় প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ইউয়ান (৬ লাখ ৭০ হাজার ২২৬ টাকা)। সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে জুনের মধ্যে আবেদন কার্যক্রম শেষ করা হয়।
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
Beijing Government Scholarship প্রদানকারী সুনির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা পাওয়া যাবে- https://english.beijing.gov.cn/studyinginbeijing/choices/-লিঙ্কে। এখান থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর তৎসংলগ্ন ওয়েবসাইটেই পাওয়া যাবে আবেদনের প্রক্রিয়া।
হুবেই গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Hubei Government Scholarship)
এই স্কলারশিপটিও স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। স্নাতক শিক্ষার্থীরা বছরে ১০ হাজার ইউয়ান (১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৬ টাকা) এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ১৫ হাজার ইউয়ান (২ লাখ ৫১ হাজার ২৩৫ টাকা)। পিএইচডি শিক্ষার্থীরা পান ২০ হাজার ইউয়ান (৩ লাখ ৩৫ হাজার ১১৩ টাকা)। সাধারণ গবেষণা স্কলারশিপ হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদের ভিত্তিতে ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার ইউয়ান (৮৩ হাজার ৭৭৮ থেকে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ১১৩ টাকা) প্রদান করা হয়ে থাকে।
স্কলারশিপের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয় প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে। আবেদনের জন্য Hubei Government Scholarship প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করার পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সিআইএস স্কলারশিপ (CIS Scholarship)
শিক্ষা খাতে এই সরকারি প্রকল্পটির পূর্ণরূপ Confucius Institute Scholarship। এর আওতাভূক্ত প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে- চীনের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য পিএইচডি গবেষণা, গবেষণামূলক সফর, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ, এবং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি কোর্স। ১৫০টিরও বেশি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আর্থিক সুবিধা গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে।
CIS Scholarship-এ টিউশন ফি, আবাসন ব্যয়, চিকিৎসা বীমা এবং মাসিক ভাতা অন্তর্ভূক্ত। স্নাতক বা চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি কোর্স গ্রহণকারীরা মাসিক ২ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ টাকা) পেয়ে থাকেন। মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে মাসিক ৩ হাজার ইউয়ান (৫০ হাজার ২৬৭ টাকা)।
সাধারণত মে এবং নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে দুটো পৃথক শিডিউলে আবেদন গ্রহণ করা হয়। অনলাইন আবেদনের সাইট: http://www.chinese.cn/page/#/pcpage/project_detail।
ইউনান প্রোভিন্সিয়াল গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Yunnan Provincial Government Scholarship)
বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অধীনে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই স্কলারশিপ। এর নেপথ্যের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিএসসি। এই ব্যবস্থায় স্নাতক, মাস্টার্স, ডক্টরেট, প্রশিক্ষণ ও স্বল্পমেয়াদী কোর্সের জন্য আবেদন করা যায়।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
ফুল ফান্ডিং-এর এই প্রকল্পে রয়েছে টিউশন ফি মওকুফ, বিনামূল্যে অন-ক্যাম্পাস আবাসন, মাসিক ভাতা এবং চিকিৎসা বীমা ও সুরক্ষা সুবিধা। সাধারণত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে আবেদন গ্রহণ কর্মসূচী।
Yunnan Provincial Government Scholarship-এ আবেদনের প্ল্যাটফর্ম ইউনান নরমাল ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাই; http://ynnu.at0086.cn/student।
জিঞ্জিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Xinjiang Uygur Autonomous Region Government Scholarship)
স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সরকার পরিচালিত এই বৃত্তি প্রকল্পে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির পাশাপাশি চীনা ভাষা কোর্সও বিনা খরচে অধ্যয়ন করা যায়। পূর্ণ অর্থায়নের এই সুবিধায় জীবনযাত্রার ভাতা, আবাসন, চিকিৎসা বীমা ও টিউশন ফি অন্তর্ভূক্ত।
সাধারণত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ থাকে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির অধীনে নির্ধারিত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো বিষয়ের জন্য এই আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। এই তথ্যসহ স্কলারশিপের যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য রয়েছে স্বতন্ত্র স্কলারশিপ ম্যানেজমেন্ট ইন্ফরমেশন সিস্টেম।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এই সিস্টেম (http://studyinchina.csc.edu.cn/#/register) Xinjiang Uygur Autonomous Region Government Scholarship-এর আবেদনের জন্য নিবেদিত প্ল্যাটফর্ম। একই ভাবে আবেদন জমা দিতে হয় জিঞ্জিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (http://xju.at0086.cn/StuApplication/Login.aspx)।
নাঞ্জিং গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ (Nanjing Government Scholarship)
এই সরকারি স্কলারশিপটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতক ও মাস্টার্স পর্যায়ে আংশিক ফান্ডিং দেয়। এর পাশাপাশি অন্য কোনো সংস্থার বৃত্তি একত্রে গ্রহণ করার নিয়ম নেই।
Nanjing Government Scholarship শুধুমাত্র নাঞ্জিং ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে দেয়া হয়। স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি একাডেমিক বছরে সরকার থেকে আসে ১০ হাজার ইউয়ান (১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৬ টাকা)। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে আসে ৫ হাজার ইউয়ান (৮৩ হাজার ৭৭৮ টাকা)।
মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ২০ হাজার ইউয়ান (৩ লাখ ৩৫ হাজার ১১৩ টাকা) করে পান। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শুধু জীবনযাত্রার ব্যয়টা মওকুফ করে।
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
আবেদন কার্যক্রম অব্যাহত থাকে সাধারণত এপ্রিল মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত। প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হয় https://nuist.17gz.org/member/login.do ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এ সময় প্রোগ্রাম হিসেবে নির্বাচন করতে হয় ‘চাইনিজ লোকাল গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপ’।
ইয়াংঝৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ (Yangzhou University Scholarship)
এই বৃত্তির ম্যাধমে ইয়াংজৌ ইউনিভার্সিটি তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া বৈশ্বিক ছাত্রছাত্রীদের পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করে। একাডেমিক ডিগ্রীগুলোর মধ্যে রয়েছে স্নাতক, মাস্টার্স এবং পিএইচডি। এই প্রকল্পের মধ্যে সুবিধা হিসেবে রয়েছে টিউশন ফি মওকুফ, আবাসন ও মাসিক ভাতা।
প্রার্থীদের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মাঝামাঝিতেই শেষ করতে হয় যাবতীয় আবেদন প্রক্রিয়া।
Yangzhou University Scholarship-এ স্নাতক পর্যায়ে শুধুমাত্র আবাসনের ব্যয় ও টিউশন ফি মওকুফ করা হয়। মাস্টার্সে টিউশন ও আবাসন ব্যয় ছাড়াও রয়েছে প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (২৫ হাজার ১৩৩ টাকা) করে জীবিকা ভাতা। এটি চলে ১০ মাস পর্যন্ত।
আরো পড়ুন: রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্কলারশিপসহ ও আনুষঙ্গিক খরচ
পিএইচডিতে টিউশন ও আবাসন ব্যয়ের পাশাপাশি গবেষকরা মাসে ২ হাজার ৫০০ ইউয়ান (৪১ হাজার ৮৮৯ টাকা) পর্যন্ত জীবিকা ভাতা পেয়ে থাকেন। এর স্থায়ীত্বকাল ১০ মাস পর্যন্ত।
পূর্ণ আবেদন সম্পন্ন করার জন্য প্রার্থীদের যেতে হবে-https://yzu.at0086.cn/StuApplication/Login.aspx ওয়েবসাইটে।
পরিশিষ্ট
এই ১০টি চায়না স্কলারশিপ চীনের শিক্ষা খাতে দেশটির সরকারের অবদানকে অর্থবহ করে তুলেছে। বৃত্তি প্রকল্পগুলোর প্রত্যেকটিই ব্যাচেলর থেকে শুরু করে পিএইচডি পর্যন্ত সকল পর্যায়ের মেধাবীদের জন্য প্রযোজ্য।
তন্মধ্যে সরাসরি প্রধান সরকারি প্রকল্পভূক্ত হচ্ছে সিএসসি এবং সিআইএস স্কলারশিপ। তিয়াঞ্জিন, শাংহাই, বেইজিং, হুবেই, ইউনান প্রভিন্সিয়াল, জিঞ্জিয়াং উইঘুর অটোনমাস রেজিন এবং নাঞ্জিং গভর্ণমেন্ট স্কলারশিপগুলো পরিচালিত হয় প্রাদেশিক সরকারের অধীনে। তালিকার একমাত্র বেসরকারি উদ্যোগ হচ্ছে ইয়াংঝৌ ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ।
আরো পড়ুন: লিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ভর্তি, ভিসা, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ নানাবিধ সুবিধা
সর্বসাকূল্যে, এই চাইনিজ স্কলারশিপগুলোর যে কোনওটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণের পথে উৎকৃষ্ট বাহক।
২৫৭ দিন আগে
ফ্যাসিস্টরা ইতিহাসের করুণ পাঠ থেকে শিক্ষা নেয় না: জামায়াত আমির
অতীতের ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারেরা ইতিহাসের করুণ পাঠ পড়লেও শিক্ষা নেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘অতীতে এরকম স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট যারা ছিল— তাদের নাম বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে অঙ্কিত হয়ে আছে। একই পরিণতি সবার বরণ করতে হয়েছে। কিন্ত ইতিহাসের দুর্ভাগ্যজনক শিক্ষা হচ্ছে— ইতিহাসের করুণ পাঠ পড়ে, কিন্ত সেখান থেকে শিক্ষা নেয় না।’
