প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের বেতন, আরাম-আয়েশ ও বিলাসের জন্য কর প্রদানকারী জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সকলেই জনগণের ট্যাক্স হিসেবে দেয়া অর্থ থেকে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আপনাদের আরাম-আয়েশসহ সবই জনগণের টাকা থেকে আসছে। তাই আপনাদের তাদের জন্য, তাদের স্বার্থ ও কল্যাণে কাজ করতে হবে।’
শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় জনসেবা দিবস ও বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পুরস্কার ২০২২ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচিতে যোগ দেন।
তিনি বলেন, তৃণমূলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবং আমাদের সরকার সেই লক্ষ্যকে মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকার প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চায়, যাতে প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি কর্মচারী দেশের সংবিধান অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন: দলমত নির্বিশেষে আমি প্রতিটি নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের উন্নয়ন করতে হলে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য, একটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও উদ্দেশ্য থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আর সে জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন থাকতে হবে। তার মানে জনগণের প্রতি কর্তব্য পালন করা সকলের প্রধান দায়িত্ব।
তিনি উল্লেখ করে বলেন, সরকার কর্মক্ষেত্রে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে, যাতে সরকারি কর্মচারীরা নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে।
তিনি বলেন,‘এর জন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশাসনিক কাঠামোকে সময় উপযোগী করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পরিবারের জন্য আপনাদের দুশ্চিন্তা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে আপনারা মানুষের কথা ভাবতে পারেন।’
তিনি সরকারি কর্মচারীদের অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে একটি দেশকে শিক্ষা দেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু সবাই এখন সেই ফল ভুগছে। সবাই এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ব্রিটেন ও আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলো শক্তি ও জ্বালানি ব্যবহারে কঠোরতা বজায় রাখতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়।’
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যেভাবে আমাদের দায়িত্ব আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছি, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে আমাদের মিতব্যয়ীতা বজায় রাখতে হবে এবং অপচয় এড়াতে হবে। আমাদের এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’
বিরোধী দল ও মিডিয়া রিপোর্টের সমালোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি কর্মকর্তাদের কোন ত্রুটি হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি আমলাদের বলেন, ‘আপনাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে আপনারা যা করছেন তা জনগণের কল্যাণের জন্য করছেন।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, জনপ্রশাসন সচিব কে এম আলী আজম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: আবারও জীবনের সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা অনুশীলন করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর