দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ৯ মে থেকে আবারও চালু হচ্ছে ফেনীর ছাগলনাইয়া-শ্রীনগর (ভারত) সীমান্ত হাট। বুধবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধায় বাংলাদেশ-ভারতের ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক দাশের নেতৃত্বে ছাগলনাইয়ার নির্বাহী কর্মকর্তা মৌমিতা দাশ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায়সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা এবং ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অসীম সাহার নেতৃত্বে সে দেশের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ফেনীর ছাগলনাইয়ার মধুগ্রাম ও ভারতের শ্রীনগর সীমান্তে ২০১৫ সালে চালু হয়েছিল দেশের এ তৃতীয় সীমান্ত হাট। বাংলাদেশ-ভারতের ২৭ জন করে ৫৪ জন ব্যবসায়ী মালামাল নিয়ে প্রতি মঙ্গলবার দেশীয় পণ্য বিক্রি করবেন।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ৩ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় সীমান্ত হাট। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় দুই দেশের ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ হাটটি ব্যবসার জন্য যেমন চাঙ্গা ছিল, তেমনি পণ্য বেচাকেনার পাশাপাশি দুই বাংলার মিলন মেলা বসতো। হাটকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার দরিদ্র মানুষ গড়ে তুলছিলেন জীবন-জীবিকা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এরইমধ্যে আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে হাটের বিভিন্ন অংশ। তবে পুনরায় হাটটি চালুর খবরে খুশি হাটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
আরও পড়ুন: হিলি সীমান্তে মিষ্টি উপহার দিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
সীমান্তহাট বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, সীমান্ত হাট চালু হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে।
তবে ভারতীয় ক্রেতা প্রবেশে বাঁধা দেওয়া, ভারতে এদেশীয় পণ্য ৩ থেকে ৫ কেজির ওপর নিতে না দেওয়া, ভারতের প্রশাসনের অসহযোগীতা, বাংলাদেশী অসাধু ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে প্রচুর ভারতীয় পণ্য এদেশে প্রবেশ এবং তাদের দ্বারা (অসাধু ব্যবসায়ী) হাটের দেশীয় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তাহীনতা, হাটে বিশৃঙখলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তা সমাধানের জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে বলেছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত, চোরাচালান প্রতিরোধ ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের হয়রানি বন্ধে হাটে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় সভায়।
সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহাজান বলেন, হাটের নির্দ্দিষ্ট পণ্যের বাইরে ভারতীয় সকল প্রসাধনী বিক্রি হয়। তবে বাংলাদেশি বাজারে মাছ, শুটরি, বেকারি ও প্লাস্টিক পণ্য বিক্রি হয়।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক দাশ বলেন, সীমান্ত হাট পূর্বের নীতিমালাতেই পরিচালিত হবে। প্রতি মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত হাট বসবে। হাট বসার আগের দিন ছাগলনাইয়া নির্বাহী কর্মকর্তা ১ হাজার ক্রেতার প্রবেশ টিকেট বিক্রি করা হবে। প্রতি দেশের ২৭ জন করে ৫৪ জন নির্ধারিত বিক্রেতা যার যার দেশের পণ্য বিক্রি করবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বাঘ সংরক্ষণে ভারতের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী
শুধু সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ বন্ধ করলেই মাদক নির্মূল সম্ভব নয়: বিজিবি