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের শহীদদের নিয়ে স্মারকের উদ্বোধন করেন ডা. শফিকুর রহমান।
এছাড়াও একযোগে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রামে জুলাই শহীদদের নিয়ে রচিত স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় যখন তারা থাকেন, তখন তারা সদর্পে অনেক দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে। আল্লাহ তায়ালা এসব দাম্ভিকদের ছাড় দেন— ছেড়ে দেন না।
তিনি বলেন, যে জাতি তার বীরদের ও জ্ঞানীদের সম্মান করতে জানে না, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সেই জাতিকে সম্মানিত করেন না। আমাদের জাতির ইতিহাস বিস্মৃতির ও বিকৃতির ইতিহাস। এই ইতিহাস অনেক সময় রচনা হয়েছে বহু বছর পরে। ইতিহাসের জায়গা থেকে ইতিহাসকে সরিয়ে দিলে সেটা আর ইতিহাস থাকে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কিছু ইতিহাস মানুষের জন্য হয় বিষাদের, কিছু হয় আনন্দের, আর কিছু হয় গৌরবের। জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে যারা জীবন দেন, অতীতেও এরকম যারা দিয়েছেন, ৪৭, ৫২ সর্বশেষ ২০২৪ যারা জীবন দিয়েছেন— তারা গৌরবের। শহীদ পরিবারগুলোর জন্য এটি কান্নার ইতিহাস, আর দেশবাসীর জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার ইতিহাস।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত এরকম একটি আয়োজন আমরা কিংবা কোনো বিরোধী দল কখনো কল্পনাও করেনি। এমনকি সমাজের যারা বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, যাদেরকে সভ্য সমাজের প্রতিনিধি বলা হয়— তারাও সাহস করেনি।
জামায়াত আমির বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে সত্যিকার অর্থে একা জামায়াতে ইসলামী নয়, মুক্তিকামী সকল মানুষ ছিলেন মজলুম। এদেশের আপামর ওলামায়ে কেরাম, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী-সমর্থক— এমনকি সাধারণ জনতাও।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরাও ফ্যাসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত ছিলেন না। ওই সময় তাদেরকেও জীবন দিতে হয়েছে— কারাগারে যেতে হয়েছে, রিমান্ডের নামে নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। বিদেশে বসে যারা দেশের মুক্তির জন্য কলম যুদ্ধ চালিয়েছিলেন, দেশে তাদের আপনজনকে হেনস্তা করা হয়েছে। জেলে ভরা হয়েছে, নারীদেরকেও ক্ষমা করা হয়নি। এদের রুচি কত নিম্নস্তরের ছিল এখান থেকে উপলব্ধি করা যায়।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সেই শ্বাসরুদ্ধকর বন্দিদশার অবস্থা থেকে জাতি মুক্তির জন্য যারা নিজেদের পবিত্র জীবনটি বিলিয়ে দিয়ে আমাদেরকে এমন একটি পরিবেশ করে দিলো আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আরও পড়ুন: শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে জামায়াত: ডা. শফিক
জামায়াত আমির বলেন, দেশ আমাদের সকলের। দেশের পাহাড়াদারির দায়িত্ব সকল নাগরিকের। এ কাজ কিছু লোক করে, আর কিছু লোক নাগরিকদের শান্তি কেড়ে নেওয়ার অপকর্মে লিপ্ত হয়। অপকর্মে যারা করে তারা এটাকে পেশা হিসেবে বিবেচনা করে। এক সময় তারা এটিকে অধিকারের মতো মনে করে। বাকী জনগণকে তারা তাদের প্রজা মনে করে। নিজেরা রাজা হয়ে বসেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অনুভব করেছে— দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াতের কিছু কর্তব্য আছে। আমারাও এই আন্দোলনে শরীক ছিলাম। এই আন্দোলনের মাধ্যমে গোটা জাতি যেমন মুক্তি পেয়েছে, এদেশের সবচেয়ে নির্যাতিত দল হিসেবে কৃতজ্ঞতাও আদায় করার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি। নিজেরদেরকে প্রশান্তি দিতে, সান্তনা দিতে। দোয়া করতে যাইনি দোয়া নিতে গিয়েছি। কারণ তারা বড়িই সৌভাগ্যবান। তারা তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে জাতির জন্য আল্লাহর কাছে উপহার দিয়েছে।
জামায়াত আমির বলেন, স্মারক প্রস্তুতে জনগণ স্বতঃস্ফুর্ত সহযোগিতা করেছে। স্মারকের কাজ পরিপূর্ণ করতে পারি নাই। প্রক্রিয়া চলমান। শহীদ পরিবার, আহতরা বিভিন্নভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এই সময়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে কিছু জিনিস নিয়ে অন্তত তাদের সামনে আসা দরকার। এজন্য অসমাপ্ত রেখেই স্মারকের প্রাথমিক পর্বটি প্রকাশ করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য পাঠক ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন জামায়াতপ্রধান।
যাদের নাম এখনো আসেনি তাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহায়তা আহ্বান জানান তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিলে অনলাইনের মাধ্যমে এই ইতিহাসকে বিশ্ববাসীর কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এবং পৃথিবীর প্রধান সকল ভাষায় স্মারক প্রকাশ করা হবে। যাতে বিশ্ববাসী আমাদের বীরদের সম্পর্কে জানতে পারে। কৃতিত্ব ও গৌরবগাঁথা তাদেরও যেন অনুপ্রাণিত করতে পারে।
তিনি বলেন, আবু সাঈদের শাহাদাত ছিল এই আন্দোলনের বিশাল একটি টার্নিং পয়েন্ট। নিভৃত পল্লীর ছেলে ছিল সে। তার আশেপাশে তার মতো শিক্ষিত আরেকজন সদস্য নাই। সেই ছেলেটাই দুনিয়ায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল। খোলা বন্দুকের সামনে বুক চিতিয়ে ডানা মেলে বলেছিল- বুকের ভিতর অনেক ঝড় বুক পেতেছি গুলি কর। তার পথ ধরে বাকী শহীদরা বলেছিল আবু সাঈদ আমার ভাই। আমরাও তার মতো শাহাদাতের সিঁড়িতে পা রাখতে চাই— এটাই হয়েছে।
রাজনৈতিক দল ও সকল অংশীজনের কাছে অনুরোধ রেখে জামায়াত আমির বলেন, তারা (শহীদরা) বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিল। একটি মানবিক সুন্দর বাংলাদেশ চেয়েছিল। দুর্নীতি-দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিল। এখন দায়িত্ব আমাদের ঘাড়ে। তাদের রক্তের দিকে একটু তাকান। জীবন দেওয়া সেই তরতাজা শিশু-কিশোর-যুবক ও নারী-পুরুষের দিকে তাকান। বিপ্লবের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অপকর্ম মেহেরবানি করে কেউ করবেন না। যদি করেন শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে, তাদের রক্তকে অপমান করা হবে। আর জীবিত শহীদ যারা— পঙ্গু হয়ে আছেন তারা ভীষণ কষ্ট পাবেন। তারা অভিশাপ দেবেন। মজলুম দেশবাসী অভিশাপ দেবে। সুতরাং, সকল অংশীজনের কাছে আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাব, এমন কোনো কাজে আমরা জড়াবো না, যে কাজ করলে সকলের অভিশাপ আমাদের উপরে পড়বে।
আরও পড়ুন: ধর্ম নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হবে: জামায়াত আমির
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, যে কাজটিতে জামায়াত হাত দিয়েছে, এটি জামায়াতের একার সম্পত্তি নয়— এটি জাতীয় সম্পত্তি। এটা একার দায়িত্বও নয়, সকলের দায়িত্ব। সরকার ও আরও যারা অংশীজন আছেন, তাদেরও দায়িত্ব। আমরা এই কাজের কোনো ক্রেডিট (কৃতিত্ব) নিতে চাই না। আমরা শুধু নৈতিক দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের চেয়ে আরও সুন্দর করে, আরও নিখুঁতভাবে করার জন্য আরও সংস্থা, সংগঠন ও অংশীজন এগিয়ে আসুক। তাহলেই আমাদের এই ভূমিকা নেওয়াটা সার্থক হবে। সেক্ষেত্রে জামায়াত সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলেও জানান জামায়াত আমির।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পররওয়ার।
এতে আরও বক্তব্য দেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক ও কবি আব্দুল হাই শিকদার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম, জাগপার সহসভাপতি প্রকৌশলী রাশেদ প্রধান, ১২ দলের মুখপাত্র সেলিম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: এক পরিবারের হাতে কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদ পয়দা হয়েছিল: জামায়াত সেক্রেটারি
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জুলাই বিপ্লবে শহীদ পরিবারেরর সদস্য, দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন ও সাইফুল ইসলাম খান মিলন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম।
৩০২ দিন আগে
বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট অনলাইনে সত্যায়িত করার উপায়
বিদেশে উচ্চশিক্ষার আবেদন কিংবা শিক্ষাগ্রহণের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বিভিন্ন সনদপত্রের সত্যায়নকে সহজ করতে শুরু হয়েছে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি। এখন সনদ বা একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলোর সত্যায়নের জন্য আর যেতে হবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে সরকারের এই অনলাইন পরিষেবা। চলুন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়াটি দেখে নেওয়া যাক।
বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার অনলাইন পদ্ধতি
.
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের জন্য শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র (ন্যাশনাল আইডি বা এনআইডি) অথবা অনলাইনে তালিকাভূক্ত জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগবে।
পুরো প্রক্রিয়াটি যেহেতু অনলাইন কেন্দ্রিক, সেহেতু আপলোডের জন্য কাগজগুলোর সফট কপি দরকার হবে। তাই আগে থেকেই নথিগুলো স্ক্যান করে প্রস্তুত করে রাখতে হবে। স্ক্যান করা ফাইলগুলো অবশ্যই জেপিইজি, জেপিজি, বা পিএনজি ফরম্যাটে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করতে হবে। ফাইলের সাইজ অবশ্যই ১ এমবি (মেগাবাইট)-এর মধ্যে হতে হবে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
ধাপে ধাপে অনলাইনে শিক্ষাগত সার্টিফিকেট সত্যায়ন প্রক্রিয়া
.
মাইগভ সাইটে নিবন্ধন
প্রথমেই প্রবেশ করতে হবে মাইগভ (www.mygov.bd) প্ল্যাটফর্মে। অতঃপর সাইটটিতে একটি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নাম ও মোবাইল নাম্বার বা ইমেইল অ্যাড্রেস দিতে হবে। তারপর একটি পাসওয়ার্ড সেট করার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে প্রাথমিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া।
প্রোফাইল যাচাইকরণ
অ্যাকাউন্ট খোলার পর সাইটটিতে ব্যবহারকারীর জন্য তৈরি হবে একটি স্বতন্ত্র প্রোফাইল। এটি তাৎক্ষণিকভাবে এনআইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার কিংবা জন্ম সাল দিয়ে যাচাই করে নিতে হবে। একটি এনআইডি দিয়ে শুধুমাত্র একটি মাইগভ অ্যাকাউন্ট যাচাই করা যাবে।
সুনির্দিষ্ট আবেদন অনুসন্ধান
মাইগভ হোমপেজে প্রদর্শিত সেবাগুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ‘বিদেশগামী নাগরিকদের সার্টিফিকেট সত্যায়ন’। এখানে ক্লিক করলে নতুন পেজে বিদেশ গমনের জন্য প্রাসঙ্গিক সমস্ত নথিপত্র সত্যায়নের পৃথক পৃথক আবেদন অপশন আসবে। এগুলোর মধ্য থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দিষ্ট বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যে সত্যায়নগুলো চাওয়া হয়েছে সেগুলো খুঁজে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুন: চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
এছাড়া সুনির্দিষ্ট নথির জন্য হোমপেজের সার্চ বক্সে তা লিখেও সার্চ করা যায়। এতে প্রদর্শিত অপশনগুলোর মধ্যে সবার উপরে থাকবে কাঙ্ক্ষিত আবেদনটি। এই অনুসন্ধানটি এমনকি ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমেও সম্পন্ন করা যায়।
আবেদন পদ্ধতি
প্রত্যেকটি আবেদন অপশনের ভেতরে সংশ্লিষ্ট আবেদন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলি এক নজরে লিপিবদ্ধ করা আছে। যেমন- কি কি কাগজপত্র লাগবে, আপলোডের নিয়ম, আবেদন ফি কত, অনলাইন আবেদন ফরম কীভাবে পূরণ করতে হবে, এবং প্রক্রিয়াকরণে কেমন সময় লাগবে ইত্যাদি।
নথিপত্রের ধরণ অনুযায়ী স্বভাবতই এই তথ্যাদি ভিন্ন ভিন্ন হবে। বিশেষ করে প্রক্রিয়াকরণের সময় সবগুলোর নথির ক্ষেত্রে এক নয়। এছাড়া কোনো কোনো সেবা বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে, আবার কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে রয়েছে নির্দিষ্ট আবেদন ফি। এই ফি পরিশোধের জন্য রয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং, কার্ড, এবং মোবাইল পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম।
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
আবেদন ফরম পূরণের সময় লাল তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করা আবশ্যক। বাকি ঘরগুলো খালি রেখেও ফর্ম পূরণ সম্পন্ন করা যাবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্লাস (+) বাটনে ক্লিক করে একাধিক পৃষ্ঠা বা ফাইল সংযোজনের অপশন পাওয়া যাবে।
পুরো আবেদন একবারে পূরণ করে সাবমিট করতে হবে- এমন কোনো বাধ্য-বাধকতা নেই। আংশিক পূরণ করে তা পরবর্তীতে পূরণ করার জন্য ড্রাফট করে রাখা যেতে পারে। পরে মোবাইল নাম্বার বা ইমেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ‘সেবা ব্যবস্থাপনা’ অপশন থেকে ড্রাফট আবেদন পুনরায় শুরু করা যাবে।
প্রাসঙ্গিক কাগজগুলো আপলোড
সেবা গ্রহীতা তার সুনির্দিষ্ট নথির সত্যায়নের জন্য প্রাসঙ্গিক নথিপত্র নিজ অ্যাকাউন্টে আপলোড করে রাখতে পারবেন। সংযুক্তিগুলো সম্পূর্ণরূপে আপলোড না হওয়া পর্যন্ত পরের ধাপে যাওয়া যাবে না।
আরো পড়ুন: ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পৃথক পৃথক আবেদনের সময় নথি আপলোড না করে অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের পরপরই একে একে সমস্ত নথি আপলোড করে রাখা যেতে পারে। পরবর্তীতে আলাদা আবেদন দাখিলের সময় এগুলোর মধ্যে থেকে প্রাসঙ্গিক নথিগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।
আবেদনের আপডেট ট্র্যাকিং
চূড়ান্তভাবে আবেদন জমা দেওয়ার পর প্রতিটি আবেদনের জন্য একটি স্বতন্ত্র ট্রাকিং নাম্বার দেন। এই নাম্বার ব্যবহার করে পরবর্তীতে ‘সেবা ব্যবস্থাপনা’ অপশন থেকে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে জানা যাবে। এই অগ্রগতিটি প্রত্যেক সেবা গ্রহীতা তার ব্যক্তিগত ড্যাশবোর্ড থেকে দেখতে পারবেন।
সত্যায়িত নথি প্রাপ্তি
নির্দিষ্ট কার্যদিবস শেষে সফলভাবে সত্যায়িত নথিটি ড্যাশবোর্ডে প্রদর্শিত হবে। আর এর সঙ্গে সঙ্গেই সেবা গ্রহীতা তা ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
পরিশিষ্ট
বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়িত করার এই অনলাইন পরিষেবা নথি সত্যায়ন ব্যবস্থাকে করেছে হয়রানিমুক্ত এবং দ্রুততর। মাইগভ সাইটে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য স্বতন্ত্র প্রোফাইলের কারণে আবেদনপত্রসহ যাবতীয় কাগপত্র সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কার্যদিবসের মধ্যে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য রয়েছে ট্র্যাকিংয়ের সুবিধা। যাবতীয় প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যে প্রথমেই প্রোফাইল যাচাই করে নেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, একটি এনআইডি দিয়ে কেবলমাত্র একটি একাউন্ট যাচাই করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে
৩৫২ দিন আগে
শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত 'পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদে পরিপূর্ণ পার্বত্য জেলাগুলো বাংলাদেশের সবচাইতে উন্নত অঞ্চল হতে পারত। কিন্তু সবচেয়ে পেছনে পড়ে আছে। এটা হওয়ার কথা না। আপনাদের ফসল, ফল-ফলাদি, ঐতিহ্যবাহী পণ্য দিয়ে অর্থনীতিতে আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা। পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম, সেজন্য যোগাযোগ করা কঠিন হয়। আর এ কারণেই সেখানে প্রযুক্তির প্রসার দরকার। প্রযুক্তি দিয়ে এই দুরত্ব জয় করা যাবে।’
আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করবে নয়া দিল্লি: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
নারী ফুটবল টিমে পার্বত্য জেলা থেকে আসা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। আপনাদের এলাকার মেয়েরা কী দুর্দান্ত খেলল! কীভাবে বলবেন পিছিয়ে আছে? যারা আপনাদের এলাকা থেকে এসেছে তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কী কঠিন পরিস্থিতি! কত কষ্ট করে পাহাড় মাড়িয়ে বাড়িতে পৌঁছাতে হয়! বাবা মা ঢাকায় আসলে কত কষ্ট করে তাদের আসতে হয়। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিন্তু তারা বিশ্বজয় করে এসেছে।’
পার্বত্য এলাকার তরুণরা যেন বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠে এ আশাবাদ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বজয় এনে দিয়েছে। তরুণদের শুধু বাংলাদেশের নাগরিক না, বিশ্ব নাগরিক হতে হবে। দুর্গম এলাকা বলে পিছিয়ে থাকলে হবে না। সীমাবদ্ধতা থাকবে, কিন্তু মনের সীমারেখাকে বাড়িয়ে দিতে হবে। সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে নিজ কৃতিত্ব দিয়ে পৌঁছে যেতে হবে।’
জানুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসবে পার্বত্য অঞ্চলের তরুণদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের শিশুদের, তরুণদের এ উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দিন। স্থানীয় খেলা হোক, রচনা প্রতিযোগিতা, গান-নাচ তারা যা পারে, যা চায় তা নিয়ে যেন অংশ নেয়। এটা সবার উৎসব। উৎসবটি বৈচিত্র্যময় হোক। সরকারি নির্দেশ তাই অংশ নেবে এরকম না। তাদেরকে আপনারা উৎসাহ দিন, যেন নিজ থেকেই তারা উদ্যমী হয়ে এ উৎসবে অংশ নেয়।’
পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ও সঠিক পদ্ধতি, প্রশিক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক কঠিন সংকটে আছে। আপনাদের অঞ্চলে এটা আরও বেশি কঠিন। শিক্ষকদের কষ্ট হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্ট হয়। অনিয়মের পরিমাণ সারা বাংলাদেশে আছে। আপনাদের অঞ্চলে আরও বেশি করে আছে। আপনাদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগী হতে হবে। আমরাও চেষ্টা করব রাষ্ট্রীয় দিক থেকে কীভাবে কী করা যায়। পার্বত্য জেলার তরুণরা দুর্গম অঞ্চলে আছে বলে বড় শহর থেকে লেখাপড়ায় পিছিয়ে থাকবে সেটা হতে দেওয়া যাবে না। লেখাপড়ায় তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের রূপান্তরে ইইউ'র সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
৩৫৮ দিন আগে
লিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ভর্তি, ভিসা, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ নানাবিধ সুবিধা
বিদেশে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানোন্নয়নও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়াশোনার উদ্দেশ্যে এই দীর্ঘ যাত্রায় সঞ্চিত হয় অমূল্য অভিজ্ঞতা, যেখানে একজন শিক্ষার্থীর সার্বিকভাবেই উন্নয়ন সাধিত হয়। বিশেষত নতুন শিক্ষাব্যবস্থা এবং বহুজাতি সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা এক বিরাট অর্জন। সেই সঙ্গে স্থানীয় নীতিমালা ও আর্থিক দিকগুলো ভারসাম্য দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর স্বনির্ভরতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যায়। এই সমুদয় প্রচেষ্টাকে আরও সহজ করে তোলে সেই অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশটির সাশ্রয়ী অবস্থান। এই বিবেচনায় ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অনেকটা এগিয়ে লিথুয়ানিয়া। জীবনধারণ ও শিক্ষাসেবা খরচ কম হলেও তাতে মানের কোনো ঘাটতি নেই। চলুন, লিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা লাভের প্রয়োজনীয় খরচ, ভর্তি, ভিসা, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ নানা দিকগুলো সম্বন্ধে ধারণা নেওয়া যাক।
লিথুয়ানিয়ায় কেন পড়তে যাবেন
শিক্ষাক্ষেত্রে ইইউয়ের (ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন) সদস্য রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়ার মূল আকর্ষণ হলো দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশ্বমানের শিক্ষাসেবা। এগুলোতে ইংরেজিতে পড়াশোনা করা প্রোগ্রামের সংখ্যা ৩৫০ টিরও বেশি, যার সবগুলোই ইউরোপসহ গোটা বিশ্বে স্বীকৃত।
সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিল্নিয়াস ইউনিভার্সিটি, কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-এ যার অবস্থান ৪৭৩। এডি সায়েন্টিফিক ইন্ডেক্স বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গোটা ইউরোপে ৪৮৪ এবং বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ২১৭-তম অবস্থানে রেখেছে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে লিথুয়ানিয়া গমনের হার ৭১ দশমিক ৯১ শতাংশ। পরিসংখ্যানটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিকট লিথুয়ানিয়ার ক্রমশ গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির প্রতি ইঙ্গিত দিচ্ছে।
উপরন্তু, দেশটির সমৃদ্ধ চাকরির বাজারের একটি বিরাট অংশ হচ্ছে তরুণ এবং সদ্য স্নাতক পাশ করা শিক্ষার্থী। এরা শিক্ষা, ক্যাটারিং, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক পরিষেবার মতো সেক্টরগুলোতে সৃজনশীল ভূমিকা রাখার সুযোগ পাচ্ছে। এতে করে দেশটি শুধুমাত্র অধ্যয়নের জন্যই নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মজীবন গড়ার জন্যও আদর্শ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
লিথুয়ানিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনপ্রিয় কোর্সগুলো
ইউরোপ জুড়ে স্বনামধন্য লিথুয়ানিয়ার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
• ভিলনিয়স ইউনিভার্সিটি
• কওনাস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি
• ভিল্নিয়স গ্যাডিমিনাস টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
• ভিতওতাস ম্যাগ্নাস ইউনিভার্সিটি
• মিকলাস রমেরিস ইউনিভার্সিটি
• লিথুয়ানিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সায়েন্সেস
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি বিষয়:
• মেডিসিন
• অ্যাকাউন্টিং এবং অডিট
• ফ্যাশন ইঞ্জিনিয়ারিং
• স্থাপত্য
• ব্যবসা এবং জনপ্রশাসন
• আইন
• পারফর্মিং আর্টস
• প্রকৌশল বিজ্ঞান
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
লিথুয়ানিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন পদ্ধতি
বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত দুটি ইন্টেকে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদন করতে পারে। প্রথম ও অ্যাডমিশন পিক টাইম হলো সেপ্টেম্বর মাস যেটি অটাম ইন্টেক হিসেবে পরিচিত। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মৌসুমে ভর্তি কম হলেও অনেক শিক্ষার্থীদের জন্যই সময়টি অটামের উপযুক্ত বিকল্প হিসেবে কাজ করে। আবেদনের সময়সীমা এবং প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো স্বতন্ত্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির আবেদনগুলো যাচাই করে, যা সম্পন্ন করতে এক মাস বা তার বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
• ইউনির্ভাসিটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে পূরণকৃত আবেদন
• শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (মার্কশীট সহ): লিথুয়ানিয়ান সেন্টার ফর কোয়ালিটি অ্যাসেস্মেন্ট ইন হায়ার এডুকেশন কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে
• কারিকুলাম ভিটা
• উচ্চশিক্ষার জন্য লিথুয়ানিয়াকে বেছে নেওয়ার কারণ উল্লেখপূর্বক কয়েক কপি মোটিভেশনাল লেটার
• বৈধ পাসপোর্ট
• সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
• আবেদন ও অধ্যয়ন ফি পরিশোধের রশিদ
• জীবনযাত্রার খরচ বহন করার জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের প্রমাণ স্বরূপ ব্যাংক স্টেটমেন্ট
• ইংরেজি দক্ষতার শংসাপত্র: ন্যূনতম আইইএলটিএস স্কোর ৬ দশমিক ৫ বা টোফেল স্কোর ৮১
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
লিথুয়ানিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
পড়াশোনার জন্য এই ইউরোপীয়ান দেশটিতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ন্যাশনাল ডি-টাইপ ভিসার আবেদন করতে হবে। সাধারণত ১৫ দিনের মধ্যে জারি করা এই ভিসায় কমপক্ষে ৯১ দিন থেকে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত লিথুয়ানিয়ায় থাকার অনুমতি পাওয়া যায়। এর জন্য লিথুয়ানিয়ান মাইগ্রেশন ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইজিআরআইএস) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
১ বছরেরও দীর্ঘ সময় অধ্যয়নের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে দেশটিতে পৌঁছে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। এই পারমিট দেশটির মাইগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে জারি করা হয়।
ন্যাশনাল ভিসা ফি ১৪০ ইউরো, যা প্রায় ১৮ হাজার ৪০ টাকার (১ ইউরো = ১২৮ দশমিক ৮৬ বাংলাদেশি টাকা) সমান।
বাংলাদেশের লিথুয়ানিয়া কনস্যুলেটে সাধারণত কোনো ধরণের ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় না। এর জন্য প্রার্থীদের সাধারণত ভারতে যেতে হয়। এছাড়াও বিকল্পভাবে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর থেকেও লিথুয়ানিয়ার ভিসা করা যায়।
আরো পড়ুন: জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
৩৯০ দিন আগে
রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্কলারশিপসহ ও আনুষঙ্গিক খরচ
উচ্চতর স্তরে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ব্যবহারিক দক্ষতার সমন্বিত অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি থেকে শুরু করে কলা ও মানবিক প্রতিটি বিষয়ে উন্নত ডিগ্রি লাভের সঙ্গে যুগপৎভাবে সমৃদ্ধ হয় ব্যক্তি ও পেশা জীবন। বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর মতো রাশিয়াও এই অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি রয়েছে প্রত্যেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীদের কাছে। শুধু সংখ্যার দিক থেকে নয়, রুশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের বিষয়গুলো বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রেও অনন্য। চলুন, রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য অধ্যয়ন ও স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ সামগ্রিক সুবিধাগুলো জেনে নেওয়া যাক।
রাশিয়ায় কেন পড়তে যাবেন
বিশ্বের প্রথম সারির শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাশিয়ান শিক্ষা পাঠ্যক্রম। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত ডিগ্রিগুলো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ বহুজাতি কোম্পানিগুলোতে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা ইন্টার্ন ও স্নাতকদের ব্যাপকভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
কিউএস বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ শতকে (৮৭) থাকা রুশ বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম লোমোনোসভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি।
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের বিষয় সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনি যথেষ্ট বৈচিত্র্যও রয়েছে অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে। সব মিলিয়ে ৪০০টিরও বেশি অধ্যয়নের ক্ষেত্রে ৬৫০ টিরও বেশি বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ফেলোশিপ করার ব্যবস্থা রয়েছে দেশটিতে।
রাশিয়া ঐতিহাসিকভাবে ব্যালে নৃত্য, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, চিত্রকলা এবং সাহিত্যের মতো শিল্পে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য সুপরিচিত। তাই যারা সৃজনশীল বিষয়ে ক্যারিয়ার গঠনে ইচ্ছুক তাদের জন্য রাশিয়া উত্তম গন্তব্য।
আরো পড়ুন: জার্মানির আউসবিল্ডুং: যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি
রাশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কোর্সের তালিকা
.
