যুবলীগ নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ৮ ঘণ্টা পর তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।
অভিযুক্ত ওসির নাম কামাল হোসেন।
পুলিশ সুপার বলছেন, প্রশাসনিক কারণে ওসি কামাল হোসেনকে প্রত্যাহার করে রংপুর রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়ারুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রত্যাহারের অর্ডারে প্রশাসনিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত বাকি চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার, হাসপাতাল সিলগালা
প্রসঙ্গত, গত ২৯ এপ্রিল রাতে শহরের পাবলিক ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলা থেকে সদর থানার ওসি কামাল হোসেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলককে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে অন্যায়ভাবে হাতে হাতকড়া পরিয়ে এবং চোখে কাপড় বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হাত ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ এনে বুধবার (১০ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা আদালতে ওসি কামলাসহ পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক।
মামলায় আসামি করা হয়- সদর থানার ওসি মো. কামাল হোসেন, ওসি (অপারেশন) মো. লতিফ, এসআই খোকা চন্দ্র রায় ও মোহাম্মদ হাফিজ এবং এএসআই মো. মোতালেবকে।
মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশীদ শুনানি শেষে বিষয়টি আমলে নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দীনকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন। এছাড়াও সিভিল সার্জনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলকের চিকিৎসার প্রতিবেদন দাখিল এবং পুলিশ সুপারকে বিভাগীয় মামলা রুজু করার আদেশ দেন বলে জানান বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম।
আদালতে দাখিলকৃত আবেদনে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ওসির কার্যালয়ে পুলককে লাঠি দিয়ে পেটান ওসি কামাল হোসেন, ওসি (অপারেশন) মো. লতিফ, এসআই খোকা চন্দ্র রায় ও মোহাম্মদ হাফিজ এবং এএসআই মো. মোতালেব। পরদিন সকালে পুলিশ ১৫১ ধারায় একটি মামলা দিয়ে পুলক ও রকিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।
তবে ওসি কামাল হোসেন নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন ২৯ এপ্রিল বৈশাখী মেলায় তারা অশালীন আচরণ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল। উপস্থিত জনতা তাদের মারধর করেছে। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁও চিনিকলের এমডিসহ ২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা