ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণে বাংলাদেশের অনুরোধের বিষয়ে ভারত আর কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, 'আপনারা জানেন, এক সপ্তাহ আগে আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাপারে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা একটি বার্তা পেয়েছি। এর বাইরে এই মুহূর্তে আমার আর কিছু বলার নেই।’
বৃহস্পতিবার(২ জানুয়ারি) নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত রবিবার বলেছেন, তারা শুনেছেন ভারত তাকে ফেরত দেবে না।
উপদেষ্টা বলেন, 'আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো তারা একটি রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তারা তাকে ফেরত দেবেন না। আমরা এমনটিই শুনছি।’
নয়া দিল্লির কাছ থেকে জবাব না পেলে নির্দিষ্ট সময় পর স্মরণ করিয়ে দেবে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়র মুখপাত্র মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমরা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করব। সোমবারই কূটনৈতিক চিঠি (নোট ভারবাল) হস্তান্তর করা হয়েছে। '(ভারতের পক্ষ থেকে) কোনো জবাব না এলে আবারও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে জবাবের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। ‘এই মুহুর্তে, আমরা কোনো মন্তব্য করব না, কারণ আমরা উত্তরের জন্য অপেক্ষা করব।’
জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ ব্যাপক অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা রয়েছে। এর ফলে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মনমোহন সিংয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারতীয় হাইকমিশনে প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ ও ভারত ২০১৩ সালে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি সেই করেছে। পরে ২০১৬ সালে এটি সংশোধন করা হলে তা এক ধরনের অনুরোধের জন্য একটি আইনি কাঠামোতে পরিণত হয়।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ও ভারত তাদের দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির ১০(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে। যাতে পলাতক অপরাধীদের দ্রুত হস্তান্তর করা যায়।
এদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার পুনর্ব্যক্ত করেন, তাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশে চলমান কার্যক্রমে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিশ্চিত করা হবে। ‘এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
আরও পড়ুন: ‘ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় আসছেন’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী