ডব্লিউএফপি
তহবিল না পেলে রোহিঙ্গাদের রেশন অর্ধেকের বেশি কমাতে হবে: ডব্লিউএফপি
দ্রুত তহবিল পাওয়া না গেলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাসিক রেশনের পরিমাণ অর্ধেকের বেশি কমাতে হবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি—ডব্লিউএফপি। অর্থায়নের অভাবে দেশের ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর খাদ্য সহায়তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ডব্লিউএফপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জরুরি নতুন তহবিল পাওয়া না গেলে (রোহিঙ্গাদের) মাসিক রেশন জনপ্রতি ১২.৫ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলারে নামিয়ে আনতে হবে। আর এই সংকট এমন এক সময়ে আসছে, যখন শরণার্থীরা রমজান শেষে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গারা নির্ধারিত দোকানগুলো থেকে তাদের পছন্দের খাবার কেনার জন্য ভাউচার পান। তবে পূর্ণ রেশন চালিয়ে যেতে এপ্রিলেই জরুরিভাবে দেড় কোটি ডলার এবং এ বছরের শেষ নাগাদ মোট ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রয়োজন।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেল্লি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকট। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। খাদ্য সহায়তা কমানো হলে তারা আরও গভীর সংকটে পড়বে এবং বেঁচে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মিয়ানমারের সংঘাত থেকে বাঁচতে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, যার সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা ডব্লিউএফপির। পালিয়ে আসা এসব মানুষ নিরাপত্তার আশ্রয় খুঁজছে, যা ইতোমধ্যে চাপে থাকা সম্পদের ওপর আরও বড় চাপ সৃষ্টি করছে।
জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির এই সংস্থাটি এরইমধ্যে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্ভাব্য রেশন কমানোর বিষয়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। আর সেটি করা হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস চলাকালে।
স্ক্যালপেল্লি বলেন, ‘এখন আমাদের আগের চেয়ে আরও বেশি করে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। এই পরিবারগুলোর আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তাই হলো তাদের বাঁচা আর হতাশার মধ্যে পার্থক্য। এই সংকট আরও বাড়তে না দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: ‘নিষেধাজ্ঞা’ সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্পকে ড. ইউনূসের ধন্যবাদ
২০২৩ সালে তীব্র তহবিল সংকটের কারণে ডব্লিউএফপি প্রতি মাসে জনপ্রতি রেশন ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ৮ ডলারে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়। এর ফলে রোহিঙ্গাদের খাদ্যগ্রহণে ব্যাপক অবনতি ঘটে। এতে করে ২০১৭ সালের পর থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা সবচেয়ে খারাপ (১৫ শতাংশেরও বেশি) হয়ে যায়। পরে তহবিল পাওয়ার পর অবশ্য রেশন বাড়ানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু এই জনগোষ্ঠীর কোনো আইনগত অবস্থান নেই, ক্যাম্পের বাইরে তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই এবং টেকসই জীবিকার সুযোগও নেই, তাই রেশন আরও কমানো হলে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
পরিবারগুলো বাঁচতে তখন বেপারোয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মতো বিশেষত নারীরা শোষণ, পাচার, পতিতাবৃত্তি ও সহিংসতার উচ্চতর ঝুঁকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। শিশুরা স্কুল থেকে বের হয়ে শিশুশ্রমে বাধ্য হবে এবং মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
বিশ্বজুড়ে শরণার্থী জনগোষ্ঠী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও সাহায্যের ক্ষেত্রে তারাই প্রথম ঘাটতির সম্মুখীন হয়। তহবিলের ঘাটতি ও চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য অনেক সম্প্রদায়ের বেঁচে থাকা আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
৪৩ দিন আগে
যমুনা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় ডব্লিউএফপির আগাম পদক্ষেপ
যমুনা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় আগাম পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
শুক্রবার ডব্লিউএফপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ওপর আসন্ন বন্যার প্রভাব প্রশমিত করতেই এই পদক্ষেপ।
এটি এখন পর্যন্ত ডব্লিউএফপির সবচেয়ে বড় আগাম পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণে ডব্লিউএফপি'র সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি)।
যমুনা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় ডব্লিউএফপি ও এর অংশীদাররা, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা), ইউরোপীয় কমিশনের মানবিক সহায়তা বিভাগ (ইসিএইচও), সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড (সিইআরএফ) এবং জার্মানি ও আয়ারল্যান্ড সমর্থিত অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন (এএ) -ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রতিক্রিয়া মন্ত্রণালয়সহ একাধিক দাতা মিলে প্রাক-অর্থায়নে সর্বকালের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
এই সহায়তায় যা যা অন্তর্ভুক্ত-
• আগাম সহায়তা: বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণের চার দিন আগে ৮১ হাজারেরও বেশি পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
• আগাম অ্যান্টিসিপেটরি শক রেসপন্সিভ সোশ্যাল প্রটেকশন: বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগে বন্যাকবলিত অঞ্চলে বসবাসরত ৮ হাজার ১০০ জনেরও বেশি সরকারি সামাজিক সুরক্ষা সহায়তা গ্রহীতা দুটি জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার (এমসিবিপি ও ইজিপিপি) অধীনে সহায়তা পেয়েছিলেন। এটি জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা বিনিয়োগ থেকে পাওয়া অর্থনৈতিক ও পুষ্টিকর অর্জনকে রক্ষা করে। এছাড়া আগামী সপ্তাহে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ১ হাজার পরিবারকে জরুরি সহায়তা দেওয়া হবে।
এছাড়াও ২০ হাজারেরও বেশি পরিবার বন্যা বিমার আওতাভুক্ত।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোম স্ক্যালপেল্লি বলেন, ‘আমরা আমাদের দাতাদের সমর্থনের জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, যাদের কারণে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে এই আসন্ন বিপর্যয়ের মুখে দ্রুত এবং কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে। অরক্ষিত অবস্থানে থাকা পরিবারগুলো যেন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সহায়তা পায় সেজন্য আমাদের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।’
প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে ডব্লিউএফপির অন্যতম পদক্ষেপ হলো আগাম প্রস্তুতি। বন্যার পানি বিপজ্জনক অবস্থায় যাওয়ার আগেই জীবন ও জীবিকা রক্ষা, সম্পত্তির ক্ষতি রোধ এবং দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা কমানো ডব্লিউএফপির লক্ষ্য।
কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বগুড়া ও জামালপুরসহ যমুনা নদীর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি জেলাকে কেন্দ্র করে কাজ করছে ডব্লিউএফপি। এই অঞ্চলগুলো এরই মধ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে আছে। প্রায় ৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বন্যাদুর্গত অবস্থায় আছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় অবস্থান করতে হচ্ছে। এছাড়াও খাবার ও নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে তারা।
ডোম স্ক্যালপেল্লি বিবৃতিতে আরও বলেন, বন্যাদুর্গতদের তাৎক্ষণিক ত্রাণ সরবরাহের জন্য নয় বরং তারা যেন ভবিষ্যতেও বন্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকতে পারে এবং পূর্বপ্রস্তুতিকে গুরুত্ব দেয় সেজন্য আমাদের এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় অংশীদার ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে এই প্রচেষ্টাগুলো টেকসই ও কার্যকর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বিস্তৃত ও সফল কর্মসূচির জন্য প্রত্যাশিত কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ডব্লিউএফপি। আসন্ন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ বজায় রেখে সে অনুযায়ী নিজ কার্যক্রম চালিয়ে নেবে সংস্থাটি।
এই কার্যক্রম চালাতে গিয়ে ডব্লিউএফপি ১৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতিতে পড়েছে। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহায়তায় দাতা সদস্যদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ডব্লিউএফপি’র রেশন আংশিক বাড়ছে
১৫ বছরে বাংলাদেশের 'ব্যাপক সাফল্যের' প্রশংসা ডব্লিউএফপি’র
২৮১ দিন আগে
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের প্রয়োজনকে অবহেলা করতে পারি না: ইউএসএইড
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএইড) মানবিক সহায়তা ব্যুরো (বিএইচএ) থেকে ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়েছে।