বিশ্ব জুড়ে বহুল সমাদৃত শীর্ষ ১০টি রুশ বিশ্ববিদ্যালয়:
• লোমোনোসভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি
• সেন্ট পিটার্সবার্গ ইউনিভার্সিটি
• বাউম্যান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
• পিপল্স ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়া
• কাজান ফেডারেল ইউনিভার্সিটি
• হায়ার স্কুল অফ ইকোনমিক্স
• মস্কো ইনস্টিটিউট অফ ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি
• টমস্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি
• নভোসিবিরস্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি
• ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার ইউনিভার্সিটি এমইপিএইচএল (মস্কো ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্স ইনস্টিটিউট)
আরো পড়ুন: জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
রাশিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নের জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি বিষয়:
• শিল্প, সাহিত্য, নৃত্য, সঙ্গীত এবং চিত্রকলা
• বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
• বিজনেস স্টাডিজ
• মেডিকেল সায়েন্স
• মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞান
• ইতিহাস
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
রাশিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
রুশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তির আবেদন গ্রহণের প্রধান মৌসুম হচ্ছে ফল সেমিস্টার। এ ক্ষেত্রে আবেদনের সময় থাকে আগের বছরের ডিসেম্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত। ভর্তির যাবতীয় কার্যক্রম শেষে ক্লাস শুরু হয় সেপ্টেম্বরে।
কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাস তথা স্প্রিং সেমিস্টারেও ক্লাস শুরু করে থাকে। স্প্রিংয়ের জন্য আবেদনের সময়সীমা থাকে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত।
এই দুই মৌসুমের বাইরে রাশিয়ায় রোলিং ইন্টেকও রয়েছে, যেখানে সারা বছর ধরেই চলে কোর্সে নিবন্ধন। আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যাদের ভিসা প্রক্রিয়াকরণে বেশ কালক্ষেপণ হয়ে যায়, তাদের জন্য এই ইন্টেকটি যথেষ্ট উপকারে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের নিজস্ব অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন জমা নেয়। এর জন্য আবেদনকারীদের তাদের নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়। এই অ্যাকাউন্টেই দরকারি নথিপত্র আপলোডসহ আবেদন জমা করা যায়।
নথি যাচাইয়ের প্রথম ধাপে উতড়ে গেলে শিক্ষার্থীকে অনলাইন পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়। এই শেষ ধাপে কৃতকার্য হলেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ভর্তির নির্দেশনা দিয়ে প্রথম সেমিস্টারের ফি প্রদান করতে বলে। ফি পরিশোধের পরেই শিক্ষার্থীকে মনোনীত করা হয় ইনভাইটেশন বা অফার লেটারের জন্য। এই লেটারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ইস্যূ করে মূলত রাশিয়ান ফেডারেশনের ফেডারেল মাইগ্রেশন সার্ভিস।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• পাসপোর্ট (কমপক্ষে ২০ মাসের মেয়াদসম্পন্ন)
• সদ্য তোলা ছবি: (আকার- ৩ দশমিক ৫ x ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার)
• শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিপত্র: স্নাতকের জন্য উচ্চ বিদ্যালয়ের সনদ ও মার্কশীট; স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতকের প্রশংসাপত্র ও গ্রেডশীট
• মেডিকেল ডকুমেন্টস
• ভাষার দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর: আইইএলটিএস ৬ দশমিক ৫ বা টোফেল ৯২ (প্রোগ্রামের ওপর নির্ভর করে)
• স্টেটমেন্ট অফ পার্পাস
• সিভি ও মোটিভেশনাল লেটার
• পিএইচডি জন্য গবেষণা প্রস্তাব
• লেটার অফ রিকমেন্ডেশন (এলওআর)
যে নথিগুলোর ভাষা ইংরেজি নয় সেগুলো জাতীয়ভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ এবং নোটারাইজ করে নিতে হবে।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
রাশিয়ায় পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ
বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যয়নের বিষয় এবং প্রোগ্রামের স্তরের ভিত্তিতে পড়াশোনার খরচে যথেষ্ট তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। কিস্টোন অনুসারে, প্রতি বছর রাশিয়ায় স্নাতক ডিগ্রির জন্য সম্ভাব্য খরচ ২ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার রুবল। এটি ২ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৩ থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৭ টাকার সমতূল্য। মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য বার্ষিক বাজেট ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৫০ হাজার রুবল পর্যন্ত। বাজেটটি ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৭ থেকে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫৭ টাকার সমান। বার্ষিক খরচ ৭২ হাজার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার রুবল (৮৮ হাজার ৬৪৯ থেকে ৩ লাখ ৭ হাজার ৮১০ টাকা) স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য।
রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে জীবনযাত্রার খরচ ভিন্ন রকম। লিপস্কলার অনুসারে, প্রধান কয়েকটি শহরের মাসিক জীবনযাত্রার খরচ (বাড়ি ভাড়া ছাড়া) নিম্নে দেওয়া হলো:
• মস্কো: ৫৬ হাজার ৫০০ রুবল (৬৯ হাজার ৫৬৫ টাকা)
• কাজান: ৪৩ হাজার ৪০০ রুবল (৫৩ হাজার ৪৩৬ টাকা)
• সেন্ট পিটার্সবার্গ: ৫০ হাজার ১৪৮ রুবল (৬১ হাজার ৭৪৪ টাকা)
• নোভোসিবিরস্ক: ৪৪ হাজার ৩২২ রুবল (৫৪ হাজার ৫৭১ টাকা)
• কালিনিনগ্রাদ: ৪৩ হাজার ২৫৭ রুবল (৫৩ হাজার ২৬০ টাকা)
বাসস্থানের ক্ষেত্রে মস্কো অপেক্ষা কাজান বা ইয়েকাটেরিনবার্গের মতো ছোট শহরগুলোতে ভাড়া যথেষ্ঠ সাশ্রয়ী। উপরন্তু, ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের তুলনায় অধিক ব্যয়বহুল। ডর্মিটরিগুলোর ভাড়া মাসে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার রুবল (৬১৬ থেকে ৬ হাজার ১৫৬ টাকা) পর্যন্ত হতে পারে।
নাম্বিও ডাটাবেজ অনুসারে, শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১ বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া পড়তে পারে মাসে ২২ থেকে ৯৪ হাজার ৩৯ রুবল। পরিমাণটি ২৭ হাজার ৮৭ থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৪ টাকার সমতূল্য। সেখানে শহর থেকে একটু দূরে একই অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া ১৫ থেকে ৫৪ হাজার ৮৩০ রুবল (১৮ হাজার ৪৬৯ থেকে ৬৭ হাজার ৫০৯ টাকা)।
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
রাশিয়ায় স্কলারশিপের সুবিধা
দীর্ঘকালীন অধ্যয়নের ব্যয়ভার বহনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হচ্ছে রাশিয়ান সরকারি বৃত্তি। এর আওতায় নির্বাচিত প্রোগ্রামের পুরো সময়কালের জন্য ফ্রিতে পড়াশোনা করা যায়।
তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা ও গণিত অ্যাডভান্সমেন্ট ফাউন্ডেশন ‘বেসিস’ নামক বৃত্তিটি প্রদান করে থাকে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি। তবে অর্থায়ন হয়ে থাকে রাশিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে। এই তহবিলের পরিমাণ মাসে ২৫ থেকে ৬০ হাজার রুবল (৩০ হাজার ৭৮১ থেকে ৭৩ হাজার ৮৭৪ টাকা)।
টমস্ক পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার রুবল (৬১ হাজার ৫৬২ টাকা)।
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
জিইউভিএম থেকে ইস্যু করা পারমিট নিয়ে শিক্ষার্থীদেরা অধ্যয়নকালে খণ্ডকালীন চাকরি করতে পারে। তবে এর জন্য অবশ্যই পূর্ব নির্ধারিত অধ্যয়ন প্রোগ্রামে নিযুক্ত থাকতে হবে।
পারমিট অনুসারে আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার বাইরে প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ২০ ঘণ্ট কাজের অনুমতি পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণেই বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরগুলো ছাত্রদের জন্য বিভিন্ন ধরণের কাজের সুযোগ রাখে।
জীবনযাত্রার খরচের মতো কাজের ঘণ্টা প্রতি পারিশ্রমিকও শহর ভেদে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। লিপস্কলার অনুযায়ী রাশিয়ার জনপ্রিয় কয়েক খণ্ডকালীন চাকরির ঘণ্টা প্রতি গড় রেট নিম্নরূপ:
• ইংরেজি ভাষা শিক্ষক: ৮৫৭ থেকে ৪ হাজার ৪৩২ রুবল (১ হাজার ৫৫ থেকে ৫ হাজার ৪৫৭ টাকা)
• হসপিটালিটি স্টাফ: ৫০০ থেকে ১ হাজার রুবল (৬১৬ থেকে ১ হাজার ২৩১ টাকা)
• খুচরা বিক্রয় সহকারী: ৪৪৩ থেকে ১ হাজার রুবল (৫৪৫ থেকে ১ হাজার ২৩১ টাকা)
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
পরিশিষ্ট
রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধ্যয়নের বিষয়ের সঙ্গে বসবাসের শহর নির্বাচনকেও বিবেচনায় আনা উচিত। এই প্রত্যেকটি বিষয় সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলে পড়াশোনাসহ জীবনযাত্রার বাজেটের ওপর। অধ্যয়নকালে আর্থিক চাপকে অনেকটা কমিয়ে আনতে পারে স্কলারশিপ এবং খণ্ডকালীন চাকরি। শুধু তাই নয়, স্কলারশিপপ্রাপ্তি স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলতে পারে। সর্বোপরি, ভর্তির আবেদন থেকে শুরু করে রাশিয়া যাওয়া পর্যন্ত পুরো যাত্রাকে সুগম করতে কাগজপত্রে যথার্থতা ও সময়সীমা মেনে চলা জরুরি।
৪১২ দিন আগে
এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে
উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে চাইলে এইচএসসি পরবর্তী সময়টি সর্বাপেক্ষা উত্তম। দেশে স্নাতক করে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় কোর্স আউটলাইনসহ নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু স্নাতক স্তর থেকে অধ্যয়ন শুরু করা হলে পরবর্তী পর্যায়গুলোতে আর এই অসামঞ্জস্যতার আশঙ্কা থাকে না। তাই এইচএসসির পরপরই যাওয়া সম্ভব হলে দূর ভবিষ্যতে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলোতে প্রবেশ প্রক্রিয়া সহজতর হয়ে ওঠে। দীর্ঘ মেয়াদে এই সুফলের জন্য দেশে থাকা অবস্থাতেই কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। চলুন, এইচএসসির পরপরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে করণীয় সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
প্রবেশিকা পরীক্ষা
বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন একাডেমিক পর্যায়ের প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। এগুলোর ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হয়। তন্মধ্যে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য পরীক্ষাগুলো হলো এসএটি (স্কলাস্টিক অ্যাসেস্মেন্ট টেস্ট) এবং এসিটি (আমেরিকান কলেজ টেস্টিং)। এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর রিডিং, রাইটিং এবং গাণিতিক বিশ্লেষণের মত প্রাথমিক দক্ষতাগুলো যাচাই করা হয়ে থাকে। এসএটিতে যেখানে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ স্কোর তুলতে হয়, সেখানে শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির জন্য এসিটিতে ২৫ থেকে ৩০ স্কোর প্রয়োজন হয়। যুক্তরাজ্যের জন্য ইসিএএস (ইউনিভার্সিটি এ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশন সার্ভিস) ট্যারিফ বা এ-লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
