মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন- কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হিরণ (২৪) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দহরপাড়া গ্রামের মানিক (৩০), তালিতপুর গ্রামের রাশেদ (২৫), রুদ্রপুর গ্রামের সুমন (২০)সুধারামের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের হেদায়েত উল্যা হেদু (৫০), চাটখিল উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নুরনবী (২৭), সোনাইমুড়ি উপজেলার ধন্যপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন ওরফে রুবেল (১৯) ও লক্ষ্মীপুর সদরের শ্রীরামপুর গ্রামের নুর আলম ওরফে নুরু (২২)।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মানিক, রাশেদ, সুমন ও রুবেল পলাতক রয়েছেন।
এদিকে, হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া দুই আসামি হলেন- নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন (২৩) ও একলাশপুর গ্রামের সোহেল। এর মধ্যে সোহেল পলাতক রয়েছেন।
ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি করে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, এস এম শফিকুল ইসলাম কাজল। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সামসুন নাহার লাইজু ও ফারহানা আফরোজ রুনা।
এর আগে, ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর স্মৃতি নাথ সীমাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় নিম্ন আদালত। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
সেই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার ১৫ জন আসামিকে খালাস দেয় আদালত।
লক্ষ্মীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মঞ্জুরুল বাছিদ এ রায় দেন।
রায়ের পরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। সেই আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে হাইকোর্ট আটজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, সীমা (১৩) মা-বাবার সাথে বসুদহিতা গ্রামে দাদার বাড়িতে থাকত। তার দাদার নাম কৃষ্ণ লাল দেবনাথ (৬৫)। ২০১২ সালের ১৮ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৪-১৫ জন মুখোশপরা সশস্ত্র ব্যক্তি সীমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে। এ সময় তারা কুপিয়ে কৃষ্ণ লাল দেবনাথ, তার স্ত্রী গীতা রানী (৬০) ও সীমার চাচি মিনতী বালা দেবীকে (২৭) জখম করে। একপর্যায়ে তারা সীমাকে একটি কক্ষে নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করে। এরপর স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে তারা চলে যায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর বাড়ির লোকজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে সীমা ও আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই সীমা মারা যায়।
এ ঘটনায় পরদিন কৃষ্ণ লাল দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৪-১৫ জনকে আসামি করে ডাকাতি, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন।