১৯৯১ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর পর দীর্ঘ ২৮ বছরে মাত্র দুটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশবিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন আয়োজনের নয় বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
দীর্ঘ ১২ বছর পরের এ সমাবর্তনকে ঘিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২০ একর জায়গা জুড়েই রয়েছে সাজসজ্জা ও আনন্দ আয়োজন।
এবারের সমাবর্তনে অংশ নেয়ার জন্য মোট ছয় হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে চার হাজার ৬১৭ জন, স্নাতকোত্তর এক হাজার ১২৭ জন, পিএইচডি দুই জন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ডিগ্রিধারী ছয় জন এবং নার্সিংয়ের ১২০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।
২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে সর্বোচ্চ কৃত্বিতের জন্য ১০ জন শিক্ষার্থী এবং স্নাতকোত্তরে পাঁচ সেরা শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক দেয়া হবে। এছাড়াও দ্বিতীয় সমাবর্তনে বাকি থাকা পাঁচ রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদকও এ সমাবর্তনে প্রদান করা হবে। অন্যদিকে অনুষদে প্রথম হওয়া মোট ৮৯ জন শিক্ষার্থীকে উপাচার্য পদক প্রদান করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে এসেছে এই ভালোবাসার সবুজ চত্ত্বরে। কালো গাউন আর ক্যাপ গায়ে জড়িয়ে মেতে উঠেছেন ফেলে আসা শিক্ষা জীবনে। আড্ডা, গল্প, স্মৃতিকে স্মরণ করতে সবাই এক ফ্রেমে বন্দী হয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আসন্ন তৃতীয় সমাবর্তনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে সমাবর্তনের সাথে জড়িত দপ্তরগুলো। রাস্তা মেরামত করা, ফাঁকা জায়গায় ফুলের গাছ লাগানো, বিল্ডিংয়ে নতুন রং করাসহ গোল চত্ত্বরের সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ শেষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সমাবর্তনস্থল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে করা হয়েছে আলোকসজ্জা এবং বিভিন্ন রংয়ের পতাকা। বিভিন্ন ভবনের সামনে এবং ওপরে টানানো হয়েছে সমাবর্তনের ব্যানার-ফেস্টুন। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রস্তুত হয়ে আছে মঞ্চ ও প্যান্ডেল। সমাবর্তনের জন্য গ্র্যাজুয়েটদের সনদ তৈরির কাজও অনেক আগেই সেড়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
শাবির তৃতীয় সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
এদিকে সমাবর্তনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা উপকমিটির আহ্বায়ক এবং শাবি প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ ইউএনবিকে বলেন, ‘সমাবর্তনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সমাবর্তন সফল করতে সমাবর্তন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শাখা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’
এদিকে সমাবর্তনের আগের দিন মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় সমাবর্তন প্যান্ডেলে রিহার্সেল (মহড়া) অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবর্তনের দিন স্নাতককে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে এবং আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে দুপুর আড়াইটার মধ্যে সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করতে হবে।
পরবর্তীতে দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে শোভাযাত্রার মাধ্যমে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। মূল অনুষ্ঠান চলবে বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত।