রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে নিপীড়নমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে র্যালি করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব), স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনির্ভাসিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এর ৩০ জনের অধিক শিক্ষক এই পদযাত্রায় যোগ দেন।
তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধ, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবি জানান।
ঢাবির এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি ন্যায্য ও জনপ্রিয় আন্দোলন। সরকারও শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু লোক সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হঠাৎ করে হামলা চালাল। যখন তারা কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি তুলছিল।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে এর আগে এরকম হামলা কখনোই ঘটেনি। এমনকি পাকিস্তান ও ব্রিটিশ শাসনামলেও হয়নি। এটি আশ্চর্যজনক ও অবিশ্বাস্য ঘটনা। একটি স্বাধীন দেশে আমরা এরকম হামলার কথা চিন্তা করতে পারি না। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানাই।
ঢাবি আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, আমরা দেখেছি অনেক সময়েই শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতি তাদের সমর্থন জুগিয়েছে। কিন্তু কোটা আন্দোলনে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কোনো সমর্থন দেয়নি। এমনকি তারা আহত ছাত্রদের সাহায্যের চেষ্টাও করেনি।
ঢাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমুদ্দীন খানের সঞ্চালনায় র্যালিতে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাবির সাবেক অধ্যাপক আকমল হুসেইন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম ও ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব।
র্যালিতে শিক্ষক দলের পাঁচ দফা দাবি পড়ে শোনান ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন।
শিক্ষকদের পাঁচটি দাবি হচ্ছে- সকল হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ সরকারের বহন করা, নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হয়রানিকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করা।
পদযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে ঢাবি ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাশেদসহ অন্যান্য ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে ব্যবসা অনুষদের সামনে মানববন্ধন করেছে।