বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ সুলতানা কামাল সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। বিস্তারিত জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গত ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের পর র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
মামলায় আদালত কর্তৃক নিযুক্ত তদন্ত সংস্থা না হওয়া সত্ত্বেও র্যাব শুরু থেকেই এই মামলায় আগ্রহ দেখিয়ে কখনও তাদের 'ছায়া তদন্ত' বন্ধ করেনি। এই প্রক্রিয়ায় ঘটনার পট বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: এটা হতাশাজনক, এক মাসেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই: ফারদিনের বাবা
র্যাবের সর্বশেষ বিবরণ অনুযায়ী, শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফারদিন তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে নামিয়ে দেন। ওই দিনই ফারদিনের সঙ্গে তার বন্ধু ও পরিবারের শেষ দেখা হয়। বুশরা ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি এখনও কোনো অভিযোগ ছাড়াই জেলে বন্দী এবং রামপুরায় ফারদিনের মৃত্যুর সঙ্গে তার জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এরপর দিবাগত রাত ২টা পর্যন্ত ফারদিন কেরানীগঞ্জের একটি সেতু এবং তারপর যথাক্রমে জনসন রোড, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ীতে যান।
এরপর রাত ২টা ৩৪ মিনিটের দিকে তিনি সুলতানা কামাল সেতুর কাছে যান। র্যাবের মুখপাত্র জানান, বেলা ২টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত তিনি সেতুতে একা ছিলেন।
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর ফারদিনের লাশ সিদ্ধিরগঞ্জে একটি কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
র্যাবের এই পরিচালক জানান, সুলতানা কামাল সেতু থেকে ফারদিন ঝাঁপ দেন। তার অবস্থান যাচাই-বাছাই করেই তারা এগুলো জানতে পারেন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, মৃত্যুর পেছনের কারণ উদঘাটনে তারা গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে এবং আত্মহত্যার আগে তার অবস্থান শনাক্ত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ায় ফারদিনকে হত্যা করা হয়নি: পুলিশ
তিনি বলেন যে তারা বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ ও ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ সব প্রাসঙ্গিক নথি জমা দেন।
নিহতের বাবা গত ৯ নভেম্বর রামপুরা থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এরপরের দিন বুশরাকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
ডিবি প্রধান বলেন, তারা মৃত্যুর আগে ফারদিনের গতিবিধির ফুটেজ যাচাই-বাছাই করেছেন। ফারদিন চনপাড়ায় যাননি।
ময়নাতদন্ত করা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ ফরহাদ জানান, ফারদিনের মাথায় ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওই দিনই ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় ছেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করেন এবং পরে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: বুয়েটের ফারদিন হত্যার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী