বাংলাদেশের প্রতি বৈশ্বিক আস্থা বাড়াতে দুই বছরের মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে 'বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা বিষয়ক শ্বেতপত্র' প্রকাশ করা হয়।
ড. দেবপ্রিয় স্বচ্ছতা এবং কার্যকর সংস্কারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আস্থা ফেরানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আগামী জাতীয় বাজেট প্রণয়নকে সামনে রেখে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি সতর্ক করে বলেন, 'আগামী ছয় মাস গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে ধ্বংস করেছে: শ্বেতপত্র
দেবপ্রিয় বলেন, 'উদ্দেশ্যকে বাস্তব অগ্রগতিতে রূপান্তরিত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’
ডাটা কমিশন গঠন
ড. দেবপ্রিয় দেশের পরিসংখ্যানগত তথ্য পদ্ধতিগতভাবে মূল্যায়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ডাটা কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন। এ ধরনের একটি কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান তথ্যের ওপর নির্ভর করার পরামর্শ দেন তিনি। এটি ইঙ্গিত দেয় যে বাংলাদেশ এলডিসি উত্তরণের সমস্ত মানদণ্ড পূরণ করে।
এলডিসি গ্রুপে বাংলাদেশের থাকার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ করতে ব্যর্থ হই, তাহলে তা জাতির অগ্রগতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। সমালোচকরা যুক্তি দেখাতে পারেন যে, একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি না হওয়ায় দুই বছরের মধ্যে দেশ ব্যর্থ হবে।’
সুপারিশগুলো ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব দিলেও দেবপ্রিয় সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ‘সরকার আমাদের পরামর্শগুলো গ্রহণ করবে কিনা তা কেবল সময়ই বলে দেবে।’ একই সঙ্গে প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলোর অনিশ্চিত গতিপথ তুলে ধরে মন্তব্যও করেন তিনি।
সংস্কার পরামর্শ
ব্যাপক গবেষণা এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে শ্বেতপত্রটি সমালোচনা এবং রোডম্যাপ উভয়ই হিসাবে কাজ করে। এটি বাংলাদেশের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার মতো পদ্ধতিগত বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে।
দেবপ্রিয় বলেন, ‘নথিটি শুধু সমালোচনামূলক নয়, বরং পথপ্রদর্শকও। এটি নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে আস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এখন সময় এসেছে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সংস্কারগুলো করার।’
আরও পড়ুন: হাসিনার আমলে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে: শ্বেতপত্র