জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদের (এনসিসি) কাঠামো ও নাম পরিবর্তনসহ সংশোধিত প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে দ্বিতীয় ধাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ষষ্ঠ দিনের সূচনা বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এটি উপস্থাপন করেন।
সংশোধিত প্রস্তাবে ৭ সদস্যের পরিষদের নাম রাখা হয়েছে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ । তবে, নতুন প্রস্তাবনায় পূর্বের মতো রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়নি।
৭ সদস্যের এই কমিটিতে যারা থাকবেন— প্রধানমন্ত্রী, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, দুই কক্ষের স্পিকার (নিম্ন ও উচ্চকক্ষ), রাষ্ট্রপতির মনোনীত একজন প্রতিনিধি, প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং প্রধান বিরোধী দল বাদে অন্যান্য বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি। নিম্নকক্ষের স্পিকার এই কমিটির বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন।
নতুন কমিটির কাজ ও রাষ্ট্রের মূলনীতির পরিবর্তন
কমিটির যাদের নিয়োগ দেবে— প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, অ্যাটর্নি জেনারেল, সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কমিশন এবং সেনাপ্রধানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ।
এ ছাড়া, রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি যুক্ত করা হয়েছে। আগে সেখানে ছিল সমতা, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র।
তবে এই পরিবর্তিত মূলনীতিতেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি।
জামায়াতের পূর্ণ সমর্থন, বিএনপির বিরোধিতা
আলোচনায় দুপুরের বিরতিতে সাংবাদিকদের জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘বিএনপি ছাড়া সব দল নতুন প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এতে পুরোপুরি একমত।’
আরও পড়ুন: সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান আলী রীয়াজের
এর আগে বিএনপি এই কাঠামোর বিরোধিতা করে বলেছিল, এই ধরনের একটি কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট জবাবদিহিতা না থাকলে ভারসাম্যহীন পরিস্থিতি তৈরি হবে।
গত ১৮ জুন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে ক্ষমতা আছে অথচ জবাবদিহিতা নেই—এমন কোনো প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করতে পারি না।’
এই প্রেক্ষাপটেই কমিশন নাম ও কাঠামো পরিবর্তন করে সংশোধিত প্রস্তাব দেয়।
সংবিধিবদ্ধ সংস্থাগুলোর নিয়োগ তদারকির জন্য নিয়োগ কমিটি গঠনের সংশোধিত প্রস্তাবের বিষয়ে মতবিরোধের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘অধিকাংশ দল নতুন প্রস্তাবে একমত। এই প্রস্তাব যদি গৃহীত না হয়, তাহলে আর কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়।