রবিবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন শামীমের আদালতে জামিন শুনানি শেষে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল পর্যন্ত শিপ্রার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে, পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক মেজর সিনহার টিমের অপর সদস্য সাহেদুল ইসলাম সিফাতের জামিন এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের আবেদন করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক (টেকনাফ -৩) তামান্না ফারাহ শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য্য রাখেন।
শিপ্রার জামিন ও আইনি সহায়তা দিতে পাশে দাঁড়িয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
সংগঠনটির আইনজীবী অরুপ বড়ুয়া তপু জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শিপ্রা দেবনাথের জামিনের জন্য আবেদন করেছিলাম। বিজ্ঞ আদালত পুলিশ রিপোর্ট দেয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
আসকের এ আইনজীবী আরও বলেন, ‘আমরা মনে করছি এটি একটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। তাই আমরা আইনি সহায়তা দিতে শিপ্রা দেবনাথের পাশে দাঁড়িয়েছি।’
গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আসার পথে শামলাপুর চেকপোস্টে তল্লাশির নামে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে সিনহা হিমছড়ির যে হোটেলটিতে অবস্থান করেন সেই নীলিমা রিসোর্টে হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসএম আতিক উল্লাহর নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশ।
সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শিপ্রা দেবনাথকে আটক করে তার বিরুদ্ধে মাদকের মামলা দিয়ে আলালতে পাঠানো হয়। এ মামলার বাদী হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম।
পুলিশের দাবি, অভিযানে রিসোর্টটির কক্ষ থেকে পাঁচটি বিদেশি মদের বোতল, এক লিটার বাংলা মদ ও এক পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) তদন্তের দায়িত্ব দেন।
গত ৬ আগস্ট এ মামলায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. লিয়াকত আলীসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার শুনানিতে র্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালতের বিচারক ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি চারজনকে কারাফটকে দুদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।