'সময়োপযোগী' এই সহায়তা কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষায় ডব্লিউএফপির প্রচেষ্টাকে উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করবে। যেখানে মিয়ানমারে তাৎক্ষণিক প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা ছাড়াই ১০ লাখ রোহিঙ্গা নিয়মিত দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে ইউএসএইডের মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পগুলোতে দেখেছি, একের পর এক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ সহযোগিতায় নেতৃত্ব দিলেও আমরা স্বীকার করছি- বছরটি শরণার্থীদের জন্য বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা বা তাদের জায়গা দেওয়া বাংলাদেশের উদার সম্প্রদায়গুলোর প্রয়োজনকে অবহেলা করতে পারি না। এর জন্য প্রয়োজন সরকার, দাতা ও উন্নয়ন অংশীদারদের অব্যাহত সমর্থন।’
সংকটের সপ্তম বছরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা চলাচলের সীমিত স্বাধীনতা, চাকরির সুযোগের অভাব এবং ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে অত্যন্ত অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে রয়েছে।
ক্যাম্পগুলো ঘূর্ণিঝড়, বন্যার মতো জলবায়ু সম্পর্কিত দুর্যোগসহ নানা ঝুঁকিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ৮৭ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেলি বলেন, ‘এমন এক সময় যখন একাধিক সংকট দেখা দিয়েছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ও অনেক দাতাগোষ্ঠী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য উদার সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে।’
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে সহযোগিতা পাওয়া গেছে তাতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে খাবারের জন্য বরাদ্দ ৮ ডলার থেকে ১০ ডলারে উন্নীত করা যাবে। আমরা এই ইতিবাচক উন্নয়নে অত্যন্ত আনন্দিত এবং আশা করি রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে দাতারা অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে।
২০২৩ সালে তীব্র তহবিল ঘাটতির কারণে ডব্লিউএফপি খাদ্যের জন্য বরাদ্দ অর্থ কমাতে বাধ্য হয়। ফলে, মার্চে প্রতি মাসে মাথাপিছু ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার করা হয় এবং জুনে তা ৮ ডলারে দাঁড়ায়। এরপর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তার পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: মানবিক সহায়তায় শরণার্থীদের স্বস্তির ব্যবস্থা করতে বিদেশি সরকারগুলোর সমর্থন বাড়াতে হবে: আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ
নভেম্বরের ডব্লিউএফপির সর্বশেষ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কক্সবাজারের শরণার্থী জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশের পর্যাপ্ত খাদ্য নেই, যা জুনে ছিল ৭৯ শতাংশ। তখন পরিবারগুলোকে কম পুষ্টিকর খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। তাছাড়া শিশুদের খাবার দিতে মা-বাবাদের কম খাওয়ার পথ বেছে নিতে হয়। মাঝেমধ্যে কোনো বেলার খাবার না খেয়েই থাকতে হয়েছে।
শিশুদের মধ্যে পুষ্টি ঘাটতি বাড়ছে।বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এক বছর আগের তুলনায় সেপ্টেম্বরে, বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে আরও বেশি শিশু, যাদের মধ্যে প্রায় এক হাজার শিশু গুরুতর ও মাঝারি মাপের অপুষ্টির জন্য চিকিৎসা প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছে।
বিএইচএ তহবিল রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি কক্সবাজার ও ভাসানচরে পুষ্টি, স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে ডব্লিউএফপির কাজে ব্যবহার করা হবে।
ডব্লিউএফপির পুষ্টি কর্মসূচির মাধ্যমে কক্সবাজারের আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের প্রায় ৮ হাজার শিশু এবং ৪ হাজার গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো নারীকে সহায়তা করা হবে।
ডব্লিউএফপি নতুন বছরে কক্সবাজারে তাদের খাদ্যে ফর্টিফাইড চাল চালুর পরিকল্পনা করেছে এবং পুরো রেশন পুনরুদ্ধারের জন্য আরও ৭৯ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহায়তা দিন: ওআইসি সদস্য দেশগুলোর প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৯২ দিন আগে
স্কুল ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণে ডব্লিউএফপি'র সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি
দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিডিং কর্মসূচি সম্প্রসারণ ও উন্নত করতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু করে এবং বর্তমানে ১০৪টি উপজেলার ১৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২৩ লাখ শিক্ষার্থী বিনামূল্যে খাবার পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডব্লিউএফপি’র সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়তে পারে অপরাধ, উগ্রপন্থা: এআরএসপিএইচ
নতুন চুক্তির আওতায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে ১৫০টিরও বেশি উপজেলায় সম্প্রসারিত করা হবে, যার ফলে বিনামূল্যে খাবার পাবে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭ লাখে উন্নীত হবে। এছাড়া ফর্টিফাইড বিস্কুটের পরিবর্তে ফল, দুধ, রুটি, ডিমসহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার পরিবেশন করা হবে।
মোমেন বলেন, ফিডিং কর্মসূচির কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝরে পড়ার হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভর্তির হার ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া সোমবার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্কুল মিলস কোয়ালিশনের ৮৫তম সদস্য হয়েছে।
এ সময় ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ডব্লিউএফপিএ'র কান্ট্রি ডিটেক্টরের সাক্ষাৎ
৬৩৫ দিন আগে
ডব্লিউএফপি’র সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়তে পারে অপরাধ, উগ্রপন্থা: এআরএসপিএইচ
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল ঘাটতির কারণে তার সাধারণ খাদ্য সহায়তা ভাউচারের মূল্য প্রতিমাসে ১২ থেকে কমিয়ে ১০ মার্কিন ডলার করার সাম্প্রতিক ঘোষণার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ভিত্তিক আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস(এআরএসপিএইচ)।
তারা বলেছে, ‘শিবিরে বসবাসকারী শরণার্থী হিসাবে, আমরা প্রথম থেকে জানি যে প্রতি মাসে ১২ মার্কিন ডলারেও বেঁচে থাকা কতটা কঠিন, এবং এই হ্রাস আমাদের সম্প্রদায়ের ওপর ইতোমধ্যেই ভয়াবহ পরিস্থিতির বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে পারে।
বুধবার এআরএসপিএইচ-এর ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুর রহিমের সই করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, আমরা কীভাবে প্রতি মাসে ১০ ডলারে বেঁচে থাকব তা বোঝা কঠিন, যখন প্রতি মাসে ১২ ডলার দিয়েও মানুষ চাহিদা পূরণে লড়াই করছে।
খাদ্য সহায়তা হ্রাসের ফলে চাঁদাবাজি, পতিতাবৃত্তি, মানব পাচার, মাদক পাচার এবং মৌলবাদীকরণসহ অনেকগুলো নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে ‘আমাদের জনগণের হতাশা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে এই কার্যকলাপগুলো আমাদের সম্প্রদায়ের সবচেয়ে দুর্বল সদস্যদেরকে বড় ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।’
আরও পড়ুন: দূতরা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা দেখে অভিভূত: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
দলটি রেশনের পরিমাণ না কাটা নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘এটা অগ্রহণযোগ্য যে আমরা, উদ্বাস্তু হিসাবে, অর্থায়নের ঘাটতির বোঝা বহন করতে বাধ্য হচ্ছি যা আমাদের তৈরি নয়। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে সহায়তা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে।’
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তারা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার কাছে ঘাটতি পূরণের জন্য তহবিলের বিকল্প উৎস খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে যে ‘রোহিঙ্গা সংকটে তাদের অবদান বাড়াতে আমরা দাতা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই। আমাদের জীবন এটির ওপর নির্ভর করে এবং আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের দুর্দশা থেকে চোখ না ফেরানোর জন্য অনুরোধ করছি।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে সহায়তা করুন: জাতিসংঘের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
৭৮৭ দিন আগে
যুদ্ধ, জলবায়ু বিপর্যয় বহুমুখী খাদ্য সংকট সৃষ্টি করছে: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের দুটি খাদ্য সংস্থা সোমবার কঠোর সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, জলবায়ুগত কারণে বিশ্বে খাদ্য সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাবের কারণে তা আরও খারাপ হয়েছে যা জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
রোম-ভিত্তিক দুটি খাদ্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) একটি প্রতিবেদনে এ মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে।
ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেন, দরিদ্রদের ক্ষতি করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট লক্ষাধিক পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আরও পড়ুন: বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণে মাইলফলক
তিনি বলেন,পরিস্থিতি এখন ২০১১ সালের আরব বসন্ত এবং ২০০৭-০৮ সালের খাদ্য মূল্যের সংকটের তুলনায় অনেক খারাপ। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া,পাকিস্তান, পেরু এবং শ্রীলঙ্কায় খাদ্য সংকট রয়েছে।
প্রতিবেদনে আগামী কয়েক মাসে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করে জরুরি মানবিক পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির দাম ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংস্থাগুলোর যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জলবায়ুগত কারণে সৃষ্ট খরা বা বন্যার কারণে খাদ্য উৎপাদন হ্রাসের পরিস্থিতির মতো অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী মূল্য দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৫৩ কোটি ৫৯ লাখ ছাড়িয়েছে
প্রতিবেদনে ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন,আফগানিস্তান এবং সোমালিয়া এ ছয়টি দেশকে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির হট স্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ওই দেশগুলোতে প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার মানুষ অনাহার ও মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে কঙ্গো, হাইতি, সাহেল অঞ্চল, সুদান এবং সিরিয়া খুব খারাপ অবস্থানে আছে। এছাড়া কেনিয়াও সেই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে।
হট স্পট দেশের তালিকায় আরও রয়েছে শ্রীলঙ্কা, বেনিন, কেপ ভার্দে, গিনি, ইউক্রেন এবং জিম্বাবুয়ে।
১০৪৮ দিন আগে
ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি বাংলাদেশ
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী বোর্ডে ২০২২ সালের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী বোর্ডে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সর্বসম্মতিক্রমে প্রথম নিয়মিত অধিবেশনে ২০২২ সালের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।
ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং রোমস্থ এফএও, ইফাদ ও ডব্লিউএফপিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান সভাপতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ২ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ত্যাগ করেছেন: জাতিসংঘ
প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশ এখন থেকে নির্বাহী বোর্ডে নেতৃত্বের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং বিদ্যমান কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ করে সংঘাত-পীড়িত দেশগুলোতে ডব্লিউএফপির সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবে।
রাষ্ট্রদূত আহসান তার সূচনা বক্তব্যে বিশ্বের বিপুল সংখ্যক নাজুক জনগোষ্ঠীকে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডব্লিউএফপি’র ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদানে বোর্ড সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রগুলোর এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: দেড় লাখ ইউক্রেনীয় প্রতিবেশি দেশে আশ্রয় নিয়েছে: জাতিসংঘ
১১৪৬ দিন আগে
করোনা মোকাবিলায় বৈশ্বিক সংহতির আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি বৈশ্বিক সংহতি ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে এবং এটিকে মৌলিক পরিবর্তনের সুযোগে পরিণত করতে হবে।
১৫৯০ দিন আগে
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘ফুড কর্নার’ ফের খুলেছে ডব্লিউএফপি
কোভিড-১৯ প্রার্দুভাবের কারণে গত কয়েক মাসের বন্ধ থাকার পরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা ‘ফুড কর্নার’ ফের চালু করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
১৬৩৪ দিন আগে
ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দাতাদের আরও সহায়তা চান ডব্লিউএফপি প্রধান
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের আগেই জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান ডেভিড বিসলি বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করেছিলেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ২০২০ সালে বিশ্ব সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।
১৬৫৩ দিন আগে