রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরবের অনেক নামকরা কোম্পানি: রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি এবং সৌদি আরব বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
সৌদি আরবের ৯৩তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘অনেক বিখ্যাত সৌদি কোম্পানি ও বিনিয়োগকারী বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী শান্তির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহারের আহ্বান রাষ্ট্রদূত মুহিতের
২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সৌদি দূতাবাস দিবসটি পালন করবে। তবে সৌদি আরবের জাতীয় দিবস পালিত হয় ২৩ সেপ্টেম্বর।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষার জন্য বাড়ি, স্কুল, মসজিদ, এতিমখানা ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি হাসপাতাল, সেতু এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মতো বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফর এবং সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সৌদি মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের পর সৌদি-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার হয়।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের সম্পর্ক গভীর ও অসামান্য।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে দুঃসময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তা করে থাকে সৌদি আরব। বাংলাদেশ ইসলাম ও সৌদি আরবকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসে, যা সৌদি আরবকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।’
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বিশ্বের বৃহত্তম শ্রমবাজার হিসেবে স্বীকৃত সৌদি আরবে লাখ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘এই দেশের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সৌদি আরব একটি দুর্দান্ত অবদান রেখেছে, কারণ অভিবাসী শ্রমিকরা ক্রমাগত তাদের প্রিয় পরিবারের সদস্যদের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ যখনই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সৌদি আরব সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এবং বাংলাদেশকে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করতে পারে ঢাকা-ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: কূটনীতিকদের সঙ্গে রাখাইন সফরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
আমদানি করা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির উপর নির্ভরতা কমাতে হবে বাংলাদেশের: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, বাংলাদেশকে রিকন্ডিশন্ড সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ি আমদানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে আরও মনোযোগ দিতে হবে, যা দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানা পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত আমদানি করা সেকেন্ড-হ্যান্ড গাড়ির উপর নির্ভরতা কমানো। দেশীয়ভাবে তৈরি গাড়ি পরিবেশের জন্যও ভালো হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশ ইতোমধ্যে পুরোনো গাড়ি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাংলাদেশও একই ধরনের নীতি গ্রহণ করতে পারে।
ফেয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব, ফেয়ার টেকনোলজি লিমিটেডের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুতাসিম দাইয়ান, ডেইলি সান সম্পাদক ও ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিকাব) সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস এবং ডিকাব সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েসসহ আরও অনেকে এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্ল্যান্ট পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যদি উৎপাদনের ক্ষেত্র প্রসারিত করে, তাহলে দেশে মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
তিনি দেশে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য উন্নত কর ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনিয়োগ পরিবেশের আরও উন্নতির ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ কীভাবে উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তার একটি অনন্য উদাহরণ এই গাড়ি উৎপাদন কারখানা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে সামনের দীর্ঘ যাত্রায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের একসঙ্গে অনেক কাজ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহবুব বলেন, তাদের তরুণ মেধাবীদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে এবং দেশে আরও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতির সঙ্গে মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
তিনি সরকারের কাছ থেকে যে সহায়তা পাচ্ছেন তা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা টাকা চাই না, সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চাই।’
মাহবুব বলেন, তারা পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টিসহ বাংলাদেশে উৎপাদিত হুন্দাই গাড়ির জন্য সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারা দেশে আমাদের পরিষেবা কেন্দ্রগুলো সম্প্রসারিত করছি।’
এই বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানার উদ্বোধনের কথা স্মরণ করে ডিকাব প্রেসিডেন্ট লোটাস বলেন, কারখানার উদ্বোধন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রূপকল্প ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে একটি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ।
বর্তমানে প্ল্যান্টে বেশ কয়েকটি মডেল তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো হলো- ক্রেটা: ১৪৯৭সিসি ৫ সিটার ও ক্রেটা গ্র্যান্ড: ১৪৯৩সিসি, ৭ সিটার।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্ল্যান্টের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি বছর সাত হাজার।
তারা বলেছে, যদিও কোম্পানিটির ৩৫০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। বর্তমানে দেশীয় বাজারের দিকে মনোনিবেশ করছে। তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে তৈরি গাড়ি রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। শোরুমের সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করা হবে এবং বর্তমান শোরুমের সংখ্যা ছয়টি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু ব্যবহারের হুমকি কিমের
