শ্বেতপত্র
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াদের শ্বেতপত্রের দাবি ফারুকের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি আরও বলেন, 'যারা দেশ ছেড়ে গেছে বিশেষ করে শত মায়ের বুক খালি করে কীভাবে ভারতে পালিয়ে যেতে পেরেছে সেই ব্যাখ্যা দিয়ে সরকারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি হঠাৎ করে ভারত থেকে দেশে ফেরার ইচ্ছা জানিয়েছে সে কথা তুলে ধরেন ফারুক।
আরও পড়ুন: হিন্দুদের নিপীড়নের ঘটনাগুলোর বিচারের প্রতিশ্রুতি বিএনপির
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে যেভাবে ভারতে পালিয়ে গেছেন সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ঢোকা আপনার জন্য এত সহজ হবে না। সীমান্ত বর্তমানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের অধীনে বিজিবি কঠোরভাবে সুরক্ষিত করে রেখেছে, আওয়ামী লীগ নয়।
সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ফারুক আরও অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সহায়তায় ভারত বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বছরের পর বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করে ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং রাতে আর ভোট হবে না। এই আন্দোলন বৃথা যাবে না।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি এক মানববন্ধনের আয়োজন করে।
এই মানববন্ধনে ফারুক বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছিল সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনার জন্য, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের অধীনে নয়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় যেখানে দেশের জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন দেশের মানুষের চাওয়া ড. ইউনূসের সরকার যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।
বিগত সরকারের আমলে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪০ লাখ মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘জনগণ এখন প্রশ্ন করছে, রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অনুযায়ী কেন এই ৪০ লাখ মামলা এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ও নতুন ইসি চায় বিএনপি
১ মাস আগে
অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়নে ১০ সদস্যের প্যানেল অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি প্যানেল গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্যানেলের নির্দিষ্ট সদস্যদের নাম প্রকাশ না করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সচিবালয়ের একটি সূত্র।
এসডিজি বিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন এই প্যানেলকে ৯০ দিনের মধ্যে শ্বেতপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: উপদেষ্টা
এই নথিটিতে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের সময় বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে তা মোকাবিলার লক্ষ্যে কৌশলগত সুপারিশগুলোর রূপরেখা তুলে ধরা হবে।
শ্বেতপত্রটি বেশ কয়েকটি মূল ক্ষেত্রগুলোতে গুরুত্ব দেবে
সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা: অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ, বিনিয়োগ এবং ভর্তুকিসহ সরকারি ব্যয় এবং বাজেট ঘাটতি অর্থায়ন পরীক্ষা করা।
মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা: উৎপাদন, সরকারি সংগ্রহ এবং খাদ্য বিতরণ প্রক্রিয়া মূল্যায়ন।
বাহ্যিক ভারসাম্য: রপ্তানি ও আমদানি গতিশীলতা, রেমিট্যান্স প্রবাহ, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং বৈদেশিক ঋণের মতো বিষয়গুলোর মূল্যায়ন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: জ্বালানি খাতে চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য, ব্যয় এবং ক্রয় চুক্তি বিশ্লেষণ।
বেসরকারি খাত: ঋণ, বিদ্যুৎ, সংযোগ এবং সরবরাহের সুযোগ পর্যালোচনা করা।
কর্মসংস্থান: আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মজুরি কাঠামো এবং যুব কর্মসংস্থান সমস্যাসহ দেশীয় এবং বিদেশে উভয় কর্মসংস্থানের শর্তগুলোর বিষয়ে তদন্ত করা।
কমিটি সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগের সাচিবিক সহায়তা নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন থেকে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: বানভাসিদের সহায়তার আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখরা এগিয়ে এসেছেন: ধর্ম উপদেষ্টা
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে যে কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
২ মাস আগে
দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে শ্বেতপত্র প্রণয়নের সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত প্রায় দেড় দশক বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিক যেসব চ্যালেঞ্জে নিপতিত হয়েছে তা তুলে ধরা হবে এই শ্বেতপত্রে।
বিগত সরকারের চরম অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অর্থ-পাচার এবং অপরিণামদর্শী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দেশি- বিদেশি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি কার্যক্রমের কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে।
