মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং কারাবন্দি মো. লিটনের রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ইয়াদিয়া জামান ও মো. শাহিনুজ্জামান।
নামের মিল থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামির পরিবর্তে ভোলার মো. লিটনের কারাগারে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও তার মুক্তি চেয়ে গত ২৪ আগস্ট মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং কারাবন্দি মো. লিটনের পক্ষে এ রিটটি করা হয়।
রিট আবেদনে লিটনের পরিচয় নিশ্চিতকরণে তাকে সশরীরে অথবা ভার্চুয়ালি হাইকোর্টে হাজির করা, তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয়া এবং তার আটক আদেশ অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শক, ভোলার পুলিশ সুপার, ভোলার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
গত ২২ আগস্ট দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে ‘শুধু নাম ঠিকানা মিলে জেল খাটছেন দিনমজুর’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সংবাদটি সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দুজনের নাম মো. লিটন। বাবার নাম, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার নামও এক। পার্থক্য শুধু বয়সে। একজনের অপরাধে প্রায় আট মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন অপরজন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. লিটনের বয়স ৪১ বছর। আর যিনি জেল খাটছেন তার বয়স ৩০ বছর।
তবে পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার লিটন একবারের জন্যও বলেননি যে তিনি আসামি নন। দুই লিটনেরই বাবার নাম নুর ইসলাম। তারা মারা গেছেন। দুজনেরই বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চতলা গ্রামে।
২০০৯ সালের ২৮ জুন পল্টন থানার আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে থেকে ভারত ও পাকিস্তানের তৈরি আমদানি নিষিদ্ধ চেতনানাশক ট্যাবলেটসহ গ্রেপ্তার হন লিটন, শামীম ও আরশাদ মিয়া নামের তিনজন।
এ ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিচার শুরুর আগেই ওই তিনজন জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ আসামিদের দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন।
গ্রেপ্তার লিটনের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘লিটনকে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বাবা নুর ইসলাম ১০ বছর আগে মারা গেছেন। আসামি লিটনের বাড়ি তাদের বাড়ি থেকে ২-৩ মিনিটের পথ। তার বাবা ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। বাবা মারা যাওয়ায় মাকে নিয়ে আসামি লিটন ঢাকায় চলে যান।’