ঢাকার সঙ্গে বিদ্যমান অংশীদারত্ব পর্যালোচনা, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বিনিয়োগ সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (ইআইবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইক মিলার সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সোমবার ইউএনবিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকসহ সূচিতে বেশ কয়েকটি বৈঠক রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ২৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিলো ইআইবি
ঢাকায় অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ ও রেলওয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইআইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এছাড়া তিনি কেএফডব্লিউ, এএফডি, এডিবি, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, আইএফসি ও জাইকা প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রাতঃরাশ বৈঠক এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (ইউরোচ্যাম) সঙ্গে নৈশভোজে বৈঠক করবেন।
সফর শেষ করা আগে বৃহস্পতিবার তিনি গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার পরিদর্শন করবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ সদস্য রাষ্ট্রের মালিকানাধীন ইআইবি বিশ্বের বৃহত্তম বহুপক্ষীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগ ব্যাংক হিসেবে কাজ করে থাকে।
বৈদেশিক নীতিগত অগ্রাধিকার, গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল, ইইউ মাল্টিঅ্যানুয়াল ফাইন্যান্সিয়াল ফ্রেমওয়ার্ক (এমএফএফ) এবং দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশিয়ায় অর্থায়ন কার্যক্রম তত্ত্বাবধায়ন করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট বিয়ার।
জলবায়ু কর্মকাণ্ড ইআইবি কার্যক্রমের একটি বড় অংশ হলেও এটি পরিবেশ, উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং দক্ষতা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসা (এসএমই), অবকাঠামো ও সংহতির ওপরও মনোনিবেশ করে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের রূপান্তরে সহযোগিতার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ইইউ সহযোগিতা: ঢাকায় আসছেন ইআইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট
গত মাসে ঢাকা ও নয়া দিল্লিতে অবস্থিত ইউরোপীয় দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের জ্বালানি খাতের রূপান্তরে সহায়তা দিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও কথা বলেছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিবেশ অবশ্যই আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
বাংলাদেশ পরিবেশ বিপর্যয়ের শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি ক্ষেত্রে আমি খুবই আগ্রহী, তা হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি।’
ইআইবি ইকুইটি ও ঋণ প্রদানকারী কোম্পানি এবং প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে অর্থায়ন ও বিনিয়োগ করে থাকে যা ঋণ, ইকুইটি ও গ্যারান্টির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিগত লক্ষ্য অর্জন করে।
১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইআইবি ইউরোপ ও বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রকল্পে এক ট্রিলিয়ন ইউরোর বেশি বিনিয়োগ করেছে।