অর্থ বিভাগের সূত্রে পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, পতনকালে শেখ হাসিনা সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত যে স্থিতি ছিল, তা বাংলাদেশের তিনটি বাজেটের মোট অর্থ বরাদ্দের সমান। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে কর আদায়ের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির চেষ্টা না করে দেশি ও বিদেশি দুই ধরনের ঋণের প্রতি বিগত সরকার ঝুঁকেছিল।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপির তুলনায় কর সংগ্রহকে ১৪ শতাংশে নামিয়ে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত ছয় বছরে এ অনুপাত ১১ শতাংশ থেকে উল্টো ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার এটি একটি দিক মাত্র। সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি, অর্থ-পাচারের অবাধ সুযোগ বাজার সিন্ডিকেট ইত্যাদির ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, গত জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি, তা ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বলা যেতে পারে যে, বিগত সরকারের শেষ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই মুখ থুবরে পড়ে।
দ্বিতীয়ত বিগত সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট বাংলাদেশের অর্থনীতির নজিরবিহীন নাজুক পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহতকরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার মধ্যে প্রধানতম হলো-
অর্থনীতি পুনরায় সচল করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিরসনে কাঠামোগত সংস্কার সাধন:
ক. নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি;
খ. দুর্নীতি দূরীকরণ
গ. ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা
ঘ. কর ও শুল্ক নীতির সংস্কার
ঙ. বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ইত্যাদি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রারম্ভেই সরকারের হাতে থাকা প্রয়োজন।
এ লক্ষে ‘প্রিপারেশন অব এ হোয়াইট পেপার অন দ্য স্টেট অব দ্য ইকোনোমি’ শিরোনামে একটি ধারণাপত্র (সিমোয়েপ্ট নোয়াস) নমিতে সংরক্ষিত রয়েছে। ধারণাপত্রে বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার তথ্য-চিত্র সমৃদ্ধ একটি 'শ্বেপত্র' প্রস্তুতের ধারণা দেওয়া হয়েছে।
ধারণাপত্রে বলা হয়েছ, প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলপত পদক্ষেপ গ্রহণ, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং এলডিসি হতে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে প্রতিফলন থাকবে। শ্বেতপত্রটি প্রণয়নের সময় বিভিন্ন অংশীজনের (স্টেকহোল্ডার) সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও মতবিনিময় করা হবে মর্মে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে প্রধানত নিম্নোক্ত বিষয়াদি নিয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
১. পাবলিক ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট ডোমেস্টিক রিসোর্স- সরকারি ব্যয় (পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট, এডিআইপি সাবসিডিস অ্যান্ড ডেবিট), ফাইন্যান্সিং অব বুলগেট ডিফিসিট।
২। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশন- মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন।
৩। ফরেন ফাইন্যান্স ফ্লো অ্যান্ড ডেবিট - এক্সটার্নাল ব্যালেন্স এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট, রেমিট্যান্স, এফডিআই, ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ।
৪। জ্বালানি ও বিদ্যুতের চাহিদা- সরবরাহ, মূল্য নির্ধারণ, খরচ ও ক্রয় চুক্তি।
৫। বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ- ঋণ, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও লজিস্টিকস।
৬। যুব কর্মসংস্থান- দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থান, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মজুরি।
প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রটি প্রস্তুতের জন্য দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি কমিটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। কমিটির কাঠামো নিম্নরূপ হতে পারে।
ক) কমিটির সদস্যগণ অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
খ) পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের যথোপযুক্ত কোন ভবনকে কমিটির দপ্তর হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
গ) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করতে পারে,
ঘ) সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদানুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সকল ধরণের সহযোগিতা দেবে।
বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি' নামে প্রস্তাবিত কমিটি আগামী ২০ (বিশ) দিনের মধ্যে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট হস্তান্তর করবেন।
সূত্র: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
২ মাস আগে