এর মধ্যে শনিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি- ৮০৪ ও এসভি-৮০২ বিমানযোগে দেশে ফেরত আসেন ১০৬ জন। রবিবার ফেরেন আরও ৭০ জন। এ নিয়ে গত চার দিনে ফিরলেন মোট ৩১৭ জন। এছাড়া রবিবার রাতে আরও শতাধিক বাংলাদেশির দেশে ফেরত আসার কথা রয়েছে।
ফেরত আসাদের মাঝে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার, পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়ে নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিনা আক্তার ও শামিমা বেগম। তারা প্রথমে নিয়োগকর্তার বাড়ি থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সেইফ হোমে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার ও খাদিজা, সিরাজগঞ্জের রাশেদাসহ দেশে ফিরেছেন ১৫ জন নারী।
সৌদি আরবে পুরুষ কর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। শনিবার ফেরা শহিদ মিয়া (৪০) জানান, আড়াই বছর আগে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে টাইলস ফিটিংয়ের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কর্মস্থল থেকে ফেরার সময় পথ থেকে ধরে নিয়ে কাজের পোশাকেই তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
চার মাস আগে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হানিফ গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। পরে পাসপোর্টে তিন মাসের এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হলে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে তাকে আটক করে পুলিশ। প্রতিষ্ঠানের মালিক দায়িত্ব না নেয়ায় দেশে ফেরত পাঠানো হয় হানিফকেও। একইসাথে ফিরেছেন টাঙ্গাইলের হামিদুল্লাহ, কুমিল্লার তোফাজ্জল সিলেটের শুভ দেবনাথসহ অনেকে।
দেশে ফেরা অনেক কর্মীরা অভিযোগ করেন, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করা হলেও তারা আকামা করে দেননি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিলের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা কর্মীর দায় দায়িত্ব না নিয়ে ভিসা বাতিলের কথা বলে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলছে প্রশাসনকে।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ২৪ হাজার ২৮১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর নতুন বছরের শুরুর চার দিনে ফিরলেন ৩১৭ জন। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা ফিরছেন তাদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত।
আর কাউকে যেন শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি সরকারের নেয়া সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে নারীদের ওপর অন্তত নির্যাতনটা কমে আসবে।’