এছাড়া বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পৃথক কিছু পরীক্ষার ফলাফলকে গুরুত্ব দেয়। যেমন- যুক্তরাজ্যে মেডিকেল সায়েন্সের জন্য বিএমএটি (বায়োমেডিক্যাল অ্যাডমিশন টেস্ট) অথবা ইউসিএটি (ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক্যাল অ্যাপটিটিউড টেস্ট) পরীক্ষা দিতে হয়।
আরো পড়ুন: ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
ভাষা দক্ষতার পরীক্ষা
আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইংরেজি ভাষায় পারদর্শিতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। এই আবশ্যকীয় যোগ্যতাটি যাচাইয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত বেশ কিছু পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন-
- আইইএলটিএস (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম)- টোফেল (টেস্ট অব ইংলিশ অ্যাস ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ)- পিটিই (পিয়ার্সন টেস্ট অব ইংলিশ)- ডুওলিঙ্গো
এগুলোর মধ্যে আইইএলটিএস ও টোফেল বহু বছর ধরে ইংরেজি ভাষাভাষীসহ অন্য ভাষার দেশগুলোতেও অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইইএলটিএস স্কোর সাধারণত ৬ থেকে ৭ দশমিক ৫ এর মধ্যে থাকতে হয়।
অপরদিকে, টোফেলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৮০ থেকে ১০০-এর মধ্যে স্কোর দেখাতে হয়। কিছু ইউরোপীয় দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এইচএসসির মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) বা পাঠদানের মাধ্যম ইংরেজি ভাষায় হলেই ভর্তি নিয়ে নেয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি মূলত শুধুমাত্র ইংলিশ মিডিয়াম ও ইংরেজি ভার্সন কলেজগুলোর জন্য প্রযোজ্য।
ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষার দেশগুলোতে অধ্যয়নের জন্য সেখানকার স্থানীয় ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আলাদা পরীক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন জার্মানির ক্ষেত্রে টেস্টডিএএফ (টেস্ট অব জার্মান অ্যাস এ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ) বা ডিএসএইচ (জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সামিনেশন ফর ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স) পাস করতে হয়। একইভাবে ফ্রান্সে গুরুত্ব দেওয়া হয় ডিএএলএফ (ডিপ্লোমা ইন অ্যাডভান্সড ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ) পরীক্ষার ফলাফলকে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসনের প্রয়োজনীয় নথি তৈরি
যে কোনো উদ্দেশ্যেই অভিবাসনের ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা। শিক্ষার জন্য বিদেশ গমনের জন্যও এমন কিছু দরকারি নথি রয়েছে, যেগুলো অভিবাসনকে উদ্দেশ্য করে তৈরি করতে হয়। প্রথমটি হচ্ছে স্টেটমেন্ট অব পার্পাস (এসওপি)। এখানে আবেদনকারীর একাডেমিক লক্ষ্য, দীর্ঘমেয়াদী ক্যারিয়ার পরিকল্পনা এবং নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা তার প্রোগ্রাম নির্বাচনের কারণগুলো উল্লেখ করতে হয়।
এরপরেই আসে লেটার অব রিকমেন্ডেশন (এলওআর)। এটি হচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর যোগ্যতার ব্যাপারে সুপারিশনামা। সাধারণত মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা এই সুপারিশ করে থাকেন। সঙ্গত কারণেই এই লেটারটি কয়েকটি তৈরি করে রাখতে হয়। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ থেকে ৩টি এলওআর সরবরাহের প্রয়োজন হয়।
এসওপি ও এলওআরের সঙ্গে একটি সিভি বা রেজুমি ও কভার লেটার বা পার্সোনাল স্টেটমেন্ট যুক্ত করা হলে আবেদনটি আরও শক্তিশালী হয়। সিভি বা রেজুমিতে শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে একাডেমিক ও একাডেমির বাইরের যাবতীয় অর্জনগুলো লিপিবদ্ধ থাকে। পার্সোনাল স্টেটমেন্টের আরও একটি নাম মোটিভেশনাল লেটার। এখানে অধ্যয়নের জন্য নির্বাচিত কোর্সটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীর আবেগে বিষয়টি পেশাগত কায়দায় ফুটিয়ে তুলতে হয়।
সর্বোপরি, এই নথিগুলো তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়, যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
বিগত সকল একাডেমিক নথি একত্রিত করা
উচ্চশিক্ষার ন্যূনতম যোগ্যতার প্রমাণ হলো বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদগুলো। তাই স্কুল ও কলেজ থেকে ইস্যুকৃত প্রতিটি কাগজ সংরক্ষণ করা জরুরি। বিশেষ করে সার্টিফিকেট, মার্কশিট প্রত্যেকটির প্রতিলিপিসহ মূল কপিগুলো একত্রে রাখতে হবে। অনুলিপিগুলো স্বীকৃত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সত্যায়িত করে রাখা উত্তম।
তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নথিগুলোর ভাষা যদি ইংরেজি না হয় তাহলে সেগুলো অনুবাদ করা। চীন, কোরিয়া, তুর্কি ও জার্মানির মতো ভিন্ন ভাষার দেশে অধ্যয়নের আবেদনের ক্ষেত্রেও শুধুমাত্র ইংরেজিতে অনুবাদই যথেষ্ট। তবে অনুদিত সংস্করণগুলো অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা নোটারি পাবলিকের মতো জাতীয়ভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রত্যয়িত করে নেওয়া উচিত।
একাডেমিক রেকর্ডের পাশাপাশি খেলাধুলা, সমাজকল্যাণমূলক বা শিল্পকলার কার্যক্রমগুলো থেকে প্রাপ্ত শংসাপত্রগুলোও সংকলন করা উচিত। এগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভর্তি প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখে।
আরো পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
স্বনির্ভরতার জন্য সহায়ক কিছু দক্ষতা অর্জন
ভিন্ন ভাষা ও জনগোষ্ঠীর দেশে আত্মনির্ভর হয়ে টিকে থাকার জন্য কিছু ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন অপরিহার্য। যেমন- বিদেশে নিজেদের খাবার তৈরি করে খাওয়া ও তা সংরক্ষণের জন্য রান্না করার ন্যূনতম মৌলিক জ্ঞান থাকা জরুরি। তবে নির্দিষ্ট কিছু প্রধান খাবারের রান্নার কোর্স করে নিলে তা আরও বেশি সহায়ক হতে পারে।
উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে ছাত্রজীবন থেকেই গাড়ি চালানো শেখা ও তার যথাযথ প্রয়োগের সংস্কৃতি রয়েছে। এই অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হলে দেশ থেকেই ড্রাইভিং শিখে যাওয়া উত্তম। তবে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠান খোঁজার সময় তারা প্রশিক্ষণটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে।
এছাড়া ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য বজায়ের স্বার্থে সাঁতার এবং প্রাথমিক চিকিৎসার দক্ষতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
স্নাতক স্কলারশিপগুলোতে আবেদন
বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদ্বেগ থাকে ফান্ডিং বা অর্থায়ন নিয়ে। এই সমস্যা নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে স্কলারশিপগুলো। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা ধরনের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তৃতীয় বিশ্বের মেধাবীদের জন্য বৃত্তি ও ভাতার ব্যবস্থা করে। এই অর্থ সহায়তায় পড়াশোনার খরচসহ জীবনযাত্রার ব্যয়ভারও অন্তর্ভুক্ত থাকে। স্কলারশিপগুলোর পূর্বশর্ত হিসেবে শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভাষা দক্ষতা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক প্রভাব রাখে। তাই দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্কলারশিপগুলো নিয়ে গবেষণার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হবে। কয়েকটি দরকারি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের তালিকা নিম্নরূপ:
ইউকে ও ইউরোপীয়ান স্কলারশিপের জন্য-https://study-uk.britishcouncil.org/scholarships-funding/https://www.idp.com/জার্মান স্কলারশিপের জন্য-https://www.daad.de/en/studying-in-germany/scholarships/daad-scholarships/যুক্তরাষ্ট্রের স্কলারশিপের জন্য-https://bigfuture.collegeboard.org/pay-for-college/scholarship-searchপৃথিবীব্যাপী বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপের জন্য-https://www.fastweb.com/https://www.scholars4dev.com/
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
সারসংক্ষেপ
এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হলো ভাষাগত দক্ষতা বাড়ানো। তারপর নির্দিষ্ট দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে সঠিক প্রবেশিকা বা যোগ্যতার পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে হবে। এই দক্ষতাগুলো পরবর্তীতে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। উপরন্তু, বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও মার্কশিট যোগাড় এবং স্টেটমেন্ট অব পার্পাস, সিভি ও পার্সোনাল স্টেটমেন্ট তৈরি করে ফেলতে হবে। সর্বোপরি, রান্না করা ও গাড়ি চালানোর মতো ব্যবহারিক কাজগুলোতে পারদর্শিতা অর্জন করা হলে তা ভিন্ন দেশে স্বনির্ভর জীবনধারার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
৪১৫ দিন আগে
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অপরিকল্পিত: শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অপরিকল্পিত। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে কিন্তু সে তুলনায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়নি। এ কারণে দেশে শিক্ষিত বেকার চরম আকার ধারণ করেছে।
শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান শুধু শিক্ষকদের সম্মান দেওয়ার জন্য। আমি শিক্ষকদের শ্রদ্ধা জানাই। আমি আগ্রহ করে সেচ্ছায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছি। আমাকে কেউ চাপিয়ে দেয়নি। আমি সারা জীবন শিক্ষকতা করেছি তাই ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।’
আরও পড়ুন: যেতে না পারা প্রায় ১৮০০০ কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠানোর বিষয়ে কাজ করছে সরকার: উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘স্কুল-কলেজের অনেক বড় বড় দাবি দাওয়া আমার কাছে এসেছে। আমি তাৎক্ষণিক এগুলোর সমাধান দিতে পারিনি বলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। নিজেকে ছোট মনে হয়। এদেশের শিক্ষকরা বিশেষ করে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের শিক্ষকরা আমাদের সমতুল্য যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও উপেক্ষিত। স্বল্প আয় দিয়ে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকাই শিক্ষকদের জন্য দুঃসাধ্য। এপরিস্থিতিতে শিক্ষকতা পেশায় মনোযোগ দেবেন কী করে?’
