তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীতে সব জেলাকেই স্থায়ী বাঁধ প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসব। ইতোমধ্যে নেয়া সব নতুন প্রকল্পই স্থায়ী বাঁধের আদলে ডিজাইন করা। মানবতার সেবায় আমরা সবাই কর্মীর মতই কাজ করে যাব।’
বুধবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুম প্ল্যাটফর্মে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ এবং বন্যা মোকাবিলায় করণীয় সংক্রান্ত এক জরুরি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে দেশের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের সব প্রকৌশলীকে মানুষের পাশে থেকে কাজ করার নির্দেশনা দেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
তিনি বলেন, ‘প্রধান প্রকৌশলী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী পর্যন্ত সবাইকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ সব জায়গায় কর্মকর্তাদের উপস্থিতি, নজরদারি এবং জিও ব্যাগ নিয়ে প্রস্তুতি নিশ্চিত করবেন। বাঁধ যাতে না ভাঙে সে দিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখতে হবে। অবশ্যই স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক খবর রাখতে হবে।’
এ সময় দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা জানিয়ে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী শামীম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন শক্তিশালী। মাঠ পর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’
কর্মকর্তাদের সুরক্ষার বিষয়ে সতর্ক করে উপমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিজেকে সুরক্ষিত রেখে কাজ করবেন এবং কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে মন্ত্রণালয়কে জানাবেন। বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে না, বরং আগেই আমাদের সব প্রস্তুতি রাখতে হবে। আসন্ন ঈদের ছুটিতেও আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে থাকবেন।’
সভায় অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মাহমুদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) রোকনুদ্দৌলা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক হাবীবুর রহমান, সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর (আইডব্লিউএফএম) সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর (ডব্লিউআরই) ড. মো. মোস্তফা আলী এবং জেলা পর্যায়ের প্রকৌশলীসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের আবহাওয়া পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা জানান, সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলেও তা ১৯৮৮ সালের মতো হবে না। বন্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে তাই সব প্রস্তুতি রাখা সমীচীন হবে।
প্রফেসর সাইফুল ইসলাম ও প্রফেসর মো. মোস্তফা বাঁধ মেরামতের চেয়ে কেন বাঁধ ভাঙে তা পর্যালোচনার জন্য বলেন এবং আবহাওয়া পূর্বাভাসকে আরও শক্তিশালী ও সুদূরপ্রসারী করার পরামর্শ দেন।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আজকে সকাল পর্যন্ত বিপদ সীমার ওপরে নদীর সংখ্যা ১৬। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে যমুনা এবং বুধবারের মধ্যে পদ্মার পানি সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে তা অব্যাহতভাবে হ্রাস পেতে থাকবে।’