প্রসঙ্গত, চলতে থাকা বন্যার প্রকোপে এই মাসে পুরো দক্ষিণ এশিয়াতে এক মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যেহেতু জুলাইয়ের শুরু থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত বিদ্যমান বর্ষা মৌসুমে বন্যায় সৃষ্ট দুর্যোগে শ্রমিকরা মজুরি হারায়, তাই এই স্কিমের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলার কুরিগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন ও চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে কৃষিকাজের সাথে জড়িত ২ হাজার অনিয়মিত শ্রমিককে এবছর আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
প্রবল বন্যায় মজুরি হারানোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রত্যেক শ্রমিক পরিবার ২,৭০০ থেকে ১৮,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহযোগিতা পাবে।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর রিচার্ড রেগান বলেন, ‘বার্ষিক বন্যায় যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয় তার বিপরীতে বাংলাদেশের মানুষের কোনো সুরক্ষা নেই। তাই ডব্লিউএফপি একটি বন্যা বীমা স্কিম চালু করছে যা এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ।’
কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির (কোইকা) অর্থায়নে পরিচালিত এই ঝুঁকি স্থানান্তর সমাধানমূলক প্রকল্পের সার্বিক লক্ষ্য হল পরিবার ও কমিউনিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাতে তারা জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলা করতে পারে এবং দুর্যোগকালীন সময়ে ঝুঁকি কমিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারে।
কোইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়ং-আ দোহ বলেন, ‘উঁচু এলাকা থেকে অতিমাত্রায় পানির প্রবাহ ইতিমধ্যে শুধুমাত্র প্রকল্প এলাকাগুলোকেই নয় বরং দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোকে প্লাবিত করেছে। অরক্ষিত জনগণ, বিশেষ করে অনিয়মিত ও বর্গাদার চাষিরা মজুরি ও কৃষিজাত ফসল হারিয়ে সবথেকে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে।’
অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘যদিও জলবায়ুর পরিবর্তন আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে, কৃষিখাতের অনিয়মিত শ্রমিকদের মত স্বল্পআয়ের মানুষেরা এই প্রভাবজনিত কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে যা কিনা সামাজিক বৈষম্য আরো প্রকট করে তুলছে, অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের পিছনে এদের ভূমিকা সবথেকে নগণ্য।’
গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারজানা চৌধুরী বলেন, ‘ডব্লিউএফপি ও অক্সফাম বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বে আমি উচ্ছ্বসিত কেননা এই পণ্যটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিশ্রমিকরা যেসব সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে সেগুলোর সমাধানে কাজ করবে।’
এছাড়াও, বিধ্বংসী বন্যার সময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদানে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের এসডিজি লক্ষ্য অর্জনকে আরো শক্তিশালী করা হবে বলে জানান তিনি।
কারিগরি সহায়তাকারী হিসেবে ওয়েদার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সারভিসেস (ডব্লিউআরএমএস), ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ইন্সিটিউট (আইডব্লিউএমআই) এবং সেইভ আর্থ ক্লাইমেট সারভিসেস লিমিটেড ঐতিহাসিক তথ্যাদি সরবরাহ করে সূচকভিত্তিক এই বন্যা বীমা পণ্য উন্নয়নে সহায়তা করেছে।