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করছে, তারা কখনোই রাখাইন যায়নি: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন করার জন্য যৌথ বৈশ্বিক প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করে আসছেন, তারা কখনোই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যায়নি।
তিনি বলেন, ‘এটি বেশ অদ্ভুত। বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য জীবনযাপনের জন্য কক্সবাজারের পরিস্থিতি উপযুক্ত কি না তারা এ প্রশ্নের উত্তর দেননি। এ বিষয়ে তাদের নিজেদেরই নিজেদের প্রশ্ন করা দরকার।’
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।
রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে এসেছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এর ষষ্ঠ বার্ষিকী ছিল।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে জর্জরিত করছে। বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ এসব বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়ে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কক্সবাজার ক্যাম্পে হত্যা, বন্দুকযুদ্ধ, অপহরণ, মাদক ও মানব পাচার চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বহিরাগত সহায়তাও কমছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য খাদ্য রেশন প্রতি মাসে ১২ থেকে কমিয়ে ৮ মার্কিন ডলার করা হয়েছে, যা টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়।’
চীনের রাষ্ট্রদূত জোর দিয়ে বলেছেন, সব পক্ষই ক্রমবর্ধমানভাবে উপলব্ধি করেছে যে প্রত্যাবাসনই একমাত্র উপায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বারবার প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তার দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘যদিও রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিষয়, তবে উভয় দেশের অভিন্ন প্রতিবেশী এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীন দুই পক্ষকে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে মতবিরোধ নিষ্পত্তি করার বিষয়ে মত পোষণ করে। যাতে করে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায়।’
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকারমূলক ঋণ, জিডিআই ও সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন তহবিলের উপযুক্ত ব্যবহার করবে বাংলাদেশ: প্রত্যাশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে চীন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তিন ধাপের প্রস্তাব পেশ করেছে। এগুলো হলো-সহিংসতা বন্ধ করা, প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে চীন তার সামর্থ্যের মধ্যে অনেক রকম সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন সুবিধার শর্ত উন্নীত করতে সাহায্য করেছি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনার ব্যবস্থা করেছি এবং দুই পক্ষকে উৎসাহিত ও সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত: সুইস রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে।
এসময় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
রবিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো সিগফ্রিড রেঙ্গলির সঙ্গে বৈঠকে মোমেন এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় রেঙ্গলিকে অভিনন্দন জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন সুইজারল্যান্ডকে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং বাংলাদেশকে ‘প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডে’ রূপান্তরের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা স্মরণ করেন।
অন্যান্য অনেক প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগের আয় বেশি বলে উল্লেখ করে মোমেন বাংলাদেশে আরও সুইস বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং কৃষি-খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে মার্কিন সরকার পদত্যাগ করবে কি না সফররত কংগ্রেসম্যানদের মোমেনের প্রশ্ন
বাংলাদেশকে ‘সুযোগ ও প্রাণবন্ত অর্থনীতির দেশ’ উল্লেখ করে তিনি দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিতে ব্যবসায়িক প্রতিনিধি বিনিময়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
সুইস রাষ্ট্রদূত ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুইজারল্যান্ড সফরের কথা স্মরণ করেন।
গত বছর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে আরও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং বাংলাদেশে সুইস বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ এবং বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে সুইস রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনে তার সরকারের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তার জন্য সুইস সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে আরও সুইস সহায়তার প্রত্যাশা করেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সফরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য ওআইসি-ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদির উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ
সৌদি আরবে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের দ্রুত দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যূলার বিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে সুযোগ দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন সৌদিস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
তিনি বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে এ অনুরোধ জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, যেসব বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পলায়নের মামলা (হুরুব) রয়েছে। এ ছাড়া যাদের আকামা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগ কর্মহীন বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন যা বিদেশে তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে। এসব অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রদূত সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে কারারুদ্ধ রয়েছে।
যেহেতু তারা তাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য, তাই কারারুদ্ধ এসব অভিবাসীর পরিবারগুলো বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে। যারা গুরুতর অপরাধের জন্য বন্দি নন এসব বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদি রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, উদার ও শ্রমবান্ধব শ্রমিক নীতি হওয়ার পর বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এজন্য আমরা সৌদি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার প্রবণতা রয়েছে। বর্তমানে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি।
