সংস্থাটি জনস্বার্থবিরোধী, অন্যায্য ও আত্মঘাতী চাপে প্রভাবিত না হয়ে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার, সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপন্থী উদ্যোগ প্রতিহত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের অযৌক্তিক দাবি ও চাপে সরকার যদি নতি স্বীকার করে তা হবে আদালত অবমাননা ও জনস্বার্থের পরিপন্থী।
‘বিশেষ করে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক গঠিত কমিটির বৈঠকে মালিক-শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা দাবি- সড়ক পরিবহন আইন ভঙ্গের জন্য সাজার মেয়াদ কমানো সরাসরি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের সাথে সাংঘর্ষিক,’ উল্লেখ করেন তিনি।
তার মতে, আইনের সব ধারা জামিনযোগ্য করা, অর্থদণ্ড হ্রাস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করার মতো অধিকাংশ দাবি সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় সুশাসন, ন্যায়বিচার, জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কোনোভাবেই সহায়ক হবে না।
ড. জামান আরও বলেন, পাশের দেশগুলোর এ সংক্রান্ত আইনের সাথে তুলনামূলক পর্যালোচনা ও সামঞ্জস্যের যুক্তি উল্লেখ করা হলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপে প্রভাবিত হয়েই যে আইনটিকে দুর্বল করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তা সহজেই বোধগম্য।
‘স্বার্থের সংঘাতে জর্জরিত জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদই ষড়যন্ত্রের কাছে নতজানু হয়ে একদিকে সড়ক পরিবহনের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা ও নৈরাজ্য সুরক্ষার পথ অবলম্বন করছে ও অন্যদিকে বিশ্বনন্দিত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের দাবিকে অবজ্ঞা করার চরম নিষ্ঠুর দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে,’ যোগ করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক দাবি করেন, সড়ক ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলা নৈরাজ্যের মুখে গত বছরের মাঝামাঝি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে সরকার ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ পাশ করলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে তা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
পরিবহন মালিক-শ্রমিক পক্ষ আইনটির বিরোধিতা করে তা বাতিলের দাবিতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘এ পর্যায়ে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আইনটির উল্লেখিত পরিবর্তন এ খাতে নৈরাজ্য নিরসনে গৃহীত সব অগ্রগতিকেই হুমকির মুখে ফেলে দেবে। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের নতি স্বীকার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।’
সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয় নির্দেশনার আলোকে আইনটির যথাযথ বাস্তবায়নে অবিলম্বে বিধিমালা প্রণয়ন এবং তরুণ প্রজন্মসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।