দূতাবাসে তার বিদায় উপলক্ষে সোমবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সৌদি আরবে পাঁচ বছর পাঁচ মাস দায়িত্ব পালন শেষে আগামী মাসে দেশে ফিরবেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত জানান, প্রবাসীদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সৌদি আরবের বড় শহরগুলোতে প্রবাসী সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশটির দাম্মাম, রিয়াদ, জেদ্দা, মদিনাসহ অন্যান্য শহরে প্রবাসী সেবাকেন্দ্রগুলোতে রাত-দিন প্রবাসীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। ফলে দূরদূরান্ত থেকে প্রবাসীদের আর দূতাবাসে বা কনস্যুলেটে আসার প্রয়োজন হচ্ছে না। এতে তাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।
দূতাবাসের সবাইকে ভালো আচরণ করার এবং সহজে ও দ্রুত প্রবাসীদের সব সেবা প্রদানের নির্দেশ দেন তিনি।
বিগত পাঁচ বছরে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, দুদেশের সম্পর্ক বেগবান হয়েছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশের বিপুল শ্রম বাজারের পাশাপাশি বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সাথে রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্কও জোরদার হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ২০১৮ সালে সৌদি আরবের ডিপ্লোম্যাটিক কোয়ার্টারে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভবন তৈরির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের জন্য জমি কেনা হয়েছে। রিয়াদে রাষ্ট্রদূতের বাসভবন তৈরির কাজ অচিরেই শুরু করা হবে।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশি হাজিদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য হাজিদের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এছাড়া প্রবাসীদের বীমা সুবিধা প্রদানের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
গোলাম মসীহ বলেন, করোনা মহামারির সময়ে প্রায় ৪০ হাজার প্রবাসীর কাছে সরকারের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। প্রবাসীদের জন্য ডক্টরস পুল গঠন করে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। আটকে পড়া প্রবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইট চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান আনিসুল হক রাষ্ট্রদূতের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান শেষে দেশের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয় এবং বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।