এ সময় অভিবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যা প্রতি বছরের মতো এ বছর আয়োজিত যৌথ কমিশন সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকেই স্বাগত জানাবে। তাই বাংলাদেশে আমাদের শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।
সৌদি উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফ বাংলাদেশি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রমী ও তারা সৌদি অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন ও তা আশু সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে জানান।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসে কালচারাল অ্যাটাচে নিয়োগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
যাতে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের কাগজপত্র দ্রুত সত্যায়িত করে সৌদি আরবে আসতে পারে।
এছাড়া দক্ষ ও প্রফেশনাল অভিবাসী যারা সৌদি আরবে আসতে ইচ্ছুক তাদের সনদ দ্রুততার সঙ্গে সত্যায়িত করার জন্য সৌদি দূতাবাসে একজন কালচারাল অ্যাটাচে নিয়োগের অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে সৌদি আরবে ২৮ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং যুবরাজ প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে ১১৭ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
সৌদি আরবে ফার্নিচার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৯ বাংলাদেশি নিহত
আ.লীগের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার পর দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এ বৈঠকে বসেন তিনি।
পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এছাড়াও দলটির নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ কর্নেল ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পৌঁছান ১১টা ১০ মিনিটের দিকে। এ ছাড়াও তার সঙ্গে আছেন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নামে টুইটার অ্যাকাউন্ট 'ভুয়া': মার্কিন দূতাবাস
বিদায়ী ও নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের জন্য নৈশভোজের আয়োজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
ঢাকায় অবস্থানরত নবনিযুক্ত ও বিদায়ী কূটনীতিকদের সম্মানে রবিবার (৩০ জুলাই) নৈশভোজের আয়োজন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কূটনীতিক ইউএনবিকে বলেন, ‘বিদায়ী ও নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের বিদায় ও স্বাগত জানানোর জন্য এটি আয়োজন করা হয়েছিল।’
তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আলোচনা হয়েছে কি-না তা জানা যায়নি।
এদিকে রবিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান জেরার্ড ভ্যান লিউয়েন বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন।
ডাচ-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষয়ীয় সম্পর্ককে মজবুত বলে স্বীকৃতি দিয়ে এটিকে আরও বাড়ানোর জন্য তার অবদানের জন্য পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, আইটি ও আইটিইএস, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব ও বিনিয়োগ উভয় অর্থনীতির জন্য উপকারী হবে।
আরও পড়ুন: হাফেজ আবু তালহার সাফল্য বাংলাদেশের জন্য গৌরবের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্র সচিব সার্কুলার অর্থনীতি, আধুনিক টেকসই কৃষি, সবুজ শক্তি এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ডেল্টা পরিকল্পনায় ডাচ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং এই খাতে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ডাচদের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য ডাচ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
এছাড়াও তিনি বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নেদারল্যান্ডসের আরও সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত লিউয়েন বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক সহায়তা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি উভয় দেশের সমৃদ্ধির জন্য আরও জ্ঞান-থেকে-জ্ঞান (কেটুকে) এবং ব্যবসা-থেকে-ব্যবসায় (বিটুবি) সংযোগের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং স্টার্ট-আপ, দক্ষতা উন্নয়ন ও উন্নয়নের জন্য ডাচ সরকারের প্রতিষ্ঠিত 'অরেঞ্জ কর্নারস' তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান এবং সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান আশা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বৈঠক শেষে বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন এবং স্মারক হিসেবে একটি উপহার তুলে দেন।
আরও পড়ুন: দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শেষ মুহূর্তের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা সারাদিনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রতিফলিত করেনা: শাহরিয়ার
সম্প্রতি ‘কূটনৈতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে’ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করায় ‘অকূটনৈতিক আচরণের’ জন্য ঢাকায় ১৩ রাষ্ট্রদূতের কাছে হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে বুধবার (২৬ জুলাই) বিকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জনাব আশরাফুল আলমকে কেন্দ্র করে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে ঢাকাস্থ যেসকল দূতাবাস গণমাধ্যমে একটি যৌথবিবৃতি দিয়েছিলেন, আজ দুপুরে সেসব রাষ্ট্রদূতকে আমরা ডেকেছিলাম। তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণে আমরা আমাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। ওনাদের যৌথ বিবৃতিটি ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে যথাসময়ের অনেক আগেই তড়িঘড়ি করে অপরিণতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি আমাদের আজকের আলোচনার পর তারা সেটি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করবেন এবং ভবিষ্যতে এমন অকূটনৈতিক আচরণ থেকে বিরত থাকবেন। ঘটনা সম্পর্কে জানার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচন কমিশন এবং সরকার ত্বরিত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।’
তিনি বলেন, এসময় কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশনের কথা মনে করিয়ে গঠনমূলক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
শাহরিয়ার আলম বলেন, কূটনীতিকদের সতর্ক করা হয়েছে যে সরকারকে পাশ কাটিয়ে ‘বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা বর্জিত আচরণ’ কেবলই পারস্পরিক আস্থার সংকট তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির এক দফা দাবি সংবিধানের পরিপন্থী: শাহরিয়ার আলম
