সোমবার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্যাইব্যুনাল-১ এর বিচারক অমিত কুমার দে এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি শরিফুল ইসলাম (৪৩) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার মৃত মো. বাবুর ছেলে। তিনি বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাঘারপাড়া উপজেলার ফুল মিয়ার মেয়ে সুফিয়া বেগমের সাথে আসামি শরিফুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়। মেয়ে জন্মের এক বছর পর পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। এরপর থেকে সুফিয়া খাতুন মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।
এর মধ্যে ১৫ বছর পার হয়ে যায়। মেয়ের বয়স এখন ১৬ বছর।
গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি শরিফুল বাবার দাবি নিয়ে মেয়েকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। এরপর মেয়েকে আর ফেরত দেননি তিনি।
অনেক খোঁজ-খবর করে মেয়ে ও শরিফুলকে কোথাও খুঁজে পাননি সুফিয়া। আট মাস পর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডাব্লিউএলএ) সহযোগিতায় ওই মেয়েকে ফরিদপুর জেলার একটি যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করা হয়।
শরিফুল নিজের মেয়েকে গত বছরের ২২ মার্চ ওই যৌনপল্লীতে নিয়ে বিক্রি করে দেন।
এ বিষয়ে শরিফুলকে আসামি করে মেয়ের নানা ফুল মিয়া বাঘারপাড়া থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) ইদ্রিস আলী বলেন, বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নানাবাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে যান শরিফুল। পরে তাকে ফরিদপুরের একটি যৌনপল্লীতে নিয়ে বিক্রি করে দেন। এরপর বিএনডব্লিউএলএ’র সহযোগিতায় পুলিশ ওই মেয়েটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় শরিফুলকে আদালত সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। শরিফুল কারাগারে আটক আছেন। বর্তমানে মেয়েটি বিএনডাব্লিউএলএ এর আশ্রয়ে রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনডব্লিউএলএ’র যশোরের সমন্বয়কারী নাসিমা খাতুন বলেন, ‘অসুস্থ্ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। মেয়েটি আমাদের আশ্রয়ে রয়েছে।’