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বেসরকারি স্কুল ও কলেজের পরিচালনা বোর্ডের অপরাজনীতির ফলে নিয়োগ বাণিজ্যের কথা শোনা যেত। সব নিয়োগ ব্যবস্থায় নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কেন্দ্রীয়ভাবে যোগ্যতা নির্ধারণ করে পদায়নের কারণে শিক্ষকরা পরিবার ছেড়ে দূর-দূরান্তে গিয়ে চাকরি করছে। তারা নিদারুণ দুর্দশা নিয়ে জীবন যাপন করে। মর্মান্তিক এ বিষয়গুলো পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব নয়। আংশিক সমাধানের চিন্তা করা যায়।’
তিনি বলেন, শিক্ষকদের জবাবদিহির ও দায়িত্বজ্ঞানের বিষয় রয়েছে। শিক্ষকের কিছু নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে যা নিজ থেকে করা যায়। ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমতো স্কুলে এল কি না? তাদের কোনো সমস্যা রয়েছে কি না? বিষয়গুলো শিক্ষকদের দেখা। ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষকদের দরদ দিয়ে সম্পর্ক স্থাপন করলে অনেক কিছুই সহজ ও সুন্দর হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা সরকারি রাজস্ব আয় আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিন্মতম পর্যায়ে রয়েছে। যে কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা যথাযথভাবে হচ্ছে না। সরকারি ব্যয়ে দুর্নীতি হ্রাস করতে পারলে এসব ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ানো সম্ভব। এটা একদিনে হবে না কিন্তু আমরা শুরু করেছি।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ শুরু আজ
শিক্ষা উপদেষ্ট আরও বলেন, ‘আমরা স্কুলের শিক্ষাক্রম নিয়ে দুরবস্থায় পড়েছি। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও নতুন দেশ গড়ার বিষয় স্কুলের পাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্তিকরণ অবশ্যই দরকার। কিন্তু স্কুলের ছেলে মেয়েদের হাতে আগামী বছরের শুরুতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দিতে হবে, তাই সংক্ষিপ্ত সময়ে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন করার কারণে আমাদের এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আগামীতে করা হবে।’
তিন বলেন, আমাদের একটি সুপরিকল্পিত জাতীয় শিক্ষানীতি থাকা দরকার। আমাদের সময় সংক্ষিপ্ত পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশা রাখছি। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও শিক্ষকদের একটি আচরণ বিধি থাকা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় তাদের জ্ঞান ও বিবেচনা দিয়ে নিজস্ব আচরণ বিধি তৈরি করতে পারেন।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফয়েজ, ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের প্রধান ড. সুসেন ভাইজ।
আরও পড়ুন: ঋণ দেওয়ার সময় কঠোর যাচাই-বাছাই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার আহ্বান অর্থ উপদেষ্টার
৪২৫ দিন আগে
ইতালিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
বিদেশে উচ্চশিক্ষার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ভিন্ন সংস্কৃতি ও স্বতন্ত্র আচার-প্রথার জনগোষ্ঠী। সেখানে সব থেকে বেশি বৈচিত্র্য দেখা যায় ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোতে। যেখানে সহপাঠী বা সহকর্মীদের মধ্যে ভাষা থেকে শুরু করে বেশভূষায় থাকে যথেষ্ট ভিন্নতা। শিল্প চর্চার সূত্রে এক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জাতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইতালীয়রা। মৌলিকতা ও সৃজনশীলতার সন্নিবেশে শিক্ষালব্ধ পারদর্শিতাকে তারা নিয়ে গেছে শিল্পের পর্যায়ে। আর এ কারণেই উচ্চশিক্ষার জন্য এই অপূর্ব দেশটিকে বেছে নেয় শিল্পানুরাগী শিক্ষার্থীরা। চলুন, ইউরোপীয় ইতালিতে পড়াশোনার জন্য আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা এবং স্কলারশিপ নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ইতালিতে কেন পড়তে যাবেন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সদস্য রাষ্ট্রটিতে রয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম সব বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের বিবর্তনে পুরাতন শিক্ষা ব্যবস্থার ক্রমাগত উন্নয়নের পটভূমিতে এগুলোতে জমা হয়েছে শত বছরের ঐতিহ্য। বর্তমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কারিকুলাম এবং স্কলারদের অভিজাত ফোরামগুলোতে সুপরিচিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। তন্মধ্যে কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-এ থাকা বিদ্যাপীঠগুলো হলো পলিটেক্নিকো ডি মিলানো (১২৩), স্যাপিয়েঞ্জা ইউনিভার্সিটি অব রোম (১৩৪) ও ইউনিভার্সিটি অব বোলোগনা (১৫৪)।
গ্লোবাল পিইও (প্রফেশনাল ইম্প্লয়ার অর্গানাইজেশন) সার্ভিসেস ও ফোর্বসের মতে, বর্তমানে ইউরোপ অর্থনীতিতে তৃতীয় এবং গোটা বিশ্বে নবম বৃহত্তম দেশ ইতালি। সেই সূত্রে, ইন্টার্নশিপ, অন-দ্যা-জব ট্রেনিং এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্টের মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
প্রধান ভাষা ইতালিয়ান হলেও ইংরেজি ভাষার প্রতি গুরুত্ব থাকায় প্রতি বছরই ভিড় বাড়ছে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের। বিশেষ করে মিলান, রোম, এবং তুরিন ইউরোপের প্রধান শিক্ষার্থী-বান্ধব শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম।
শিক্ষার পাশাপাশি শেনজেনভুক্ত দেশটির যে ক্ষেত্রটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ থাকে, তা হলো এর পর্যটন। ইউএনডব্লিউটিও (ইউনাইটেড ন্যাশন্স ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন) অনুসারে, বিশ্ব পর্যটন র্যাঙ্কিংয়ে এই ইউরোপীয় দেশটির অবস্থান ৪র্থ। এখন পর্যন্ত ইতালিতেই রয়েছে সর্বাধিক সংখ্যক ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট (৫৯)। এগুলোর মধ্যে ৫৩টি সাংস্কৃতিকভাবে স্বীকৃত ও ৬টিতে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের বিশেষত্ব।
আরো পড়ুন: জাপানে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
ইতালির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনপ্রিয় কোর্সের তালিকা
ইউরোপজুড়ে বহুল সমাদৃত ইতালির শীর্ষ ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
· পলিটেক্নিকো ডি মিলানো
· স্যাপিয়েঞ্জা ইউনিভার্সিটি অব রোম
· ইউনিভার্সিটি অব বোলোগনা
· ইউনিভার্সিটি অব পাদুয়া
· পলিটেকনিকো ডি টরিনো
· ইউনিভার্সিটি অব মিলান
· ইউনিভার্সিটি অব নেপল্স ফেদেরিকো-২
· ইউনিভার্সিটি অব পিসা
· ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরেন্স
· ইউনিভার্সিটি অব তুরিন
ইতালির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নের জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি বিষয়
চারুকলা, ফ্যাশন ডিজাইন, ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক, হস্পিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম, মেডিসিন, কম্পিউটার সায়েন্স, অর্থনীতি, ফাইন্যান্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইত্যাদি
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
ইতালির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
অন্যান্য শেনজেন দেশগুলোর মতো ইতালিও শিক্ষা ক্ষেত্রে দুই-সেমিস্টার পদ্ধতি মেনে চলে। প্রথম ভর্তি মৌসুমটি পরিচিত ফল ইন্টেক নামে, যার আবেদন কার্যক্রম শুরু হয় নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে। এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে যাবতীয় আবেদন শেষে কোর্স আরম্ভ হয় সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে। এই সময়টিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সর্বাধিক সংখ্যক কোর্সে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়।
স্প্রিং নামের অপর ইন্টেকটিতে আবেদন নেওয়া হয় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এগুলোর সময়সীমা থাকে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। অতঃপর ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যেই ভর্তি শেষ করে কোর্স শুরু করে দেওয়া হয়।
এখানে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পৃথকভাবে তাদের নিজস্ব ওয়েব পোর্টালে আবেদন করতে হয়। আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচসহ সুনির্দিষ্ট ডেডলাইনগুলো ওয়েবসাইটে বিস্তারিত উল্লেখ থাকে। এখানে খেয়াল রাখা উচিত যে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র একটি বিষয়ে আবেদন জমা দেওয়া যায়।
প্রি-ইনরোলমেন্ট
ইতালির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির একটি প্রধান বিষয় হলো প্রি-ইনরোলমেন্ট। এটি যে কোনো কোর্সের জন্য আবেদন করার পূর্বশর্ত। এর জন্য শিক্ষার্থীকে ইউনিভার্সইটালি পোর্টালে (https://universitaly-private.cineca.it/index.php/registration/firststep) নিবন্ধনের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
এ সময় পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য ও নির্দেশনা পেতে এর ওয়েবসাইট গবেষণা এবং অ্যাডমিশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। অতঃপর নির্বাচিত অধ্যয়ন প্রোগ্রামের জন্য ইউনিভার্সইটালি সাইটে প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি আপলোড দিতে হবে। এভাবে প্রি-ইনরোলমেন্টের অনলাইন আবেদন শেষ করলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার প্রস্তুতির কাজ শুরু করা হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীকে অধ্যয়ন ফি পরিশোধের জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হবে। সাধারণত শিক্ষাবর্ষ জুড়ে তিন কিস্তিতে এই ফি নেওয়া হয়। প্রথম কিস্তি নেওয়া হয় ভর্তির সময়। পরবর্তী কিস্তিগুলো সুনির্দিষ্ট তারিখ সংশ্লিষ্ট ইউনিভার্সিটি থেকে জানানো হয়।