তিনি বলেন, কিছু মৌলিক ত্রুটি ছিল যা বাংলাদেশ নির্দেশ করেছে এবং এ ধরনের পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানিয়েছে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে একজন প্রার্থী লাঞ্ছিত হওয়ার পর সম্প্রতি যৌথ বিবৃতি জারি করা ১৩টি বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারদের তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে হিরো আলম নামে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলার পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বিদেশি মিশনগুলো বলেছে, ‘আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই।’
ঢাকার কূটনৈতিক মিশনগুলো বলেছে, ‘আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেরই নিশ্চিত করা উচিত যে তা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।’
যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের দূতাবাস/হাইকমিশন স্বাক্ষর করেছেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা কূটনীতিকদের জানিয়ে দিয়েছেন যে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে সারাদিনের শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, অন্য প্রার্থীরা কোনো সহিংসতা বা অন্য কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেননি।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি কেন্দ্রের শেষ মুহূর্তের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাটিকে গুটি কয়েক কূটনীতিক যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা কখনোই সারাদিনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রতিফলিত করেনা। দ্রুত একটি প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তারা তাদের মূল্যায়নটির বস্তুনিষ্ঠতার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেন নি।’
আরও পড়ুন: পশ্চিমাদের অবশ্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হওয়া পাক গণহত্যার কথা স্বীকার করতে হবে: শাহরিয়ার
ঘটনাটি জানাজানি হলে নির্বাচন কমিশন ও সরকার তাৎক্ষণিক ও আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘১৯শে জুলাই তারিখে কূটনীতিকবৃন্দের বিবৃতি দেওয়ার অনেক আগেই কিন্তু দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও এই কূটনীতিকরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, যা অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয়।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, যে দ্রুততা ও গুরুত্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ঘটনাটির সমালোচনা তারা করেছেন, সেই গুরুত্ব ও দ্রুততার সঙ্গে কিন্তু তারা সরকারের গৃহীত তাৎক্ষণিক ও ত্বরিত আইনানুগ ব্যবস্থাকে তারা মূল্যায়ন করেননি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাই যৌথ বিবৃতিটির বস্তুনিষ্ঠতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবনার অবকাশ থেকেই যায়।’
আরও পড়ুন: বিদেশি মিশনের সঙ্গে নথি শেয়ারের কারণ জানালেন শাহরিয়ার আলম
বিদেশে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার বন্ধে কাজ করুন: দেশের রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের কাজ করতে বলেছেন। যাতে মিথ্যার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভ্রান্ত না হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলতে চাই আপনাদের উচিত আমাদের দূতদের প্রচারণা সম্পর্কে অবহিত করা। তাহলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে না। বিশেষ করে আমাদের আন্তর্জাতিক সংস্থাগুরোতে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।’
ইতালির রাজধানী রোমে তার বাসভবনে ইউরোপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
ইউরোপীয় দেশগুলোতে অবস্থানরত ১৫ জন বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
তিনি বলেন, কিছু লোক দেশে অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে যারা কখনোই দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে, যারা অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দোষী সাব্যস্ত বা অপরাধী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিদেশে অবস্থান করে ক্রমাগত দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। ‘সবাইকে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছে, তাই তারা দেশের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। “তাদের কত আছে! তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’
বিদেশিরা প্রায়ই ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় তা নিয়ে দু-একটি দেশ ব্যস্ত থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া, যারা খুনিদের আশ্রয় দেয় এবং অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের কথা শুনতে হবে।’
আরও পড়ুন: সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা চালু করুন: জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্তদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত, কিন্তু নিহত, আত্মীয়-স্বজন বা যারা দগ্ধ হয়েছেন তাদের কোনো পরোয়া করেন না।
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করেছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে তারা তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলে।’
তিনি বলেন, তারা একদিকে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে কথা বলছেন। বিশ্বব্যাপী দ্বৈতনীতি চালু রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানবাধিকার রক্ষা করে, আর যারা মানবাধিকারের কথা বলে; তারাই মানুষ হত্যা করে।
দেশের নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব খুনি তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করেছে, তারা এখনও সে দেশে পলাতক রয়েছে।
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী এখন রোমে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জাপা চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক রবিবার (২৩ জুলাই) জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এসময় তারা বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন।
যুক্তরাজ্য জানায়, তারা বাংলাদেশে ‘বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনকে উৎসাহিত করে।
আরও পড়ুন: দেশের স্বার্থে আমরা সব ত্যাগ করতে প্রস্তুত: জিএম কাদের
বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জিএম কাদের
বর্তমান পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জিএম কাদের