জেনেভা থেকে পাঠানো একটি যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শুধুমাত্র ২২ আগস্ট বাংলাদেশি যুবক নিহতের বিচারকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়াই নয় সেই সাথে সাময়িক ন্যায়বিচারকে বৈধতা প্রমাণ করার জন্য কেবল এই ব্যবস্থা করা হয়নি তা নিশ্চিত করাও আয়োজক সম্প্রদায়ের জন্য জরুরি।’
উদ্বেগ প্রকাশ করা জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা হলেন- ক্লেমেন্ট নায়ালেতসোসি ভোল, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংঘের অধিকার সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদক; মিশেল ফোর্স্ট, মানবাধিকার রক্ষাকারীদের পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করা বিশেষ প্রতিবেদক; ফিলিপ গঞ্জালেজ মোড়ালেস, অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক; অ্যাগনেস ক্যালামার্ড, বিচার বহির্ভূত, সংক্ষিপ্ত বা নির্বিচার মৃত্যুদণ্ড বিষয় নিয়ে কাজ করা বিশেষ প্রতিবেদক; ফার্নান্দ ডি ভারেনেস, সংখ্যালঘু ইস্যুতে কাজ করা বিশেষ প্রতিবেদক; ডেভিড কায়ে, স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার প্রচার ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বিশেষ প্রতিবেদক।
তারা বলেছেন, ‘ব্যর্থ শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা’ও গত ২২ আগস্ট এক বাংলাদেশি যুবকের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর স্থানীয় এবং শরণার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এক রোহিঙ্গাকে হত্যাসহ আরও চার রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে।
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা গত মাসে রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশের পর শরণার্থী শিবিরগুলোতে সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় ‘গুরুতর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন।
মিয়ানমার থেকে বিতারণের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে তথাকথিত ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রায় দুই লাখ শরণার্থী কক্সবাজারে জড়ো হয়েছিল। সমাবেশ থেকে তারা মিয়ানমারে ফেরার আগে সে দেশের নাগরিকত্ব ও আরও কিছু বিষয়ের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
কক্সবাজারে ২৫ আগস্ট বিক্ষোভের পর থেকে, বেশ কয়েকটি প্রতিবাদী সংগঠককে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং ভয় দেখানো হয়েছে, বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা। শরণার্থী শিবিরগুলোতে এখন কঠোরভাবে সান্ধ্য আইন জারি রয়েছে এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এরই মধ্যে সমাবেশ আয়োজনে সহায়তা করা এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে না ফেরার ব্যাপারে প্ররোচিত করার অভিযোগে বেশ কয়েকটি এনজিও’র কার্যক্রম নিষিদ্ধ বা বাতিল করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠনের অধিকারের ওপর এমন আকস্মিক নিষেধাজ্ঞা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করেছে। কেবল তাই নয়, এ নিষেধাজ্ঞাগুলো বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু সদস্যদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা আরও বড় রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথকে সহজতর করতে পারে।’