আরো পড়ুন: ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণকৃত পূর্ণ আবেদনপত্র
· একটি বৈধ পাসপোর্ট
· বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি-
o স্নাতক প্রোগ্রামের জন্য হাই স্কুল ডিপ্লোমা বা সমতুল্য সনদ এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
o স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের জন্য স্নাতকের সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
o ডক্টরাল প্রোগ্রামের জন্য স্নাতকোত্তরের সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টে
· ভাষার দক্ষতা পরীক্ষার নূন্যতম স্কোর
o আইইএলটিএস-এ ৬ বা টোফেল আইবিটিতে ৫৯
o মাস্টার্সের জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ দশমিক ৫ কিংবা টোফেল আইবিটি ৭৯
o পিএইচডির জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৭ বা টোফেল আইবিটি ৯৬
· অধ্যয়ন ফি পরিশোধের রশিদ: তিন কিস্তির ন্যূনতম ১ কিস্তি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি প্রায় ১২০ এবং ১৮০ ইউরোর মধ্যে থাকে, যা ১৫ হাজার ৮৬২ থেকে ২৩ হাজার ৭৯৩ টাকার (১ ইউরো = ১৩২ দশমিক ১৮ বাংলাদেশি টাকা) সমতূল্য।
· সিভি
· স্টেটমেন্ট অব পার্পাস
· একাধিক মোটিভেশন লেটার
· মেডিকেল সার্টিফিকেট ও স্বাস্থ্য বীমা
· জিম্যাট বা জিআরই পরীক্ষার ফলাফল (মাস্টার্সের জন্য)
· পোর্টফোলিও: সৃজনশীল ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের জন্য
· গবেষণা প্রস্তাব: পিএইচডির জন্য
o যার অধীনে গবেষণা করা হচ্ছে তার সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য এবং শিক্ষার্থীর গবেষণার তত্ত্বাবধান করবেন এই মর্মে একটি সম্মতিপত্র
o প্রাসঙ্গিক পাবলিকেশনের সারাংশ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
· কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ- নির্বাচিত কিছু প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে
বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্স এবং প্রোগ্রাম বিশেষে আরও কিছু দরকারি কাগজ দিতে হতে পারে।
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ইতালিতে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদী অধ্যয়নে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য ইতালির টাইপ-ডি ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। ন্যাশনাল ভিসা নামে পরিচিত এই ভিসায় ৯০ দিনের বেশি ইতালিতে বসবাসের অনুমতি লাভ করা যায়। ভিসার মেয়াদ থাকে নির্বাচিত ফুল-টাইম স্টাডি প্রোগ্রামের পুরো সময়কালব্যাপি।
বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা ইতালি অভিবাসনের গ্লোবাল পার্টনার ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস)-এর মাধ্যমে টাইপ-ডি ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য ডাউনলোডের জন্য আবেদন ফর্মটি পাওয়া যাবে এই লিংকে- https://visa.vfsglobal.com/one-pager/italy/bangladesh/english/pdf/visa-d-long-term.pdf
এটি পূরণের পর প্রিন্ট করে স্বহস্তে সই করতে হবে এবং তারপর এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নথিপত্রের সংযুক্তিসহ ভিসা আবেদন কেন্দ্রে জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুন: টোফেল পরীক্ষার নিবন্ধন করবেন যেভাবে
ভিসার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· সম্পূর্ণরূপে পূরণকৃত এবং স্বহস্তে সই করা জাতীয় (টাইপ-ডি) ভিসা আবেদনপত্র
· সদ্য তোলা ২ কপি রঙিন ছবি:
o ছবিগুলো অবশ্যই আইসিএও (ইন্টার্ন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন) ফর্ম্যাটের হতে হবে (আকার ৪ x ৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা ও সর্বোচ্চ বিগত ৬ মাসের মধ্যে তোলা)
· প্রতিটি পৃষ্ঠার অনুলিপিসহ বৈধ পাসপোর্টের আসল কপি
o পাসপোর্টের মেয়াদ শেনজেনভুক্ত যে কোনো দেশে পৌঁছার তারিখ থেকে পরবর্তী অন্তত ৩ মাস হতে হবে। পাসপোর্টে কমপক্ষে দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
· ইতালীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা এএফএএম ইনস্টিটিউটে (চারুকলা, সঙ্গীত ও নৃত্যকলার প্রতিষ্ঠান) প্রি-ইনরোলমেন্টের প্রমাণ (কেবল প্রি-ইনরোলমেন্টের জন্য): ভর্তি এবং অধ্যয়ন খরচ উল্লেখ করা আবশ্যক
· ইতালীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার লেটার
· আবেদনকারীর আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ: গত ৬ মাস ধরে বাংলাদেশে পরিচালিত যে কোনো ব্যাংক কর্তৃক জারি করা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট
o কেউ স্পন্সর করে থাকলে তার আর্থিক সম্পদের প্রমাণ: বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক থেকে দেওয়া স্পন্সরের গত ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
o স্পন্সরের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের প্রমাণ (স্পন্সর অবশ্যই রক্তের সম্পর্কের বা বৈবাহিক সূত্রে সম্পর্কিত হবেন)
· স্কলারশিপ পেয়ে থাকলেও উপরোক্ত আর্থিক সম্পদের প্রমাণ প্রদর্শন করা অপরিহার্য
· ইংরেজি ভাষা দক্ষতার প্রমাণ স্বরূপ আইইএলটিএস (নূন্যতম স্কোর ৬) সার্টিফিকেট: শংসাপত্রের ইস্যুর তারিখ ভিসার আবেদনের তারিখের আগে দুই বছরের বেশি হওয়া যাবে না
· ইতালিতে শিক্ষার্থীর বাসস্থানের প্রমাণ:
o অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় বা ভাড়া চুক্তি কিংবা,
o একজন ইতালীয় নাগরিক বা দেশটিতে নিয়মিত বসবাসের পার্মিটধারী বিদেশী নাগরিকের পক্ষ থেকে রেসিডেন্ট স্টেটমেন্ট। এর সঙ্গে স্টেটমেন্টে সইকারী ব্যক্তির পরিচয়পত্রের সংযুক্তির প্রয়োজন হবে।
· বিমানের অগ্রিম টিকেট বুকিং-এর নথিপত্র
· ভ্রমণ বীমা: চিকিৎসা ফি, হাসপাতালে ভর্তি ও প্রত্যাবাসন খরচসহ সর্বমোট ৩০ হাজার ইউরো (৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৮৬ টাকা)
· বিবাহিত হলে বিবাহের শংসাপত্র, তালাকপ্রাপ্ত হলে বিবাহ-বিচ্ছেদের শংসাপত্র এবং বিধবা বা বিপত্নীকদের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর শংসাপত্র
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভিসা আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
আবেদনের যাবতীয় কাগজপত্র একসঙ্গে করে ভিএফএস-এ যাওয়ার জন্য অনলাইনে কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন নেই। তবে https://vfsforms.mioot.com/forms/CFNC/-এই লিংকের ফর্মটির মাধ্যমে যোগাযোগ করে আবেদনের কথা জানাতে হবে। তারপর ফর্মে উল্লেখিত প্রার্থীর ই-মেইল ঠিকানায় অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিনক্ষণ জানানো হবে। এই ইমেইলের একটা প্রিন্ট নিয়ে সেটা ভিএফএসে আসার সময় সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশে ইতালির ভিএফএস সেন্টারের ঠিকানা:
· ঢাকা: নাফি টাওয়ার (৪র্থ ও ৫ম তলা), ৫৩, দক্ষিণ গুলশান এভিনিউ, গুলশান ১, ঢাকা ১২১২।
· চট্টগ্রাম: ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চট্টগ্রাম, (৫ম তলা) ১০২/১০৩ আগ্রাবাদ সি/এ। কমার্স কলেজ রোড, চট্টগ্রাম-৪১০০।
· সিলেট: ৪র্থ তলা, নির্ভানা ইন কমপ্লেক্স, রামের দীঘির পাড়, মির্জাজঙ্গল রোড, সিলেট- ৩১০০।
উপরের যে কোনো সেন্টারের ক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে উপস্থিত হওয়া জরুরি। ই-মেইলে উল্লেখিত তারিখে প্রার্থীর ছবি তোলা এবং দশ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার মাধ্যমে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা হবে। এর সঙ্গে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার নেওয়া হতে পারে। অবশেষে যাবতীয় কার্যক্রমের পর ভিসা ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচ গ্রহণ সাপেক্ষে প্রার্থীকে একটি স্বীকৃতি পত্র বা রশিদ দেওয়া হবে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় ও আনুষঙ্গিক খরচ
স্টাডি ভিসা প্রস্তুত হতে সাধারণত ন্যূনতম ২১ ক্যালেন্ডার দিন প্রয়োজন হয়। তবে কাগজপত্র যাচাইসহ নানা কারণে ভিসা হাতে পাওয়া সময়টি আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।
ইতালির ভিএফএসের ওয়েবসাইট অনুসারে, টাইপ-ডি ভিসা ফি ৫০ ইউরো বা ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। ভিএফএস গ্লোবাল সার্ভিস চার্জ বাবদ রাখা হয় ৩৮ ইউরো বা ৪ হাজার ৩৭০ টাকা। সঙ্গে অতিরিক্ত ব্যাংক ড্রাফ্ট ২৭০ টাকা।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় এবং ভিসা প্রাপ্তি
যাচাই-বাছাই চলার সময়টুকুতে ভিএফএস ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। এর জন্য নিম্নোক্ত লিংকে যেতে হবে- https://www.vfsvisaonline.com/Global-Passporttracking/Track/Index?q=shSA0YnE4pLF9Xzwon/x/IzcvBCb/70NmWcryI2n01dau+KWr9vOycRn8+9h+u8XIqecwY3I+ZSwJbdFTpO9OZlVSATCCz354s5WEZMMYrE= এখানে আবেদনকারীর শেষ নামের পাশাপাশি দিতে হবে একটি রেফারেন্স নাম্বার, যেটি ভিএফএস থেকে দেওয়া সেই রশিদে পাওয়া যাবে। এছাড়া +৮৮০৯৬০৬৭৭৭৬৬৬ নাম্বারে কল করেও ভিসার ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া যাবে।
সমুদয় যাচাইয়ের পর ভিসা নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে তা ফোন কলের মাধ্যমে প্রার্থীকে জানানো হবে। অতঃপর সে অনুযায়ী, ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য ভিএফএস সেন্টারে চলে যেতে হবে। এ সময় অবশ্যই সেই রশিদ বা স্বীকৃতি পত্রের মূল কপি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সঙ্গে আনতে হবে।
আরো পড়ুন: সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ
৪২৭ দিন আগে